সন্দেশখালি, 26 ফেব্রুয়ারি: পাঁচ ঘণ্টা অন্যের বাড়িতে লুকিয়ে থাকার পর রবিবার আটক করা হয় তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে ৷ রাতভর জেরার পর সোমবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করে মিনাখাঁ থানার পুলিশ। আজই তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ রবিবার দিনভর তাঁর গ্রেফতারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বেড়মজুর অঞ্চল। জমি দখল, মারধর, হুমকি-সহ একাধিক অভিযোগে গ্রেফতার করা হল শাহজাহান ও তাঁর দোসর সিরাজউদ্দিন ঘনিষ্ঠ অজিত মাইতিকে।
গতকাল গণরোষ থেকে বাঁচতে এলাকারই এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এই তৃণমূল নেতাকে। তখন বাইরে জনতার প্রবল চিৎকার-চেঁচামেচি। পুলিশের সঙ্গে ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীদের বচসা, ধস্তাধস্তি। এই পরিস্থিতিতে কিছুতেই অজিতকে বাড়ির বাইরে বের করা যাচ্ছিল না। শেষে সন্ধ্যায় বিশাল বাহিনী নিয়ে এসে পুলিশের পদস্থ কর্তারা সরু গলি দিয়ে তাঁকে কোনওরকমে বের করে তড়িঘড়ি গাড়িতে চাপিয়ে থানায় নিয়ে চলে যান। তখনই আটক ওই তৃণমূল নেতার গ্রেফতারির সম্ভাবনা বাড়ছিল। অবশেষে সেই সম্ভবনায় সত্যি হল!
পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগে সন্দেশখালির কাছারি এলাকায় তাঁর বাড়িতে যখন গণরোষ আছড়ে পড়েছিল, তখনই এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এই অজিত মাইতির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।' একদিন কাটতে না-কাটতে প্রথমে তাঁকে আটক। পরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি অজিত মাইতি। তাঁর বিরুদ্ধে জোর করে জমি দখল, অন্যের জমির নথি জাল করে তা বিক্রি করে দেওয়া। এরকম ভুরিভুরি অভিযোগ রয়েছে ৷
এদিকে, অজিতের বিরুদ্ধে যখন ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে বেড়মজুরে ৷ তখন সন্দেশখালির অন্য একটি জায়গা থেকে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক জানিয়ে দেন, দল তাঁর পাশে নেই। তাঁর পদও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর কথায়, "অন্যায় করলে তো রাগের বহিঃপ্রকাশ হবেই।" অন্যদিকে, আটক এই তৃণমূল নেতাকে মিনাখাঁ থানায় নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের সহায়তা কেন্দ্রে জমি দখলের যে অভিযোগ জমা পড়েছিল প্রাথমিকভাবে তার সত্যতা মেলায় সোমবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় শাহজাহান ঘনিষ্ঠ অজিত মাইতিকে। এদিনই ধৃত তৃণমূল নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করবে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন: