কলকাতা, 25 জুলাই: ছাত্র আন্দোলনের চলতে থাকা বাংলাদেশ ধীরে ধীরে শান্ত হচ্ছে। দেশের বাইরে যাঁরা আছেন তাঁরাও ধাপে ধাপে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে উদ্বেগ যে কেটেছে, তা বলা যাবে না। এখনও স্বাভাবিক হয়নি দুই দেশের মধ্যে যান-বাহন চলাচল পরিষেবা ৷ তাতেই সমস্যায় বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় ঘুরতে আসা অথবা চিকিৎসার জন্য আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের, দাবি তাঁদের ৷
সাধারণত কলকাতা থেকে বিভিন্ন পরিবহণ সংস্থা বাংলাদেশে বাস পাঠায়। তাদের একাংশের দাবি, যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক হয়নি। প্রায় বন্ধ বাস যাতায়াত। তবে কয়েকটি বাস যাতায়াত করছে। কিন্তু, উভয় প্রান্তে যাত্রীদের সংখ্যা অনেকটাই কম। এখন মূলত ঢাকা-কলকাতাগামী বাস যাতায়াত করছে। যাঁরা চট্টগ্রাম বা দেশের অন্যান্য অংশে যাবেন তাঁদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেনাপোল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । কারণ, চট্টগ্রামের অবস্থা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তাই চট্টগ্রামে সরাসরি বাস পাঠাতে অনেকের সাহস পাচ্ছেন না পরিবহণ সংস্থাগুলি ।
এপ্রসঙ্গেই কলকাতার শ্যামলী এন আর পরিবহণের সেলস ম্যানেজার বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, "আমাদের পরিবহণ সংস্থার সঙ্গে সরকারি টাইআপ আছে ৷ সমস্যা খুব একটা হচ্ছে না, তাই কমবেশি প্রতিদিনই বাস বাংলাদেশ গিয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে যাত্রী সুরক্ষা সুনিশ্চিত করে বাস পাঠানো হয়েছে। যাত্রীদের কথা ভেবেই আমরা পরিষেবা জারি রেখেছি ৷ ইতিমধ্যেই চট্টগ্রামে আমাদের একটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যেখানে দিনে 6-7টা করে বাস পাঠানো হত এখন সেটা কমে দু’টো এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে যাত্রী সংখ্যা কমে 60-65 জন এসে দাঁড়িয়েছে। কারণ সকলেই ভয় ভীতির মধ্যে রয়েছেন। আশা করছি খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।"
এদিকে বাংলাদেশ থেকে কলকাতা এসেছিলেন চট্টগ্রামের বাসিন্দা মোঃ আবু সাঈদ। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও চাকরি প্রার্থী ৷ নির্ধারিত দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না চট্টগ্রামের বাসিন্দা মোঃ আবু সাঈদ। তাঁর কথায়, "গত 12 জুলাই কলকাতা হয়ে আজমীর শরীফ যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। 22 তারিখ আমাদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু, দেশে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির কারণে আর যেতে পারিনি । এখন জানিনা কবে বাড়ি ফিরতে পারব ৷ বাড়ির সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ করে উঠতে পারছি না ৷ বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট আন্দোলনকারীদের পক্ষেই রায় দিয়েছে ৷ কিন্তু এতগুলো যে প্রাণ গেল তার হিসাব কে দেবে ৷"
কলকাতায় ঘুরতে আসা আর এক বাংলাদেশি নাগরিক শেখ মইনুদ্দিন জানান, খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে তিনি আছেন । খুব কম সময়ের জন্য কলকাতাতে এসেছিলাম। এক সপ্তাহের বেশি বাড়িতে যোগাযোগ করতে পারেননি। এদিকে টাকাও যা ছিল শেষ হয়ে এসেছে ৷ কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না ৷