দার্জিলিং, 29 সেপ্টেম্বর: আট বছর পর ফের পাহাড় বনধ! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের মাঝেই এবার পাহাড় বনধের ডাক দিল চা-বাগান শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। আর চা-বাগান শ্রমিক সংগঠনের ডাকা বনধের পরই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে। মূলত পুজোর আগে চা বাগান শ্রমিকদের 20 শতাংশ বোনাসের দাবি আদায়কে কেন্দ্র করেই ওই বনধের ডাক দেয় শ্রমিক সংগঠনের যৌথমঞ্চ।
রবিবার চা-বাগান শ্রমিকদের বোনাসের দাবিতে চতুর্থবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয় দাগাপুরের শ্রমিক ভবনে। এর আগে তিনবার বোনাস সংক্রান্ত এই বৈঠক ভেস্তে যায়। কিন্তু এদিনের বৈঠক থেকেও কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। আর বৈঠক ভেস্তে যেতেই শ্রমিক ভবনের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিক সংগঠন। মূলত, চা বাগান শ্রমিকদের আটটি ট্রেড ইউনিয়ন যৌথভাবে সোমবার 12 ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে।
এর আগের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে ট্রেড ইউনিয়নের তরফে 20 শতাংশ বোনাসের দাবিতে অনড় থাকা হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ জানায় 13 শতাংশের বেশি বোনাস দেওয়া সম্ভব নয়। সবমিলিয়ে কার্যত চারবার ওই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ভেস্তে গেল। এখন যা পরিস্থিতি তাতে টি অ্যাডভাইজারি কমিটি ও রাজ্যের শ্রম দফতরকে এখন ওই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে বলে জানা গিয়েছে।
এবিষয়ে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন সিটুর নেতা তথা দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, "মালিকরা কোনওভাবেই শ্রমিকদের ভালো চান না। পুজোর মুখে শ্রমিকদের অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এখন দর কষাকষির কোনও জায়গা নেই। আমাদের একটাই দাবি শ্রমিকদের 20 শতাংশ বোনাস। আর এই দাবি পূরণ না-হওয়ায় কাল পাহাড় বনধ ডাকা হয়েছে।"
হিল তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ভক্তিমান তামাং বলেন, "চা-বাগানের শ্রমিকদের 20 শতাংশ বোনাসের দাবিতে আমাদের লড়াই চলবে। আটটি ট্রেড ইউনিয়নের তরফে সোমবার সকাল থেকে 12 ঘণ্টার বনধ ডাকা হয়েছে।" তবে বনধের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছে না ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা । মোর্চার মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, "শ্রমিকরা নিজেরাই এই বনধ পালন করতে চাইছে না। এতে আখেরে মালিকদেরই লাভ হবে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।"