হাওড়া, 25 জানুয়ারি: কলকাতা ও হাওড়া-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা সামনে আসছে ৷ এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ । তাঁর কথায়, "যতদিন না রাজ্যের মানুষ নবান্নকে হেলাতে পারবে, ততদিন এভাবেই বাড়ি হেলতে থাকবে । আগে পিসার হেলানো মিনার মানুষ দেখতে যেত । এখন রাজ্যের পাড়ায় পাড়ায় পিসির হেলানো মিনার দেখতে আসবে ।"
হাওড়াতে রাজ্য গ্রুপ ডি কর্মীরা ধরনা দিচ্ছেন ৷ সেই ধরনা মঞ্চে শুক্রবার উপস্থিত হয়েছিলেন সজল ঘোষ ৷ সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন এই বিজেপি নেতা । পাশাপাশি তাঁর নিশানায় ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ সজল ঘোষ বলেন, "খুব দুর্ভাগ্যজনক ৷ কলকাতার মেয়র বলছেন, সব হেলে যাওয়া বাড়ি কী আমরা বাঁশ দিয়ে সোজা করব ! না আপনাকে বাঁশ দিয়ে সোজা করতে হবে না । কিন্তু হেলে যাওয়া বাড়ির মানুষগুলোকে আর নতুন করে বাঁশ দেবেন না । এটাই আমি আবেদন করছি ।"
বিজেপি নেতা মজার ছলে বলেন, "একটা নতুন পুর আইন আনা হোক ৷ 2010 সালের পরে নির্মিত সমস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের 24 ঘণ্টা হেলমেট আবশ্যিক ৷ মাথার ওপর ছাদ থাক বা না থাক ৷ মাথাটাকে তো রাখতে হবে ৷" একইসঙ্গে তাঁঁর সংযোজন, "যে বাড়িগুলো হেলে পড়েছে সেগুলি বিপজ্জনক নয়, এটা প্রমাণ করুক মেয়র ৷ তাই তিনি নিজে ওই হেলে পড়া বাড়িগুলিতে গিয়ে সাতদিন করে ঘুরে ঘুরে থেকে আসুক ৷"
সজল ঘোষ তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে আরও বলেন, "ভাবতে লজ্জা লাগে কলকাতা-সহ সারা রাজ্যে একের এক বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা ঘটছে ৷ কিছুদিন আগে হাওড়া ছিল, বুধবার কলকাতার 58 নম্বর ওয়ার্ড ছিল, শুক্রবার কলকাতার 59 নম্বর ওয়ার্ড ও বিধাননগরের ওয়ার্ডে একই ঘটনা হয়েছে । আশা করি, আগামিকালও কোথাও একটা ঘটবে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতিদিন বাড়ি হেলে যাচ্ছে, পড়ে যাচ্ছে, ভেঙে যাচ্ছে, আর সেই বাড়ির মানুষদের বাস্তুচ্যুত হতে হচ্ছে । আমি প্রশ্ন করতে চাই, একটা মানুষ 40-45 বছর বয়সে একটা বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনে, আর তার মাসিক কিস্তি তার পেনশনের টাকা থেকেও টেনে যেতে হয় । আর যারা সেই মানুষটার মাথার ছাদ কেড়ে নেয়, আজ তারা বলছে সব হেলে যাওয়া জিনিস নাকি বিপজ্জনক নয় ।"
তাঁর বক্তব্য, "একজন পুর প্রতিনিধি দেড় দু'মাস ধরে নিখোঁজ ৷ তাকে পুলিশ খুঁজে বের করতে অক্ষম যে সে জীবিত না মৃত । এটা খুবই লজ্জার । একটা বাড়ি তৈরি করতে যাওয়ার আগে প্রমোটারকে পুর প্রতিনিধির হাতে যদি 50 লক্ষ টাকা আগেই তুলে দিতে হয়, তাহলে আমরা যেমন স্কুলের হস্তশিল্প শিক্ষার কাজে জুতোর বাক্স দিয়ে বাড়ি বানাতাম, সেই প্রমোটারও পচা মাল দিয়েই বাড়ি বানাবে, আর কী দিয়ে বাড়ি বানাবে !"