বসিরহাট, 29 ফেব্রুয়ারি: ইডি হামলায় মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল বসিরহাট মহকুমা আদালত ৷ বুধবার রাতে উত্তর 24 পরগনার মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার হন শেখ শাহজাহান ৷ আজ তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক 10 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷
কড়া নিরাপত্তায় সকাল 10টা 50 মিনিট নাগাদ বসিরহাট মহকুমা আদালতের লকআপ থেকে আদালত কক্ষে নিয়ে আসা হয় শেখ শাহজাহানকে ৷ আদালত কক্ষে ঢোকার সময় হাত নেড়ে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেন ধৃত তৃণমূলের এই 'বাহুবলী' নেতা ৷ মেরেকেটে 10 থেকে 15 সেকেন্ডের মতো এজলাসের ভিতরে ছিলেন সন্দেশখালি কাণ্ডের 'মাস্টারমাইন্ড' শেখ শাহজাহান ৷ পরে আবারও সেখান থেকে তিনি কোর্ট লকআপে ফিরে যান ৷ এদিন সাদা রঙের ধবধবে পোশাকেই আদালতের লকআপ থেকে বেরতে দেখা যায় শেখ শাহজাহানকে ৷ তবে আদালত চত্বরে তাঁর হাঁটাচলা দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেও কীভাবে এত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন শেখ শাহজাহান ? তাহলে কি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথাই ঠিক ? শেখ শাহজাহানকে পাঁচতারা হোটেলের সুযোগ-সুবিধে দেওয়া হবে পুলিশি হেফাজতে ?
সূত্রের খবর, 10টা 50 মিনিট থেকে বেলা 11টা পর্যন্ত মাত্র 10 মিনিটেই শেখ শাহজাহান মামলায় সওয়াল-জবাব পর্ব শেষ হয়ে যায় ৷ প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, হাই প্রোফাইল এই তৃণমূল নেতার নিরাপত্তার স্বার্থেই এজলাসে তোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই শুনানি পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ পুলিশ 14 দিনের হেফাজত চাইলেও 10 দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক ৷
এদিকে তাঁর গ্রেফতারির পরই সন্দেশখালিজুড়ে বেড়েছে পুলিশের নিরাপত্তা ৷ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে ৷ এই আশঙ্কাতেই পুলিশের তরফে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ শুধু সন্দেশখালি নয়, নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে বসিরহাট মহকুমা আদালত চত্বর ৷ আদালতে ঢোকা-বেরনোর প্রায় সব প্রবেশদ্বারই এই মুহূর্তে ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে ৷ মোতায়েন রয়েছে র্যাফ,কমব্যাট ফোর্স সহ রণসজ্জায় সজ্জিত পুলিশের বাহিনী ৷
গত 5 জানুয়ারি থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন ৷ তাঁকে গ্রেফতার করা নিয়ে বিরোধীদের চাপের মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এদিকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, আদালতের স্থগিতাদেশের জন্যই শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না ৷
এখানে ইডির ভূমিকা প্রসঙ্গে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন, "সংবাদমাধ্যমে, চ্যানেলে বলা হয়েছে, পুলিশ ইচ্ছাকৃত শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না ৷ আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই এটা ভুল, অপপ্রচার ৷ আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল ৷ দিনদুয়েক আগে মাননীয় উচ্চআদালতের তরফে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয় যে, গ্রেফতারিতে কোনও বিধিনিষেধ নেই ৷ তারপর আমরা জোরকদমে তল্লাশি শুরু করি ৷ গতরাতে মিনাখাঁ থানার বামনপুকুর থেকে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করি ৷" এরপর তিনি প্রশ্ন করেন, "আমাদের উপর আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল ঠিকই, ইডির উপর ছিল না ৷ তারা কেন শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে উদ্যোগী হননি ? সেই প্রশ্নটাও প্রাসঙ্গিক ৷"
আরও পড়ুন: