শিলিগুড়ি, 26 অগস্ট: ফের একবার অচলাবস্থার মধ্যে পড়তে চলেছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ! যা নিয়ে প্রবল উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷ এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও উপাচার্য নেই ৷ এবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এবং ফিন্যান্স অফিসারের মেয়াদও ফুরিয়ে আসছে ৷ ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে আগামী 3 অক্টোবর ৷ 20 অক্টোবর মেয়াদ শেষ হচ্ছে ফিন্যান্স অফিসারের ৷ এখনও তাঁদের মেয়াদ বৃদ্ধির কোনও নির্দেশিকা পৌঁছায়নি ৷ একইসঙ্গে খালি রয়েছে ইন্সপেক্টর অফ কলেজের পদও ৷
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দেবাশিস দত্ত আবার কন্ট্রোলার অফ এক্সামিনিশেন ৷ ফলে মেয়াদ না বাড়ালে আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে যে পরীক্ষাগুলি শুরু হবে, তার ফলপ্রকাশ করতে সমস্যায় পড়বে কর্তৃপক্ষ ৷ এই অবস্থায় দ্রুত উপাচার্য এবং অন্যান্য খালি পদে নিয়োগের দাবি তুলে আগামী 29 অগস্ট থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের একাংশ ৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে খবর, রেজিস্ট্রার ও ফিন্যান্স অফিসারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দু’টি শূন্য হলে, একাধিক সমস্যা সামনে আসবে ৷ যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হবে আর্থিক ৷ এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য না থাকায়, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না ৷ লাইব্রেরির বই থেকে পড়ুয়াদের জন্য বাস কেনা যাচ্ছে না ৷ তহবিলে ঘটাতিও রয়েছে 33 কোটি টাকার ৷ এমন অবস্থায় পুজোর মুখে দুই আধিকারিকের পদ ফাঁকা থাকলে, বোনাস ও বেতন নিয়ে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কায় কর্মীরা ৷
অন্যদিকে, 2018 সালের পর থেকে কনভোকেশন হয়নি ৷ ফলে যে সকল পড়ুয়ার নিজের নিজের বিষয়ে গবেষণাপত্র জমা দিয়েছেন, তাঁদের কেউ এখনও পর্যন্ত ডক্টরেট উপাধি পাননি ৷ খুব স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত কর্তৃপক্ষ ৷ কর্মচারী সমিতি থেকে শুরু করে অধ্যাপকদের সংগঠনগুলির দাবি, যে কোনও উপায়ে দ্রুত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে অন্ততপক্ষে উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে ৷ তাহলেই রেজিস্ট্রার, ইন্সপেক্টর অফ কলেজেস এবং ফিন্যান্স অফিসার নিয়োগ করা সহজ হবে ৷ না হলে, আগামীতে সমস্যা আরও বাড়বে ৷
এর আগেও রেজিস্ট্রার এবং ফিন্যান্স অফিসারের জন্য নিয়োগের নির্দেশিকা জারি হয়েছিল ৷ কিন্তু, স্থায়ী উপাচার্যের অভাবে নিয়োগ সম্ভব হয়নি ৷ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বারবার অস্থায়ী নিয়োগের মাধ্যমে যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো হচ্ছে, তা কোনোভাবেই বিজ্ঞানসম্মত নয় ৷ এভাবে দিনের পর দিন বিশ্ববিদ্যালয় চালানো হলে, পড়াশোনার মান কমবে ৷ ঠিক একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেড আরও নিচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ৷
ইতিমধ্যে, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এবং ফিন্যান্স অফিসারের কাজের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য উচ্চশিক্ষা দফতরে একটি চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ ৷ অন্ততপক্ষে, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের আগে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এবং ফিন্যান্স অফিসারের মেয়াদ বৃদ্ধি করা সম্ভব হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ আটকে থাকবে না ৷ এই ভাবনা থেকেই চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷
এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দেবাশিস দত্ত বলেন, "উপাচার্য না থাকায় একাধিক সমস্যা হচ্ছে, তা ঠিকই ৷ তবে রেজিস্ট্রার এবং ফিন্যান্স অফিসারের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে একটি চিঠি পাঠাতে চলেছি ৷ অন্ততপক্ষে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের আগে মেয়াদ বৃদ্ধি হলে, বিশ্ববিদ্যালয় কাজ আটকে থাকবে না ৷"