কলকাতা, 21 জুলাই: আরও একটাই একুশে জুলাই। দূর দূরান্ত থেকে আসা মানুষের কলকাতা মুখী জনস্রোত। দিনটিকে জুড়ে তৃণমূল কর্মীদের আবেগ। শহীদ দিবস হলেও উৎসবের চেহারা মূলত রাজপথে। যদিও মূল সভা শুরু হতে এখনও ঢের বাকি। তবে সকালের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই জেলা থেকে শহরের একটাই পরিচয়, একটাই ঠিকানা। 'আমরা কারা, তৃণমূল'।
হ্যাঁ, এটা সেই তৃণমূল কংগ্রেস যার জন্ম লগ্ন থেকে মা মাটি মানুষের হয়ে কাজ করার দায়বদ্ধতা রয়েছে । হ্যাঁ এটা সেই তৃণমূল কংগ্রেস যার নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলন যার রক্তে। নো ভোটার কার্ড নো ভোট এই আন্দোলনকে সামনে রেখে যিনি কলকাতার রাজপথে ঝড় তুলেছিলেন। সেদিন অবশ্য কলকাতার রাজপথে ঝরে গিয়েছিল 13টি তরতাজা প্রাণ। তখন যুবনেত্রী মমতা। আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। অথচ এই দিনটিকে আজও ভোলেননি তিনি। ভোলেননি কোনও তৃণমূল কর্মী আর তাই আজ একইভাবে প্রাসঙ্গিক একুশে জুলাই।
রবিবাসরীয় বাংলায় একুশের মঞ্চে সবচেয়ে বড় চমক হয়তো হতে চলেছে আজ। যেখানে একপাশে অভিষেক একপাশে অখিলেশকে নিয়ে জাতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস আজকের দিনে কতটা প্রাসঙ্গিক তা তুলে ধরবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল সন্ধ্যাতেই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন আজকের এই সভার শুধু কোনও রাজনৈতিক সভা নয়। বরং আজকের সভা হল দেশ বাঁচানোর সভা । জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে দেশ বাঁচানোর লক্ষ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি বার্তা দেন, সেটা অবশ্যই নজর থাকবে গোটা দেশের।
সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে যে বিপুল জনাদেশ এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে তা আজ শহীদ তর্পনের কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে। আজকের এই মঞ্চ থেকেই আগামী 26-এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে লড়াইয়ের বার্তাও দেবেন তৃণমূল নেত্রী। ঘোষণা করবেন দলের পরবর্তী কর্মসূচি। রাজনৈতিক দিক থেকেও এবারের একুশে জুলাইয়ের গুরুত্ব একটু আলাদা হতে চলেছে। দলীয় সূত্রের খবর, এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে মূল ফোকাস থাকবে দলীয় সংগঠন-শৃঙ্খলার উপর। শৃঙ্খলারক্ষায় নেত্রী কড়া বার্তা দিতে প্রস্তুত।
ইদানীং, কালে তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলার, পুর চেয়ারম্যান, বিধায়কদের বিরুদ্ধে ভূরিভূরি অভিযোগ উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভূক্তভোগী সাধারণ মানুষ। সেই সমস্ত ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সমস্যা সমাধানে দলীয় সংগঠনে একাধিক রদবদলের খবরও রয়েছে রাজ্যের শাসক শিবিরের অন্দরে। এই পরিস্থিতিতে আজ ধর্মতলায় বেনোজল সরিয়ে শুদ্ধিকরণের মধ্য দিয়ে উন্নততর তৃণমূল তৈরির শপথও নিতে চলেছেন জোড়াফুল নেতৃত্ব।
ঘড়ির কাঁটা যতই এগোচ্ছে শ্যামবাজার, শিয়ালদা, হাওড়া স্টেশন, হাজরা থেকে মিছিল আসছে ভিক্টোরিয়া হাউস অভিমুখে। ভিড় বাড়ছে সেখানে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব বলছে স্মরণ কালে সবচেয়ে বেশি জমায়েত এবার হতে চলেছে ধর্মতলায় । ইতিমধ্যেই তার জন্য হাজার হাজার কর্মী-সমর্থকরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে শুরু করেছেন ৷