ETV Bharat / state

প্রয়াত তৃণমূল সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম, শোক প্রকাশ মমতা-অভিষেকের - MP Haji Nurul Islam - MP HAJI NURUL ISLAM

TMC MP Haji Nurul Islam Passed Away: প্রয়াত হাজি নুরুল ইসলাম ৷ বুধবার বাড়িতেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি ৷ সম্প্রতি, বসিরহাট কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন হাজি নুরুল ইসলাম ৷

TMC MP Haji Nurul Islam Passed Away
প্রয়াত হাজি নুরুল ইসলাম (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 25, 2024, 2:56 PM IST

বসিরহাট, কলকাতা, 25 সেপ্টেম্বর: প্রয়াত বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম। বুধবার দত্তপুকুরের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল 61 বছর। দীর্ঘদিন ধরেই লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন তৃণমূল সাংসদ। চিকিৎসাও চলছিল তাঁর।

এদিন সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি ৷ তৃণমূল সাংসদের মৃত্যুতে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

এদিন হাজি নুরুলের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "হাজি নুরুল প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার একজন নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবক ছিলেন ৷ তিনি একটি অনগ্রসর অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। বসিরহাটের মানুষ অবশ্যই তাঁর নেতৃত্বের অভাব বোধ করবে।" একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, "আমি তাঁর পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানাই।"

অন্যদিকে, অভিষেক লিখেছেন, "বসিরহাটের আমাদের লোকসভা সাংসদ হাজি নুরুলের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। তিনি মা, মাটি, মানুষ আদর্শের একজন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন ছিলেন ৷ এমনকী তাঁর শেষ দিনগুলিতেও মানুষের সেবা এবং তাদের মঙ্গলের জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই ৷ আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।"

দীর্ঘদিন ধরেই যকৃতের ক্যানসারে ভুগছিলেন। এদিন সকাল থেকেই শরীর দ্রুত অবনতী হয় ৷ পরিবারের তরফ থেকে চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়েছিল। তড়িঘড়ি চিকিৎসকের একটি দল তাঁর বাড়িতে পৌঁছয়। সেই সময়ই সাংসদের এক ঘনিষ্ঠ জানান, তাঁর হৃদস্পন্দন, নাড়িস্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে চিকিৎসকের তরফ থেকে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। এবার লোকসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ লড়াই লড়তে হয়েছিল তাঁকে।সন্দেশখালি আবহে জেরদার লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন হাজি নরুল। নির্বাচন চলাকালীন নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল হাজি নুরুলকে। তবে সে যাত্রায় সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন। এমনকী 3 লক্ষ 33 হাজার ভোটে বিজেপির রেখা পাত্রকে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন হাজি নুরুল ৷ কিন্তু সেই সুস্থতা দীর্ঘস্থায়ী হল না।

1978 সালে জাতীয় কংগ্রেসের ছাত্র রাজনীতি দিয়ে রাজনীতির আঙ্গিনায় হাতেখড়ি হাজি নুরুলের। 94 সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের বিভিন্ন সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলেছেন। 1998 সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। সে সময় তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। 2003 সালে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে যেতেন। 2008-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়ে জেলা পরিষদ সদস্য হন হাজি নুরুল। এরপর 2009 সালে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে প্রথমবার সাংসদ হিসেবে এই বসিরহাট কেন্দ্রেই প্রার্থী করে। তাতে সহজ জয় পেয়ে সাংসদও হন তিনি। যদিও 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়নি তাঁকে। সেখান থেকে সরিয়ে হাজি নুরুলকে টিকিট দেওয়া হয় জঙ্গিপুরে। কিন্তু সেখানে তিনি জিততে পারেননি। 2016 সালে হাড়োয়া বিধানসভায় জয়ী হয়ে বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন এরপর 2021 বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় একই আসনে তাঁকে দল টিকিট দেয় ৷ সেখানে জয় পান তিনি।

2014-এর লোকসভা নির্বাচনে এই বসিরহাট ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রেস্টিজ ফাইট। সে সময় সন্দেশখালি ইস্যুতে আলোচনায় ছিল গোটা রাজ্য।এখানে তৃণমূল হাজি নুরুলের উপর ভরসা রাখে এবং সেখানে সহজ জয় উপহার দেন তিনি। তবে এই পর্বে সাংসদ হিসেবে বেশি দিন মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পেলেন না তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ হলো তিনি মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘুশের রাজ্য চেয়ারম্যান এবং বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। এদিকে, সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকের ছায়া বসিরহাটে।

বসিরহাট, কলকাতা, 25 সেপ্টেম্বর: প্রয়াত বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম। বুধবার দত্তপুকুরের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল 61 বছর। দীর্ঘদিন ধরেই লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন তৃণমূল সাংসদ। চিকিৎসাও চলছিল তাঁর।

এদিন সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি ৷ তৃণমূল সাংসদের মৃত্যুতে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

এদিন হাজি নুরুলের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "হাজি নুরুল প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার একজন নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবক ছিলেন ৷ তিনি একটি অনগ্রসর অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। বসিরহাটের মানুষ অবশ্যই তাঁর নেতৃত্বের অভাব বোধ করবে।" একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, "আমি তাঁর পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানাই।"

অন্যদিকে, অভিষেক লিখেছেন, "বসিরহাটের আমাদের লোকসভা সাংসদ হাজি নুরুলের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। তিনি মা, মাটি, মানুষ আদর্শের একজন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন ছিলেন ৷ এমনকী তাঁর শেষ দিনগুলিতেও মানুষের সেবা এবং তাদের মঙ্গলের জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই ৷ আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।"

দীর্ঘদিন ধরেই যকৃতের ক্যানসারে ভুগছিলেন। এদিন সকাল থেকেই শরীর দ্রুত অবনতী হয় ৷ পরিবারের তরফ থেকে চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়েছিল। তড়িঘড়ি চিকিৎসকের একটি দল তাঁর বাড়িতে পৌঁছয়। সেই সময়ই সাংসদের এক ঘনিষ্ঠ জানান, তাঁর হৃদস্পন্দন, নাড়িস্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে চিকিৎসকের তরফ থেকে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। এবার লোকসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ লড়াই লড়তে হয়েছিল তাঁকে।সন্দেশখালি আবহে জেরদার লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন হাজি নরুল। নির্বাচন চলাকালীন নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল হাজি নুরুলকে। তবে সে যাত্রায় সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন। এমনকী 3 লক্ষ 33 হাজার ভোটে বিজেপির রেখা পাত্রকে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন হাজি নুরুল ৷ কিন্তু সেই সুস্থতা দীর্ঘস্থায়ী হল না।

1978 সালে জাতীয় কংগ্রেসের ছাত্র রাজনীতি দিয়ে রাজনীতির আঙ্গিনায় হাতেখড়ি হাজি নুরুলের। 94 সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের বিভিন্ন সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলেছেন। 1998 সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। সে সময় তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। 2003 সালে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে যেতেন। 2008-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়ে জেলা পরিষদ সদস্য হন হাজি নুরুল। এরপর 2009 সালে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে প্রথমবার সাংসদ হিসেবে এই বসিরহাট কেন্দ্রেই প্রার্থী করে। তাতে সহজ জয় পেয়ে সাংসদও হন তিনি। যদিও 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়নি তাঁকে। সেখান থেকে সরিয়ে হাজি নুরুলকে টিকিট দেওয়া হয় জঙ্গিপুরে। কিন্তু সেখানে তিনি জিততে পারেননি। 2016 সালে হাড়োয়া বিধানসভায় জয়ী হয়ে বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন এরপর 2021 বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় একই আসনে তাঁকে দল টিকিট দেয় ৷ সেখানে জয় পান তিনি।

2014-এর লোকসভা নির্বাচনে এই বসিরহাট ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রেস্টিজ ফাইট। সে সময় সন্দেশখালি ইস্যুতে আলোচনায় ছিল গোটা রাজ্য।এখানে তৃণমূল হাজি নুরুলের উপর ভরসা রাখে এবং সেখানে সহজ জয় উপহার দেন তিনি। তবে এই পর্বে সাংসদ হিসেবে বেশি দিন মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পেলেন না তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ হলো তিনি মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘুশের রাজ্য চেয়ারম্যান এবং বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। এদিকে, সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকের ছায়া বসিরহাটে।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.