কলকাতা, 19 ফেব্রুয়ারি: ইএম বাইপাসে গাড়ি দুর্ঘটনা ৷ বুধবার সকালে একটি গাড়ি ধাক্কা মারে রাস্তার ধারে থাকা একটি পিলারে ৷ আহত হন তিনজন ৷ আহতদের মধ্যে একজন নাবালক ৷ তাঁদের বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ৷
কীভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা, এই প্রশ্ন ঘিরেই রহস্য দানাবাঁধতে শুরু করেছে ৷ কারণ, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের পিলারে ধাক্কা মেরেছিল, নাকি ইচ্ছা করেই গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটানো হয়, সেই প্রশ্নই দানা বেঁধেছে ৷ কলকাতা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ৷
একটি দুর্ঘটনাকে নিয়ে এমন রহস্যের গন্ধ কেন পাচ্ছেন তদন্তকারীরা ? লালবাজার সূত্রে খবর, গাড়িতে যে তিনজন ছিলেন, তাঁরা আপাতত চিকিৎসাধীন ৷ তাঁদের সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছে তদন্তকারীদের ৷ তাঁরাই জানিয়েছেন যে মরার উদ্দেশ্যেই গাড়ি নিয়ে পিলারে ধাক্কা দেওয়া হয় ৷
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দু’জনের কথায় অসঙ্গতি রয়েছে ৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, "সবক’টি বিষয় গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে । প্রসূন ও প্রণয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য ও তাঁদের মনোভাব জানার জন্য একজন মনোবিদের সাহায্য নেব ৷"
কেন তাঁরা চরম পদক্ষেপ করতে যাচ্ছিলেন ? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় যে তিনজন আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দু’জনের নাম প্রসূন দে ও প্রণয় দে ৷ তাঁদের বাড়ি কলকাতার ট্যাংরা থানা এলাকায় ৷ এদিন সকালে ওই এলাকার একটি আবাসনের চারতলার ফ্ল্যাট থেকে একই পরিবারের তিনজনের দেহ উদ্ধার হয় ৷ প্রণয়-প্রসূন ওই নিহতদের আত্মীয় ৷
কলকাতা পুলিশ ট্যাংরায় দেহ উদ্ধারের ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করছে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে ওই তিনজন প্রথমে পায়েস খায় ৷ তার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাতের শিরা কেটে ফেলে ৷ তদন্তকারীদের ধারণা, গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত তিনজনও ওই পায়েস খেয়ে থাকতে পারেন ৷ তার পর সেখান থেকে বেরিয়ে গাড়ি দুর্ঘটনার মাধ্যমে নিজেদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তাঁরা ৷
লালবাজার সূত্রে খবর, ট্যাংরার ওই পরিবারের চামড়ার ব্যবসা ছিল ৷ কিন্তু সেই ব্যবসায় মন্দা চলছিল বছরখানেক ধরে ৷ তার জেরে ঋণও হয়ে যায় তাঁদের ৷ এছাড়া পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি বিবাদও চলছিল ৷ দিনকয়েক আগে ওই ফ্ল্যাটে একটি পার্টির আয়োজন করা হয় ৷ সেখানে সম্পত্তি নিয়ে মারাত্মক গোলমাল বেঁধেছিল ৷
ফলে এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ ৷ ট্যাংরায় ইতিমধ্যে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা গিয়েছেন ৷ কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) রূপেশ কুমার-সহ একাধিক ও ঘটনাস্থলে যান ৷