নয়াদিল্লি, 10 ফেব্রুয়ারি: লোকসভা নির্বাচনের আগেই বলবৎ করা হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ৷ শনিবার নয়াদিল্লিতে এই কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ 2019 সালের ডিসেম্বরে সংসদে পাশ হয়েছিল এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ৷ তার পর প্রায় চার বছর কেটে গেলেও ওই আইন কার্যকর হয়নি ৷ অনেকের মনে প্রশ্ন ছিল যে কবে এই আইন বলবৎ হবে ? এ দিন ইটি নাউ-গ্লোবাল বিজনেস সামিটে হাজির হয়ে কার্যত সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন অমিত শাহ ৷
অমিত শাহ বলেন, "সিএএ দেশের একটি আইন, এটি অবশ্যই কার্যকর করা হবে ৷ ভোটের আগে এটি কার্যকর করা হবে । সিএএ নির্বাচনের আগে কার্যকর করা হবে এবং এই নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি থাকা উচিত নয় ৷’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, সিএএ ছিল কংগ্রেস সরকারের প্রতিশ্রুতি । দেশভাগের পর অন্য দেশে সংখ্যালঘুদের শরণার্থী হিসেবে স্বাগত জানিয়েছিল কংগ্রেস ৷ তাঁদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল ৷ কিন্তু এখন তারা পিছু হটছে ৷
তিনি আরও দাবি, ‘‘নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য সিএএ আনা হয়েছিল, কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয় । আমাদের দেশে সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে আমাদের মুসলিম সম্প্রদায়কে উস্কে দেওয়া হচ্ছে । সিএএ কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে পারে না ৷ কারণ আইনে কোনও বিধান নেই । সিএএ হল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে নির্যাতিত শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের একটি আইন ।’’
উল্লেখ্য, 2019 সালের ডিসেম্বরে যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হয়, সেই আইন অনুযায়ী ভারতের প্রতিবেশী দেশ - বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুরা যদি 2014 সালের 31 ডিসেম্বরের আগে এসে থাকেন, তাহলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে ৷ কিন্তু সেই সময় দেশে বিক্ষোভ শুরু হয় ওই আইন কার্যকর করা হয়নি ৷ পরে কোভিড অতিমারীর কারণে বারবার পিছিয়ে যায় এই আইন কার্যকরের বিষয়টি ৷ শনিবার অমিত শাহ যা বললেন, তাতে লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই আইন বলবৎ হবে ৷ এখন দেখার এই আইন বলবৎ হওয়ার পর নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয় কি না !
অন্যদিকে ওই অনুষ্ঠানে অমিত শাহ জানিয়েছেন যে এবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিই জিতবে ৷ দেশের মানুষ আবার কংগ্রেসকে বিরোধী আসনে পাঠানোর জন্য মনস্থির করে ফেলেছে ৷ বিজেপি সরকার যেহেতু সংবিধানের 370 ধারার অবলুপ্তি ঘটিয়েছে, তাই মানুষও বিজেপিকে 370 এর বেশি আসনে জেতাবে ৷ এনডিএ 400-র বেশি আসনে জিতবে ৷ একই সঙ্গে তিনি আরএলডি, শিরোমণি আকালি দলের ফের এনডিএ-তে সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন ৷
তিনি রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন ৷ তাঁর প্রশ্ন, কংগ্রেসের জন্যই দেশভাগ হয়েছিল ৷ তাহলে এখন কেন দেশ জোড়ার কথা বলছেন রাহুল গান্ধি ?
আরও পড়ুন:
- সিএএ কার্যকরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি, জানিয়ে দিল অমিত শাহের মন্ত্রক
- 'আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশজুড়ে লাগু হবে সিএএ', দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের
- বিজেপির মুখে সিএএ-র কথা আসলে ভোটের রাজনীতি, দাবি মমতার