বর্ধমান, 20 জানুয়ারি: আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও নৃশংস খুনের ঘটনায় আজ সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণা করবেন শিয়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস ৷ নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, হাসপাতালের ভিতরের কেউ জড়িত না-থাকলে ঘৃণ্য় এই কাজ সঞ্জয়ের একার পক্ষে সম্ভব নয় ৷ এবার নির্যাতিতার পরিবারের সুরে সুর মিলিয়ে একই কথা বললেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ৷
দলের একটি কাজে এসে বর্ধমান জেলা কার্যালয়ে বসে সন্দেহ প্রকাশ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, "সন্দেহ অনেকের অনেক কিছু আছে ৷ সেই জন্য সুপ্রিম কোর্ট নিজে মামলটি হাতে তুলেছে । শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে । তথ্যের উপর ভিত্তি করে কলকাতা পুলিশের ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে । তবে, আমি জানি না আর কারও নাম রয়েছে কি না । প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল, এই ঘটনায় বিরাট একটা চক্রান্ত রয়েছে ৷ সেই চক্রকে বের না-করে পুরো বিষয়টিকে রাজ্য সরকার চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে ৷ এখন আদালত কী শাস্তি দেয়, সেই দিকেই তাকিয়ে আছি ।"
উল্লেখ্য়, শনিবার আরজি কর মামলায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্য়স্ত করেছে শিয়ালদা আদালত ৷ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 64 (ধর্ষণ) নম্বর ধারা, 66 (ধর্ষণের পর মৃত্যু) নম্বর ধারা এবং 103 (1) (খুন) নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাকে । সেই সঙ্গে আদালত জানায়, সোমবার সাজা ঘোষণা করা হবে ৷ সাধারণত দোষী সাব্য়স্তের 24 ঘণ্টার মধ্য়ে সাজা ঘোষণা করা হয় ৷ তবে এক্ষেত্রে মধ্যে রবিবার পড়ে যাওয়ায় সোমবার সাজা ঘোষণার দিন ধার্য করা হয় ৷ এই আবহে সঞ্জয়কে মৃত্যদণ্ড না যাবজ্জীবনের সাজা দেওয়া হবে ! সেই প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় রাজ্য তথা দেশ ৷
এদিন, বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেফতার প্রসঙ্গেও নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ৷ তিনি বলেন, "বাংলার ভিতর দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকেরা সহজের ঢুকে পড়ছে । এরপর তারা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে । আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা তৈরি করছে । আমরা বারবার বলেছি, এখান থেকেই আধার কার্ড রেশন কার্ড সবই পেয়ে যাচ্ছে । পুলিশ সবকিছু জেনেও চুপচাপ বসে থাকে। আসলে রাজ্য সরকার এই ব্যাপারে নরম ৷ তাদের ধারণা এরাও তাদের ভোটার । আজ দেশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নে উঠছে ৷ মুম্বইয়ের ঘটনাতেও এই রাজ্যের নাম জড়িয়ে পড়েছে ৷"
পাশাপাশি, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ধর্মরক্ষার জন্য বাড়িতে অস্ত্র রাখার বিষয়ে সমর্থন জানিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, "প্রত্যেকের আত্মরক্ষার অধিকার আছে । তাই অস্ত্র রাখতে কোনও আপত্তি নেই । সেই অস্ত্র নিয়ে বাইরে না-বেরলেই হল । তাছাড়া, এই রাজ্যে আজ মহিলাদের সুরক্ষা নেই, সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নেই ৷"
সুকান্ত মজুমদারের বাড়িতে অস্ত্র রাখার বিষয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম ৷ সেই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতাকে আক্রমণ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, "কে জঙ্গি সেটা সবাই জানে । এই দেশকে যিনি পাকিস্তান বানানোর কথা বলতে পারেন, ধর্মান্তরিতকরণের কথা বলতে পারেন, তাঁকে নিয়েই তো চিন্তা বেশি হয় ।"