কলকাতা, 25 ডিসেম্বর: রাজ্য সরকারের কাছে 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে নবান্ন থেকে 12 লক্ষ উপভোক্তাকে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এই মুহূর্তে প্রথম কিস্তি হিসাবে উপভোক্তাদের হাতে 60,000 টাকা দেওয়া হচ্ছে ৷ প্রথম দফায় কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর বাকি টাকা দেবে রাজ্য সরকার।
গত সপ্তাহে মঙ্গলবার থেকেই নবান্নের তরফ থেকে এই টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৷ টাকা দেওয়ার ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল, তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই এই টাকা সমস্ত উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে ৷ নবান্ন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত মাত্র 8 লক্ষ 22 হাজার উপভোক্তা এই টাকা পেয়েছেন। বাকি উপভোক্তাদের জন্য টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে এবার সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিল পঞ্চায়েত দফতর ৷ 31 ডিসেম্বরের মধ্যে 12 লক্ষ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোন যোগ্য উপভোক্তা যেন বাদ না যায়, এ বিষয়ে সরাসরি জেলাশাসকদের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। গত সপ্তাহ থেকেই বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া শুরু হলেও, কেন বিশাল সংখ্যক মানুষ এখনও টাকা পেলেন না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ যতদূর জানা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে অনেকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে সমস্যা রয়েছে ৷অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কের কেওয়াইসি আপডেট করা নেই ৷ অথবা মোবাইল ও আধার সংযুক্তিকরণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে ৷ বহু ক্ষেত্রে উপভোক্তাদের দেওয়া ফোন নম্বরও মিলছে না। সে কারণেই তাদের একাংশ টাকা পায়নি ৷ নবান্নের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই সমস্ত উপভোক্তাদের যাবতীয় সমস্যা কাটিয়ে 31 ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা দিয়ে দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, প্রথম দফার টাকা দেওয়ার কীভাবে উপভোক্তারা বাড়ি তৈরি করবেন ? এক্ষেত্রে নজরদারি কারা করবেন ? তা নিয়েও রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের তরফ থেকে কয়েকটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ নবান্ন সূত্রের খবর, এই টাকা হাতে পাওয়ার পর কীভাবে কাজ হচ্ছে, তার নজরদারি করবেন ব্লকস্তরের আধিকারিকরাই। এক্ষেত্রে বাড়ি তৈরিতে ভিত, কলাম ও ছাদ-সহ বিভিন্ন কাজ নজরদারি করবেন তাঁরাই ৷ মূলত চারটি পর্যায়ে উপভোক্তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই নজরদারির কাজ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এক্ষেত্রে কীভাবে কাজ হবে তার নির্দেশাবলী নির্দিষ্ট করতে শীঘ্রই রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের তরফ থেকে একটি এসওপি জারি করা হবে বলে জানা যাচ্ছে ৷ প্রথম কিস্তির 60 হাজার টাকা খরচ করলে তবেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া যাবে। তাই এক্ষেত্রে এনওসি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে এই এনওসি দিতে হবে, কত দূর পর্যন্ত কাজ করা হলে পরবর্তী ধাপের জন্য টাকার জন্য আবেদন করা যাবে, সবটাই এই এসওপি-র মাধ্যমে জানানো হবে।
এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই সতর্ক রাজ্য সরকার ৷ যাতে নতুন করে কোন অভিযোগ না ওঠে, সেদিকে নজর রাখতে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকেও সতর্ক করা হয়েছে।