মালদা, 11 নভেম্বর: টাকা দিতে না-পারায় বাংলা আবাস যোজনার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ৷ সেই অভিযোগ তুলে সোমবার মালদার রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের 10টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বঞ্চিত মানুষজনের একাংশ ব্লক অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান ৷
তাঁদের দাবি, এর আগে একাধিকবার এই নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা ৷ প্রশাসন সব ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল ৷ কিন্তু বাংলা আবাস যোজনার সার্ভে শুরু হতেই দেখা গেল, ব্লক প্রশাসনিক কর্তার আশ্বাস মুখেই থেকে গিয়েছে ৷ কাজ হয়নি ৷
সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে আবাস যোজনার সার্ভে ৷ রতুয়া 1 নম্বর ব্লকেও সেই কাজ চলছে ৷ কিন্তু তার তালিকা দেখে মাথায় হাত পড়েছে অনেকের ৷ অভিযোগ, যাঁদের কাঁচা বা দরমার বাড়ি, তাঁদের নাম সেই তালিকায় নেই ৷ কিন্তু যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁদের অনেকেরই নাম তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ৷
এতেই ক্ষেপে ওঠেন গ্রামবাসীরা ৷ সোমবার তাঁরা সরাসরি বিডিও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন ৷ অফিস খুলতে না খুলতেই গেটে বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা ৷ প্রথমে দফতরের কর্মীরা বিক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা করে সফল হতে পারেননি ৷ শেষ পর্যন্ত বেলা সাড়ে 12টা নাগাদ গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন বিডিও ৷
বিক্ষোভে সামিল বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধানগর গ্রামের সফিকুল ইসলাম বলেন, “বাংলা আবাস যোজনার 2017 সালের তালিকায় আমার বাবার নাম ছিল ৷ কিন্তু প্রশাসন বলছে, 2017 নয়, 2021 সালে তালিকায় বাবার নাম ছিল ৷ পরে তালিকা থেকে বাবার নাম কেটে দেওয়া হয় ৷ আমি 2017 সালের পুরোনো তালিকা খুঁজে পেয়েছি ৷ ব্লক প্রশাসনকেও জানিয়েছি ৷ এখনও বাবার নাম তালিকায় ওঠেনি ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘শুধু আমার বাবার ক্ষেত্রেই নয়, আরও অনেক মানুষের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে ৷ আমাদের গ্রামে এখনও 30-35টি কাঁচা বাড়ি আছে ৷ সবাই গরিব ৷ কেউ পঞ্চায়েত সদস্য কিংবা প্রধানকে টাকা দিতে পারেনি ৷ তাই সরকারের তালিকা থেকে তাদের নাম কেটে যাচ্ছে ৷”
আরেক বিক্ষোভকারী চাঁদমনি 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিটকাহার গ্রামের মহম্মদ কাউসার আলির বক্তব্য, “আমাদের গ্রামে যাঁদের পাকা ছাদের বাড়ি রয়েছে, তাঁদের নামই আবাস প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে ৷ অথচ যাঁরা কোনওরকমে মাথা গুঁজে রয়েছে, তাঁদের নাম তালিকা থেকে উধাও ৷ আসলে সুপারভাইজার আর পঞ্চায়েতের সদস্যকে টাকা দিতে না পারার জন্যই গরিব মানুষের নাম আবাস প্রকল্পে উঠছে না ৷ উঠলেও কেটে যাচ্ছে ৷”
এই নিয়ে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বিডিও রাকেশ টোপ্পো বলেন, “যাঁদের কাঁচা বাড়ি, অথচ বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের তালিকায় নাম নেই, তাঁদের সবাইকে ব্লক অফিসে লিখিত আবেদন করতে হবে ৷ তারপরই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে ৷”