বিষ্ণুপুর, 30 সেপ্টেম্বর: আদিবাসী সংস্কৃতি ও শকুন্তলার কাহিনীর পর এবার বালুচরীতে দেখা যাবে রামায়ণের 'চিত্র-কথা' ৷ এর আগে মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুরের শিল্পী অমিতাভ পাল 'কারুকলা', 'তিন লাখি', 'এক লাখি' নামাঙ্কিত অনেক বালুচরী শাড়ি উপহার দিয়েছেন ৷ শাড়ির মধ্যে আদিবাসী সংস্কৃতি, শকুন্তলার কাহিনী তুলে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন ৷ এবার তাঁরই হাত ধরে বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী বালুচরীতে ফুটে উঠেছে রামায়ণের খণ্ডচিত্র ।
শিল্পী অমিতাভ পাল জানান, এক একটি শাড়ি তৈরি করতে সময় লেগেছে অন্তত 30 থেকে 35 দিন । ফলে দামও বেড়েছে বেশ খানিকটা । প্রতিটি শাড়ির দাম 35 হাজার টাকা । এরকম পাঁচটি শাড়ি তৈরি করেছেন, যার মধ্যে 4টি শাড়ি ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে ৷ সদ্য তৈরি হওয়া একটি শাড়ি এখনও তাঁর কাছে রয়েছে । আগামী দিনেও তিনি শাড়ি প্রেমীদের কাছে নিত্যনতুন বালুচরীর সম্ভার তুলে ধরবেন ।
কী রয়েছে শাড়িতে ?
শাড়ির গায়ে জটায়ুর প্রতিচ্ছবির পাশাপাশি তারকা রাক্ষসী বধ, হনুমানের খঞ্জনি বাজানো, শ্রীরামের হরধনু ভঙ্গ ও সীতার অগ্নিপরীক্ষার ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ৷ এছাড়াও, আঁচলে রয়েছে লব-কুশের যজ্ঞের ঘোড়া আটকানো আর তাদের পঠনপাঠনের কাহিনি । দু'পাশে রয়েছে, রামের বনবাস ও সীতা হরণের ছবি ৷ মাঝখানে বড় আকারে রয়েছে সীতা হরণের সময় রাবণের জটায়ুর ডানা কাটার দৃশ্য ।
শিল্পীর বক্তব্য: বালুচরীর এই ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তন্তুজের ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞতাস্বরূপ স্মরণ করেছেন শিল্পী অমিতাভ পাল । তাঁর কথায়, "তন্তুজ এভাবে পাশে না দাঁড়ালে কখনওই এই কাজ সম্ভব হতো না । একটা সময় ছিল এই নবাবী শাড়ি তৈরিতে মনোবল ভেঙে পড়েছিল বর্তমান প্রজন্মের ৷ বাধ্য হয়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছিলেন কিছু শিল্পী । যাঁরা এই কাজ থেকে সরে বিকল্প অন্য পেশায় গিয়েছিলেন, এখন তারাই ফের এই কাজে ফিরছেন । এমনকি দক্ষ শিল্পীর উদ্দেশ্যে বিষ্ণুপুর কেজি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডিজাইন সেন্টার খোলা হয়েছে ।"