কলকাতা, 15 অগস্ট: কোজাগরী ! শব্দটি ভেঙে বললে বলা হয় 'কে জাগে রে'। লক্ষ্মীবারে মধ্যরাতে এক অন্য স্বাধীনতার সাক্ষী রইল কলকাতা । 78তম স্বাধীনতা দিবসে কলকাতা-সহ পুরো রাজ্য জাগল নতুন ভোরের আশায় । যা প্রতিবাদের । যা শৃঙ্খলা ভেঙে বেরিয়ে আসার ৷ আরজি কর হাসপাতালের ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে নৃশংস খুনের প্রতিবাদে মধ্যরাতে রাস্তায় নামেন মহিলারা । রাত দখলের ডাক এক গণ-সুনামিতে পরিণত হয় । শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন পুরুষরাও তাঁদের সঙ্গে পা মেলালেন ।
স্বতঃস্ফূর্ত এই প্রতিবাদের মিছিলে কোনও রাজনৈতিক রং ছিল না । ছিল না কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা । স্বাধীনতার মধ্যরাতের এই বিক্ষোভে কারও কারও হাতে ছিল জাতীয় পতাকা । কেউ এনেছিলেন প্রতিবাদে গর্জে ওঠা ব্যানার ফেস্টুন । হাতে লেখা পোস্টার । বিটি রোড থেকে ডানলপ মোড় ছিল প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু ৷ ডানলপ এবং আশপাশের অঞ্চলের পাড়া-মহল্লা থেকে রাত যত গড়িয়েছে ততই এগিয়েছে মিছিল । যার পুরোভাগে ছিলেন নারীরা । যাঁদের উদ্দেশ্য ছিল চোয়াল চাপা শপথে রাত দখল । তাঁদের দৃপ্ত পদচারণায় বিটি রোড অবরুদ্ধ । সকলের মুখে একটাই স্লোগান, 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস । আমরা বিচার চাই ।'
প্রতিবাদী কণ্ঠে ধীক্কারের ভাষা, হাতে প্রতিবাদের অঙ্গ হিসেবে জ্বলন্ত মোমবাতি । যে আগুনের পরশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে গড়ে তোলার শপথ । এই প্রতিবাদের মিছিলে শঙ্খধ্বনি যেন রণহুঙ্কার, শৃঙ্খলিত নারীকে মুক্ত করার আহ্বান । এই মিছিল কোনও রাজনৈতিক রঙে দুষ্ট নয় বরং হাতে হাত মিলিয়ে গর্জে ওঠার । যার সাক্ষী রইল কলকাতা-সহ এই বাংলা ৷ আরজি কর-কাণ্ডে নৃশংস ভাবে খুন হওয়া চিকিৎসক কবে বিচার পাবেন, তা সময় বলবে । কিন্তু তাঁর প্রতি হওয়া অত্যাচারের প্রতিবাদে 'রাতের দখল' যে ভাবে মেয়েরা নিল, তা শাসকের প্রতি সমাজের কঠোর বার্তা । যা এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা সুস্থ সমাজের নেই ।