কাটোয়া, 18 জানুয়ারি: নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সরকারি স্কুলগুলিতে 240 টাকার বেশি ফি নেওয়ার অভিযোগ । শুধু স্কুল স্তরেই নয়, কলেজেও একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা ৷ এই অভিযোগ তুলে শুক্রবার ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির ডাকে কাটোয়া মহকুমা শাসকের দফতর অভিযান করা হয় ।
এসএফআইয়ের অভিযোগ, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন পড়ুয়ার কাছ থেকে ফি বাবদ সর্বোচ্চ 240 টাকা নেওয়া যেতে পারে । কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেক স্কুলেই রসিদ ছাড়াই এই ফি নেওয়া হচ্ছে । কম্পোজিট গ্রান্টের বরাদ্দ অর্থ এক বছরের বেশি সময় ধরে বকেয়া পড়ে আছে । এর ফলে দেখা যাচ্ছে, স্কুলের সঠিক পরিকাঠামো নেই । ছাত্রছাত্রীর অনুপাতে পর্যাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকার অভাব থাকায় অনেক স্কুল উঠে যেতে বসেছে ।
এছাড়া আরও অভিযোগ, কাটোয়া কলেজ, কাঁদরা রাধাকান্ত কুন্ডু মহাবিদ্যালয়, চন্দ্রপুর-সহ বেশ কিছু কলেজে মেয়াদ উত্তীর্ণ ছাত্র সংসদ অবৈধভাবে কলেজ পরিচালনা করছে । তারা কলেজে যে সমস্ত অনুষ্ঠান করছে, তার জন্য কর্তৃপক্ষ অর্থ বরাদ্দ করছে । বেশিরভাগ স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসে স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন নেই । বিষয়গুলি জানিয়ে ডিআই অফিস ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ ।
2011 সালে স্কুলশিক্ষা দফতর হাইস্কুলের ক্ষেত্রে যে নির্দেশিকা জারি করে সেখানে বলা হয়েছে, স্কুলের উন্নয়নের জন্য একজন পড়ুয়ার কাছ থেকে সর্বোচ্চ 240 টাকা নেওয়া যেতে পারে । এর বেশি টাকা নেওয়া যাবে না । যদি কোনও পড়ুয়া আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হয়, তার পক্ষে যদি ওই 240 টাকা দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে সেই ফি মকুব করার কথাও সরকারি নির্দেশিকায় বলা আছে ।
অভিযোগ, এই সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেশিরভাগ সরকারি স্কুলই অনেক টাকা বেশি নেয় । স্কুলগুলির পক্ষ থেকে টাকা নেওয়ার পিছনে যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়, সরস্বতী পুজো, স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস ছাড়াও একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয় ৷ আলো ও মিউজিকের ব্যবস্থা করা হয় । ছাত্রছাত্রীদের টিফিন দেওয়া হয় ফলে বাড়তি কিছু টাকা নেওয়া হচ্ছে ।
ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের পূর্ব বর্ধমান জেলার সম্পাদক উষসী রায়চৌধুরী বলেন, "সরকারি স্কুলগুলিতে নিয়ম না মেনে ইচ্ছামতো ফি নেওয়া, স্কুলের বর্ধিত ফি ফেরত দেওয়া, বকেয়া কম্পোজিট গ্রান্ট প্রদান, স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, ইত্যাদি বিষয়কে সামনে রেখে আমরা মহকুমা শাসকের কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়েছি । এরপর কালনা মহকুমা শাসকের কাছে ও পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসকের কাছেও অভিযান চালানো হবে ।"