ETV Bharat / state

আত্মীয়ের লাথিতে গর্ভেই মৃত্যু তিনমাসের সন্তানের ! পাশে দাঁড়ায়নি পুলিশও - Feticide Due to Torture in Malda - FETICIDE DUE TO TORTURE IN MALDA

Pregnant Beaten Up in Malda: পারিবারিক বিবাদের জের ৷ আত্মীয়ের লাথিতে গর্ভেই মৃত্যু হল মহিলার সন্তানের ৷ মর্মান্তিক এই ঘটনায় অসহযোগিতার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ এদিকে বিচার না পেয়ে ওই মহিলা ও তাঁর পরিবার সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হলেন ৷

Woman Beaten Up
মালদায় মারধরের জেরে গর্ভেই মৃত্যু সন্তানের (ফাইল চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 25, 2024, 8:54 PM IST

মালদা, 25 জুন: পারিবারিক বিবাদের জেরে তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা বধূকে মারধরের অভিযোগ উঠল ৷ এর ফলে মহিলার গর্ভেই মৃত্যু হয় গর্ভস্থ ভ্রূণের ৷ এই ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন ওই বধূর স্বামী ৷ কিন্তু তার রিসিভ কপি এখনও তাঁদের দেওয়া হয়নি ৷ বিচার পেতে শেষে তাঁরা সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছেন ৷ ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের একটি গ্রামে ৷

মালদায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পেটে লাথি মারার অভিযোগ, মৃত্যু হল গর্ভস্থ ভ্রূণের (ইটিভি ভারত)

কেন অভিযোগের রিসিভ কপি দেওয়া হয়নি জানতে চেয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় সামসী ফাঁড়ির ইনচার্জ রাম সাহার সঙ্গে ৷ তিনি ফোন তোলেননি ৷ যদিও ঘটনাটি জানতে পেরেই দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন রতুয়া থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার ৷ তিনি বলেন, "এই মুহূর্তে আমি কলকাতায় ৷ আগামিকাল থানায় ফিরেই ব্যবস্থা নিচ্ছি ৷ অভিযোগকারীকে ডেকে অভিযোগের রিসিভ কপি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে ৷"

আক্রান্ত গৃহবধূ জানান, তাঁর আত্মীয় বছর খানেক আগে এক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে ৷ কিন্তু ওই মেয়েকে পুত্রবধূ হিসাবে মানতে পারেনি তাঁর পরিবার ৷ এ নিয়ে পরিবারে ঝামেলা লেগেই থাকে ৷ পরিবারের লোকজন মেয়েটিকে মারধর করে বলে অভিযোগ ৷ মেয়েটি স্থানীয় সামসী ফাঁড়িতে গোটা ঘটনা জানায় ৷ পুলিশ গ্রামে এসে মহিলাকে বলে, তিনি যেন মেয়েটিকে কয়েকদিনের জন্য নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন ৷ পড়শিরাও একই কথা বলে ৷ সেইমতো মেয়েটিকে বাড়িতে থাকতে দেন গৃহবধূ ৷ এরপরেই অন্তঃসত্ত্বার উপর আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ ৷

মহিলার অভিযোগ, "কয়েক মাস আগেও আত্মীয়ের পরিবার আমার মেয়ে আর আমাকে বাড়ি থেকে বের করে মারধর করেছিল ৷ স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি-সহ আদালতে অভিযোগ জানাই ৷ আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷ উলটে ওরা আমাদের বলে, পুলিশ ওদের কিছু করতে পারবে না ৷ গত 19 জুন রাত 11টা নাগাদ মেয়ে শৌচকর্মের জন্য বাইরে বেরয় ৷ ওকে বাথরুমে বসিয়ে আমি বাইরে শৌচকর্ম করতে বসেছিলাম ৷ সেই সময় পিছন থেকে আমার মুখ চেপে ধরে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে মজিবুর ৷ আমাকে সে খুন করার চেষ্টা করেছিল ৷ কোনওমতে আমি ছাড়া পেতেই ও আমার পেটে লাথি মারে ৷ আমি অজ্ঞান হয়ে যাই ৷ এরপর স্থানীয় হাসপাতালে আমার জ্ঞান ফেরে ৷ সেখান থেকে প্রথমে গোবিন্দপাড়া, শেষে চাঁচলের একটি হাসপাতালে আমাকে রেফার করে দেওয়া হয় ৷"

তিনি জানান, হাসপাতাল থেকে তাঁকে জানানো হয়, যেহেতু তিনি তিন মাসের গর্ভবতী তাই পেটের স্ক্যান না করে ভর্তি নেওয়া যাবে না ৷ তাঁকে এরপর মালদায় নিয়ে যাওয়া হয় ৷ কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সেদিন ছবি হয়নি ৷ রাতে তাঁর প্রবল রক্তক্ষরণ হয় ৷ পরদিন মালদায় ছবি তুলে চাঁচলে আসেন তিনি ৷

এবার চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, পেটে লাথি পড়ায় তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ৷ 21 জুন সামসী ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ কিন্তু পুলিশ এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ওই মহিলার ৷

যদিও আক্রান্ত বধূর দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত মজিবুর রহমান ৷ তিনি বলেন, "আমি এসবের কিছুই জানি না ৷ সেদিন রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ৷ হঠাৎ বধূর স্বামী এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করায় আমার ঘুম ভেঙে যায় ৷ আমি বাইরে বেরিয়েই দেখি, গ্রামে পুলিশ ৷ পুলিশ দেখে ভয়ে আমি পালিয়ে যাই ৷ সেদিন অভিযোগকারী মহিলাকে আমি চোখেই দেখিনি ৷ আমি ওকে মারব কীভাবে ? কে ওকে মেরেছে সেটাও জানি না ৷ এর আগেও ওরা আমার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিল ৷ জামিনে ছাড়া পেয়েছি ৷ আমার বিরুদ্ধে পেটে লাথি মারার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন ৷"

মালদা, 25 জুন: পারিবারিক বিবাদের জেরে তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা বধূকে মারধরের অভিযোগ উঠল ৷ এর ফলে মহিলার গর্ভেই মৃত্যু হয় গর্ভস্থ ভ্রূণের ৷ এই ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন ওই বধূর স্বামী ৷ কিন্তু তার রিসিভ কপি এখনও তাঁদের দেওয়া হয়নি ৷ বিচার পেতে শেষে তাঁরা সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছেন ৷ ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের একটি গ্রামে ৷

মালদায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পেটে লাথি মারার অভিযোগ, মৃত্যু হল গর্ভস্থ ভ্রূণের (ইটিভি ভারত)

কেন অভিযোগের রিসিভ কপি দেওয়া হয়নি জানতে চেয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় সামসী ফাঁড়ির ইনচার্জ রাম সাহার সঙ্গে ৷ তিনি ফোন তোলেননি ৷ যদিও ঘটনাটি জানতে পেরেই দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন রতুয়া থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার ৷ তিনি বলেন, "এই মুহূর্তে আমি কলকাতায় ৷ আগামিকাল থানায় ফিরেই ব্যবস্থা নিচ্ছি ৷ অভিযোগকারীকে ডেকে অভিযোগের রিসিভ কপি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে ৷"

আক্রান্ত গৃহবধূ জানান, তাঁর আত্মীয় বছর খানেক আগে এক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে ৷ কিন্তু ওই মেয়েকে পুত্রবধূ হিসাবে মানতে পারেনি তাঁর পরিবার ৷ এ নিয়ে পরিবারে ঝামেলা লেগেই থাকে ৷ পরিবারের লোকজন মেয়েটিকে মারধর করে বলে অভিযোগ ৷ মেয়েটি স্থানীয় সামসী ফাঁড়িতে গোটা ঘটনা জানায় ৷ পুলিশ গ্রামে এসে মহিলাকে বলে, তিনি যেন মেয়েটিকে কয়েকদিনের জন্য নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন ৷ পড়শিরাও একই কথা বলে ৷ সেইমতো মেয়েটিকে বাড়িতে থাকতে দেন গৃহবধূ ৷ এরপরেই অন্তঃসত্ত্বার উপর আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ ৷

মহিলার অভিযোগ, "কয়েক মাস আগেও আত্মীয়ের পরিবার আমার মেয়ে আর আমাকে বাড়ি থেকে বের করে মারধর করেছিল ৷ স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি-সহ আদালতে অভিযোগ জানাই ৷ আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷ উলটে ওরা আমাদের বলে, পুলিশ ওদের কিছু করতে পারবে না ৷ গত 19 জুন রাত 11টা নাগাদ মেয়ে শৌচকর্মের জন্য বাইরে বেরয় ৷ ওকে বাথরুমে বসিয়ে আমি বাইরে শৌচকর্ম করতে বসেছিলাম ৷ সেই সময় পিছন থেকে আমার মুখ চেপে ধরে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে মজিবুর ৷ আমাকে সে খুন করার চেষ্টা করেছিল ৷ কোনওমতে আমি ছাড়া পেতেই ও আমার পেটে লাথি মারে ৷ আমি অজ্ঞান হয়ে যাই ৷ এরপর স্থানীয় হাসপাতালে আমার জ্ঞান ফেরে ৷ সেখান থেকে প্রথমে গোবিন্দপাড়া, শেষে চাঁচলের একটি হাসপাতালে আমাকে রেফার করে দেওয়া হয় ৷"

তিনি জানান, হাসপাতাল থেকে তাঁকে জানানো হয়, যেহেতু তিনি তিন মাসের গর্ভবতী তাই পেটের স্ক্যান না করে ভর্তি নেওয়া যাবে না ৷ তাঁকে এরপর মালদায় নিয়ে যাওয়া হয় ৷ কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সেদিন ছবি হয়নি ৷ রাতে তাঁর প্রবল রক্তক্ষরণ হয় ৷ পরদিন মালদায় ছবি তুলে চাঁচলে আসেন তিনি ৷

এবার চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, পেটে লাথি পড়ায় তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ৷ 21 জুন সামসী ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ কিন্তু পুলিশ এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ওই মহিলার ৷

যদিও আক্রান্ত বধূর দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত মজিবুর রহমান ৷ তিনি বলেন, "আমি এসবের কিছুই জানি না ৷ সেদিন রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ৷ হঠাৎ বধূর স্বামী এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করায় আমার ঘুম ভেঙে যায় ৷ আমি বাইরে বেরিয়েই দেখি, গ্রামে পুলিশ ৷ পুলিশ দেখে ভয়ে আমি পালিয়ে যাই ৷ সেদিন অভিযোগকারী মহিলাকে আমি চোখেই দেখিনি ৷ আমি ওকে মারব কীভাবে ? কে ওকে মেরেছে সেটাও জানি না ৷ এর আগেও ওরা আমার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিল ৷ জামিনে ছাড়া পেয়েছি ৷ আমার বিরুদ্ধে পেটে লাথি মারার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.