কলকাতা, 16 অগস্ট: আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে বিজেপির অবস্থান-বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল শ্যামবাজার মোড়ে ৷ বিজেপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধ্বস্তাধ্বস্তি হয় ৷ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ অনেককে প্রিজন ভ্যানেও তুলে নেয় পুলিশ ৷ যার জেরে বেশ দীর্ঘক্ষণ পুরো রাস্তাই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ৷ বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল ৷ ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে ৷ তবে পুলিশি বাধার মুখে পড়েও নিজেদের কর্মসূচি চালিয়ে যায় বিজেপি ৷
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুন এবং বুধবার মধ্যরাতে ওই হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার শ্যামবাজার মোড়ে প্রতিবাদ অবস্থান ছিল বিজেপির । সেই প্রতিবাদ মঞ্চ ভোরের দিকে পুলিশ ভেঙে ফেলে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি ।
তবে মঞ্চ ভাঙলেও প্রতিবাদে অনড় বিজেপি । ঘটনাস্থলে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল সকাল থেকেই । বিজেপি কর্মীরাও জড়ো হন ৷ তার পরই অস্থায়ী মঞ্চ এনে বিজেপি অবস্থান কর্মসূচির চালাতে গেলে পুলিশ বাধা দেয় ৷ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ । এরপরে আস্তে আস্তে প্রিজন ভ্যান নিয়ে এসে একের পর এক বিজেপি নেতাকর্মীদের টেঁনে হিচড়ে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের সেলও ফাটায় ৷ শ্যামবাজার থেকে সিআর অ্যাভিনিউয়ের দিকে যাওয়ার জন্য ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ের একটি লেন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ ফলে বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল গাড়ি চলাচল ৷ সেই নিয়ে প্রতিবাদে সরব হন রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, মহিলা নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে ।
বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য পুলিশের এই ঘটনায় তীব্র ধিক্কার জানান । বলেন, ‘‘একটা মঞ্চ ভেঙে প্রতিবাদ বন্ধ করতে পারবে না । এই প্রতিবাদ স্বতঃস্ফূর্ত । মানুষ নিজের মতো করে কথা বলতে চাইছে । শিক্ষা ক্ষেত্রে খোলা বাজার তৈরি করেছে । রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে আদালতে অনুমতি চাইতে হয় সভা করতে ৷ পৃথিবীতে সব স্বৈরাচারী নেতাকেই ক্ষমতাচ্যূত হতে হয়েছে ৷ মমতাও আলাদা কেউ নন ৷
অগ্নিমিত্রা পালের কথায়, ‘‘আরজি করে হামলা হবে কেন খবর ছিল না পুলিশের কাছে ? আসলে সব খবরটাই ছিল ৷ তৃণমূল সাধারণ মানুষের এই আন্দোলনের মোড় ঘোরাতে চেয়ে পরিকল্পিতভাবে এই আক্রমণ করেছে । প্রমাণ লোপাট করার জন্য চেষ্টা করেছে । চারতলায় ভাঙতে গিয়ে তিনতলায় ভাঙচুর করেছে ।’’ তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনি সব ধরনের চেষ্টা করেছেন এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার ।’’
তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মৃত চিকিৎসকের দেহ পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়নি । ময়নাতদন্তের সময় আপনার লোক বসেছিল । ঘর ভেঙে প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছেন । আপনার ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক সিবিআইয়ের কাছে আমি আরজি জানাবো মুখ্যমন্ত্রীকে তদন্তের আওতায় আনা হোক৷ জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক ।’’
পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ আরও অনেকে ঘটনাস্থলে যান ৷ সেখানে ধরনায় বসার চেষ্টা করেন ৷ পুলিশি বাধা পেয়ে তাঁরা রাস্তায় বসে পড়েন ৷ পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে যায় ৷