কলকাতা, 24 অগস্ট: আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়া ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের স্ক্যানারে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন পড়ুয়া চিকিৎসক ৷ ঘটনার দিন অনান্যদের মতোই তাঁদের গতিবিধিও সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে ৷ সিবিআই-এর দাবি, 9 অগস্ট আরজি করে হাসপাতালে এই ঘটনা রাত তিনটে থেকে চারটের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল ৷ এছাড়া পুলিশের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, দেহটি প্রথম নজরে আসে সকাল 10টা নাগাদ। পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছয় সাড়ে 10টা নাগাদ। আর এখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের দাবি, এই 30 মিনিটেই যা হওয়ার তা হয়েছিল ৷ পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ঘেঁটে সিবিআই আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, 9 তারিখ টালা থানার পুলিশ হাসপাতালে আসার কিছুক্ষণ পর পৌঁছেছিলেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ।
কিন্তু, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে তিনি বেশ কয়েকজনকে ফোন করে নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ সিবিআই সূত্রের খবর, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ কলে ৷ এছাড়াও এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, 9 তারিখ সকালে এমন ঘটনা শোনার পর যখন তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন সেই সময় ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন একজন হাউসস্টাফ এবং সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন ইন্টার্ন এবং দু'জন চিকিৎসক ৷ সূত্রের খবর, এর পরে নাকি সন্দীপ ঘোষ ঘটনাস্থলে যান। পরে ঘটনাস্থল বা প্লেস অফ অকারেন্সে আসে পুলিশ ৷ এখানেই সিবিআইয়ের প্রশ্ন, ঘটনার পর সন্দীপ ঘোষ কাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করেছিলেন ? কী নির্দেশই বা দিয়েছিলেন ?
এছাড়াও সিবিআই গোয়েন্দাদের মনে আরও কয়েকটি প্রশ্ন জেগেছে, তা হল ঘটনাস্থলকে পুলিশকে দিয়ে আগেভাগে কেন সুরক্ষিত করা হল না ?
কেন পুলিশ পৌঁছানোর আগেই সেখানে পৌঁছে গেল সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং একজন হাউস স্টাফ ? সিবিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং হাউস স্টাফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ৷ তাঁদের কথাবার্তায় বিস্তার অসঙ্গতি মিলেছে ৷ এছাড়াও সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনও পর্যন্ত যে চাঞ্চল্যকর তথ্য গোয়েন্দারা পেয়েছেন তা হল, তিনি কোনও বিশেষ ব্যক্তির নির্দেশের জন্য নাকি অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু, কে এই বিশেষ ব্যক্তি ? তা এখনও খোলাসা করেননি সিবিআই গোয়েন্দারা ৷
ছাত্রদের পাশ করাতে টাকা নিতেন সন্দীপ, দুর্নীতি মৃতদেহ নিয়েও; অভিযোগ হাইকোর্টে
এই ঘটনার তদন্তে নেমে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর প্রাক্তন অধ্যক্ষকে ফোনে খবর দিয়েছিলেন আরজি কর হাসপাতালের এমএসভিপি সঞ্জয় বশিষ্ঠ ৷ আবার সঞ্জয় বশিষ্ঠকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা জানতে পারেন, তাঁকে নাকি এই ঘটনার কথা ফোনে জানিয়েছিলেন নিহত চিকিৎসকের ইউনিট প্রধান চিকিৎসক সুমিত রায় তপাদার ৷ তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা ৷ আর সব থেকে বড় ব্যপার, গোটা ঘটনার খবর পেয়ে ওই বিভাগে পৌঁছে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে ফোন করেছিল তারই এক ঘনিষ্ঠ ইন্টার্ন চিকিৎসক ৷ এখানেই সিবিআই এর প্রশ্ন, কেন একজন ইন্টার্ন এতজন উচ্চপদস্থ চিকিৎসক এবং আধিকারিকদের বাদ দিয়ে হাত বাড়িয়ে সন্দীপ ঘোষকে ফোন করে ঘটনার বিবরণ দিল ?