আসানসোল, 28 অক্টোবর: বেতন নিয়ে ঠিকা শ্রমিকদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করার অভিযোগ । আর এই কারণে সেলের বার্নপুরে ইস্কো কারখানা ও কুলটি কারখানায় ধর্মঘট ডাকল শ্রমিক ইউনিয়নগুলি ।
শ্রমিকদের অভিযোগ, একই সংস্থার তিনটি কারখানা । অথচ সেলের দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় ঠিকা শ্রমিকদের যা বেতন বা শ্রমিকদের যা সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়, তার ছিঁটেফোঁটাও পায় না বার্নপুর ইস্কো এবং কুলটি কারখানা । তাই সোমবার স্থায়ী শ্রমিকদের বকেয়া এরিয়ার এবং ঠিকা শ্রমিকদের সেন্ট্রাল ওয়েজেস-সহ বেশ কয়েকদফা দাবিতে আসানসোলের বার্নপুরে সেলের ইস্কো কারখানায় ও কুলটি সেল রাইটসে ধর্মঘট ডাকা হয় ।
বাম শ্রমিক সংগঠন সিটু, এআইটিউসি কংগ্রেসের আইএনটিইউসি, বিএমএস ও এইচএমএস-সহ মোট পাঁচটি শ্রমিক সংগঠনের ডাকে এই ধর্মঘট পালিত হচ্ছে । সোমবার সকাল থেকেই পাঁচটি শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা ইস্কো কারখানার প্রবেশ পথ ট্যানেল গেট সংলগ্ন ওভারব্রিজ গেটে অবরোধ করে । শ্রমিকদের কাজে না-যাওয়ার আবেদন জানান । পাশাপাশি ইস্কো কারখানার অনান্য গেটগুলিতেও অবরোধ করা হয় ।
শ্রমিক নেতা সঞ্জীত বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রতীক গুপ্তের কথায়, "দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী শ্রমিকদের এরিয়ার বাকি । পাশাপাশি ঠিকা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের যা ওয়েজেস আছে, তা দিতে হবে । শ্রমিকদের দাবি, দুর্গাপুরেও সেলের ইস্পাত কারখানা রয়েছে । সেখানে কেন্দ্রের ওয়েজেস অনুযায়ী ঠিকা শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে । অথচ একই জেলায়, একই সংস্থার কারখানা হওয়া স্বত্ত্বেও বার্নপুর ও কুলটির কারখানায় ঠিকা শ্রমিকরা কেন্দ্রের ওয়েজস অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন না । তাই এই ধর্মঘটে ইস্কোর সঙ্গে সামিল হয়েছে কুলটির সেল রাইটস বা কুলটি গ্রোথ ওয়ার্কস ।"
সোমবার সপ্তাহের শুরুর দিনে সকাল থেকেই শ্রমিকরা এখানে ধর্মঘট ডেকেছে এবং কার্যত তাঁরা একদিনের বেতন না-নিয়েই এই ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন । প্রায় 500 ঠিকা শ্রমিক কুলটি সেল গ্রোথ ওয়ার্কসের বাইরে বসে ধর্মঘট শুরু করে ।
শ্রমিকদের একই দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েজেস অনুযায়ী তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না । যেখানে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় বেতন বৃদ্ধি হয়েছে, সেখানে একই সংস্থায় কাজ করা সত্ত্বেও কুলটি সেল গ্রোথ ওয়ার্কসের শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি হয়নি ৷ কার্যত রাজ্য সরকারের নিয়মমাফিক তাঁরা এখানে বেতন পাচ্ছেন, যা প্রায় কেন্দ্রের বেতনের অর্ধেক ।
তাঁদের দাবি, সেই কারণেই এই ধর্মঘট এবং আগামিদিনে বেতন বৃদ্ধি না-হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে শ্রমিকরা যাবেন ৷ এমনও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শ্রমিকরা । একদিনের এই ধর্মঘটে অনেকটাই উৎপাদনে ঘাটতি হবে সেলের বিভিন্ন কারখানায় বলে মনে করা হচ্ছে ।