চন্দ্রকোনা, 3 অক্টোবর: চেন্নাইয়ে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হল এক পরিযায়ী শ্রমিকের । মৃতের নাম সমর খাঁ (32) ৷ তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার মাংরুল গ্রামের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ৷ মহালয়ার দিন কফিন বন্দি পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ ফেরে বাড়িতে ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে চন্দ্রকোনার মাংরুল গ্রামের উত্তরপাড়ার 13 জন পরিযায়ী শ্রমিক চেন্নাইয়ে ধান রোয়ার কাজ করতে গিয়েছিলেন । সেখানে গিয়ে তাঁরা কাজ পাননি ৷ তাই ফিরে আসার চেষ্টা করেন ৷ আর তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁদের মধ্যে কয়েকজন । এই ঘটনাটি চেন্নাই সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশনে আসার পর ঘটে ।
বাড়ি ফিরে আসার সময় একে একে হঠাৎ পাঁচ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন । দ্রুত তাঁদের ভর্তি করা হয় হাসপাতালে । সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয় 32 বছর বয়সি সমর খাঁয়ের ৷ শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী, চেন্নাইয়ে গিয়ে খাবার কোনও পয়সা ছিল না ৷ এক কথায় অনাহারে কাটাতে হয়েছে তাঁদের । যদিও পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সাহায্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা ।
বুধবার বিকেলে সমর খাঁয়ের দেহ কফিনবন্দি হয়ে আসে চন্দ্রকোনায় তাঁর নিজের গ্রামে । কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা । সমরের ছোট ছেলে রয়েছে ৷ পরিযায়ী শ্রমিকের রোজগারে সংসার চলত ৷ আগামী দিনগুলি ছোট ছেলেকে নিয়ে কীভাবে চলবে, সেই চিন্তাই এখন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে সমরের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা খাঁকে ।
যদিও মৃতের পরিবারকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন চন্দ্রকোনার বিধায়ক অরূপ ধারা । সমরের দেহ বাড়ি ফেরার আগেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান তিনি । পাশাপাশি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দেহ দাহ করার সবরকম ব্যবস্থাও করেন বিধায়ক । অরূপ ধারা বলেন, "ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের সরকার চেন্নাইয়ের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্ধার থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় । বাকিদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয় । এমনকী মৃত শ্রমিকের দেহ আমাদের সরকার বিমানে করে আনিয়ে পরিবারের হাতে তুলে দেয় ৷ এছাড়াও পরিবারটিকে সবরকম সহযোগিতার জন্য প্রশাসন থেকে আমরা সকলেই পাশে রয়েছি ।"