কাকদ্বীপ, 6 জুন: ভর দুপুরবেলা রাস্তায় এক গৃহবধূকে ঘিরে রেখেছে জনা কুড়ি ৷ সেই ভিড়ের মধ্যে মহিলাকে প্রচণ্ড মারধরের পর মাথা ন্যাড়া করা হচ্ছে ৷ তারপর তাঁকে বিবস্ত্র করে গোপনাঙ্গে নুন ও লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দিচ্ছে এক মহিলা ৷ সম্মানরক্ষার্থে নির্যাতিতা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি কেউ ৷ গৃহবধূর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে আত্মঘাতী হয় এক যুবক ৷ ছেলের মৃত্যুর জন্য এভাবেই সর্বসমক্ষে মহিলার উপর অত্যাচার চালালো যুবকের পরিবার ৷
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনার হারুউড পয়েন্ট কোস্টাল থানা এলাকায় । এই ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচ মহিলা-সহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালত । যদিও নির্যাতিতার ভাই ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি সাতজনের মধ্যে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷ বাকিরাও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ পুলিশ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না ৷
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, নির্যাতিতা মহিলার সঙ্গে প্রতিবেশী এক যুবকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছিল । সপ্তাহখানেক আগে ওই যুবক আত্মঘাতী হয় । মৃতের পরিবারের অভিযোগ, মহিলার প্ররোচনায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন ওই যুবক । এরপর গত 3 জুন বিকেলে মৃত যুবকের পরিবার চড়াও হয় মহিলার বাড়িতে । অভিযোগ, বাড়ি থেকে বের করে এনে প্রকাশ্যে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রেখে বিবস্ত্র করে চলে মারধর । কামিয়ে দেওয়া হয় মাথা । গোপনাঙ্গে লঙ্কা গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয় । বিবস্ত্র অবস্থার ছবি তুলে ভাইরাল করে দেয় অভিযুক্তরা ।
চোর অপবাদে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে মারধর, কামিয়ে দেওয়া হল মাথার চুল; গ্রেফতার শাশুড়ি-ননদ
এমনকী, প্রতিবেশীরা বাধা দিতে এলে তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ । খবর পেয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার । সেদিন থেকেই কাকদ্বীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি । এই ঘটনায় নির্যাতিতার ভাই বলেন, "আমাদের কাছে হঠাৎ সকালবেলা ফোন আসে যে দিদির অবস্থা আশঙ্কাজনক ৷ আমরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই । আমার দিদির সঙ্গে যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই । শুধুমাত্র পরকীয়া সন্দেহের বশে প্রতিবেশীরা এতটাই নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না ।"
এক প্রত্যক্ষদর্শী মহিলার কথায়, "একজন মা হয়ে কী করে কেউ এত নির্মম কাজ করতে পারে ৷ ওরা যেভাবে ঘিরে ধরে এই কাজ করেছে তাতে আমরা আটকানোর সাহস পাইনি ৷ আমাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল ৷ উনি আবার গ্রাম ঘুরে মতুয়া ঠাকুরবাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য টাকা তোলেন ৷ তাহলে যিনি সাধুর মতো কাজ করেন তিনি কী করে এমন কাজ করতে পারেন ? ওই মহিলার জন্য আমরা গ্রামের সকলে আতঙ্কে আছি ৷"
কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় 'অপরাধ', স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে থানায় আত্মসমর্পণ স্বামীর