শিলিগুড়ি, 6 নভেম্বর: ফের নিষ্ফলা হল চা-বাগানের শ্রমিকদের বোনাসের দাবিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক । বোনাস ইস্যুতে এই নিয়ে এক ডজনেরও বেশি বৈঠক ভেস্তে গেল ।
বুধবার কলকাতায় শ্রমিক ভবনে পাহাড়ের চা-বাগানের শ্রমিকদের বোনাসের ইস্যুতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছিল রাজ্যের শ্রম দফতর । ওই বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, শ্রম দফতরের সচিব, যুগ্মসচিব-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা, পাহাড়ের চা-বাগানের আটটি শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না মালিকপক্ষের কোনও প্রতিনিধি । যার ফলে এদিনের বৈঠক ভেস্তে যায় । যদিও আগামী ত্রিপাক্ষিক বৈঠকটি 16 নভেম্বর শিলিগুড়ির শ্রমিক ভবনে হবে বলে জানিয়েছে শ্রম দফতর । মালিকপক্ষের এহেন অসহযোগিতায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলো ।
দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক তথা সিটুর সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, "এটা পরিষ্কার যে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের কথা চিন্তাই করে না । একের পর এক বাহানা দিয়ে তারা বৈঠককে বিফল করছে । পাহাড়ে বোনাসের দাবিতে বনধ হলেও শ্রম দফতর এবং মালিকপক্ষের টনক নড়েনি ৷ পরবর্তী বৈঠক 16 নভেম্বর শিলিগুড়ির শ্রমিক ভবনে হবে । সেখানেও যদি আমাদের দাবি না-মানা হয় তবে এবার পাহাড়ে তীব্র আন্দোলন হবে ।"
শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের সভাপতি যতন রাই বলেন, "এদিনের বৈঠকেই বোনাস নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু মালিকপক্ষ ফের যাতে চা-বাগানের শ্রমিকরা বোনাস না-পান, তার জন্য ষড়যন্ত্র করে বৈঠকে আসেনি । আর মালিকপক্ষের হয়ে রাজ্য সরকার পক্ষপাতিত্ব করে চলেছে । এটা আর বেশি দিন চলবে না । এটা পরিষ্কার যে, মালিকপক্ষ আমাদের দাবি মানতে চাইছে না ।"
অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম অধিকর্তা শ্যামল দত্ত বলেন, "এদিনের বৈঠকে যেহেতু মালিকপক্ষের তরফে কেউ উপস্থিত ছিলেন না, তাই বৈঠকে কোনও সুরাহা হয়নি । পরবর্তী বৈঠক শিলিগুড়িতে হবে ।"
প্রসঙ্গত, তরাই, ডুয়ার্স এবং সমতলে আগেই 16 শতাংশ বোনাস ঘোষণা করেছে শ্রম দফতর । কিন্তু পাহাড়ের চা-বাগানের শ্রমিকদের জন্য আগে থেকে ট্রেড ইউনিয়নগুলি 20 শতাংশ বোনাসের দাবি জানিয়ে আসছে । যে কারণে একাধিকবার বৈঠক হলেও সেই দাবি মেটেনি ৷ সম্প্রতি বোনাসের দাবিতে পাহাড়ের চা-বাগানে কর্মবিরতির পাশাপাশি পাহাড়ে 12 ঘণ্টার বনধও পালিত হয় । তারপরেই ফের কলকাতায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকে শ্রম দফতর । কিন্তু এদিনের সেই বৈঠকও ভেস্তে যায় ।