সিউড়ি, 20 সেপ্টেম্বর: প্রথমে ঘরে বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে খুন । পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে কোপানো হয় 9 জনকে। এমন ভয়াবহ ঘটনার পর কেটে গিয়েছে 44 বছর । অবেশেষে হল বিচার। 13 জনকে দোষী সাব্যস্ত করল সিউড়ি জেলা আদালত। 1981 সালের 8 অগস্ট বীরভূমের ময়ূরেশ্বর এলাকায় দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে একই পরিবারের 6 জন-সহ মোট 9 যুবককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল ৷ ঘটনায় 72 জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ৷ তাদের মধ্যে জীবিত 52 জন ৷ তাদের মধ্যে এদিন 13 জনকে দোষী সাব্যস্ত করলেন বিচারক। বাকি 39 জনের ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
মামলার সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। তা নয়, বিচার পাওয়া যায় ৷ এদিন সিউড়ি জেলা দায়রা আদালত 13 জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। আট জনের সাক্ষ গ্রহণ করে 13 জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।" প্রসঙ্গত, 1981 সালের 7 অগস্ট বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার (বর্তমানে এটি মল্লারপুর থানার অন্তর্গত) কোটগ্রামে 9 যুবককে পুড়িয়ে ও কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল ৷
মামলার সরকারি আইনজীবী ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বোন অসুস্থ খবর পেয়ে মাড়গ্রাম থেকে একই পরিবারের 6 জন অন্য 3 যুবক দেখতে এসেছিলেন ৷ বোন সুস্থ হতেই 8 অগস্ট গ্রামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার কথা বলেন তারা ৷ এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বচসা ৷ পরে হাতাহাতি বাঁধে। একটি ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেয় ওই নয় যুবক ৷ ওই ঘরেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ৷
পরে লঙ্কা গুঁড়ো ছিটিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল তাদের ৷ এই ঘটনায় 72 জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল ৷ অভিযুক্তদের মধ্যে বর্তমানে 52 জন জীবিত। মামলায় পুলিশ অফিসার, চিকিৎসক-সহ আট জনের সাক্ষ গ্রহণ করা হয় ৷ এদিন, সিউড়ি জেলা দায়রা আদালতের বিচারক 13 জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন ৷ 44 বছর পর একটি মামলার দোষী সাব্যস্ত হল।
এত দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে মামলার সরকারি আইনজীবী জানান, বেশ কয়েকজন অভিযুক্তর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র আসতে দেরি হয়েছে ৷ আবার কখনও হাইকোর্টে মামলা যাওয়ায় দেরি হয়েছে ৷ কখনও তদন্তকারী অফিসারকে পাওয়া যায়নি। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় খুশি মৃতদের পরিবার। তাদের একজন এসএম বদিরুজ্জামান বলেন, "আমরা খুশি। দেরিতে হলেও বিচার পেলাম ৷ সেই দিন নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল ৷ আমরা অপেক্ষায় ছিলেম বিচারের। আজ পেলাম।"