কলকাতা, 18 অক্টোবর: সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে । এই অবস্থায় সিভিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৃহস্পতিবার রাতে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবার থেকে আর কোনও হাসপাতালেই থাকবে না সিভিক ভলান্টিয়ার । জানা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিবর্তে এবার বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী এবং পুলিশের উপরই ভরসা রাখতে চলেছে রাজ্য সরকার ।
প্রসঙ্গত, আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার । সিবিআই যে চার্জশিট দিয়েছে তাতে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার সরাসরি প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে । প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় হাসপাতালগুলিতে সিভিকের নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন । এব্যাপারে রাজ্যের থেকে হলফনামাও চাওয়া হয়েছে ৷
জানা যাচ্ছে, এরপরই রাজ্য তথা কলকাতার সব হাসপাতাল থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য প্রশাসন । একইসঙ্গে সব জেলা পুলিশ সুপার এবং কমিশনারেটের কমিশনারদের নির্দেশ দেয়, যেন তাঁরা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপস্থিতি পুনর্বিবেচনা করেন ।
প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিষয়ে খুঁটিনাটি জানার কাজ । কোন জেলায় ঠিক কতজন সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন, তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া কীভাবে চলেছে, বয়স ও উচ্চতার ক্ষেত্রে কী নিয়ম মানা হয়েছে, এই সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তৈরির কাজ রাজ্য পুলিশ শুরু করে দিয়েছে । বিভিন্ন জেলার রিপোর্ট পুলিশ ডিরেক্টরেটে জমা পড়ার পর সমস্ত নথি পর্যালোচনা করে দেখা হবে । সেখানে কোনও ফাঁক থাকলে, তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে জানা গিয়েছে ।
তথ্য বলছে, খাতায় কলমে এই সিভিক ভলান্টিয়ারদের সহযোগী বলা হলেও, জেলা পুলিশের থানা-ফাঁড়ির কাজ চালানোর ক্ষেত্রে তাঁরা বড় ভূমিকা নেন । পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম থাকায় অপরাধের ঘটনাস্থল পাহারা দেওয়া বা তদন্তের কাজে তাঁদের কাজে লাগাতে বাধ্য হচ্ছেন জেলার সিনিয়র অফিসাররা । হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটিতে লাঠি হাতে তাঁদের নামানো হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে বিভিন্নমহল থেকে । এই নিয়ে বারবার বিতর্ক হয়েছে । সার্ভিস বুক না থাকায় শাস্তির ব্যবস্থাও নেই তাঁদের । সেই জায়গা থেকেই এই সুমারিও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ।