বারাসত, 14 অগস্ট: স্ত্রীর পেটে লাথি মারার অভিযোগ রয়েছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ৷ আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠেছে ৷ সেই ঘটনায় তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে পড়ুয়া চিকিৎসক ছাত্রদের একাংশ ৷ খোদ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিও তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ৷ তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রীর উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুললেন প্রতিবেশীরা ৷
বারাসতে বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, 2008-09 সালে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ ৷ সেসময় বারাসতের রথতলা মোড় সংলগ্ন হৃদয়পুরের মল্লিকবাগানে একটি বাড়ি কিনে সেখানে সপরিবার থাকতেন তিনি ৷ বাড়ির নীচেই ছিল তাঁর চেম্বার ৷ চেম্বারের বাইরে নেমপ্লেটে লেখা ছিল ডক্টর এস ঘোষ ৷ এই নামেই তখন সন্দীপ ঘোষকে চিনতেন প্রতিবেশীরা ৷
বছর ছয়েক সেই বাড়িতেই ছিলেন তিনি ৷ দশ বছর আগে অবশ্য বারাসতের বাড়িটি বিক্রি করে সেখান থেকে চলে যান সন্দীপ ৷ বারাসতের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও তাঁর নেতিবাচক মনোভাব, দুর্ব্যবহার, নিজের পরিবারের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার, মারধরের কুকীর্তি এখন ঘুরেফিরে আসছে প্রতিবেশীদের মুখে মুখে ৷ তাঁদের কাছে সন্দীপ ঘোষ একজন চিকিৎসক হিসেবে যতটা না পরিচিত ছিলেন, তার থেকে বেশি প্রতিবেশীরা তাঁকে মনে রেখেছেন সদ্য সন্তানের প্রসব হওয়া স্ত্রীর পেটে লাথি মারার ঘটনায় ৷
কী বলছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষের প্রতিবেশীরা ?
এই ঘটনায় প্রতিবেশী মিহির চক্রবর্তী বলেন, "সেই সময় আমাদের জোনাল পার্টি ক্ষমতায় ৷ পার্টির কাছে খবর আসে, একজন বিবাহিত মহিলা তাঁর 14 দিনের শিশু সন্তানকে নিয়ে বারাসতের বাড়িতে ফেরেন ৷ তখন তাঁর স্ত্রী'র পেটে লাথি মেরেছিলেন ডাঃ এস ঘোষ ৷ এরপর স্ত্রীকে ঘরে আটকে রাখা হয় ৷ সেই ঘটনার কথা জানতে পেরেই আমরা সেখানে গিয়েছিলাম ৷ প্রথমে তো আমাদের ঘরে ঢুকতেই দিচ্ছিলেন না সন্দীপ ও তাঁর মা ৷ পরে আমরা একপ্রকার জোর করেই ঘরে ঢুকে ও'র স্ত্রীকে উদ্ধার করি ৷ ওনার স্ত্রী কোনও কাপড় নিতে পারেননি ৷ একটি নাইটি পরে কোনওরকমে অটোয় করে বাপের বাড়ি যান ৷ 14 দিনের শিশুর গায়েও কোনও কাপড় ছিল না ৷ কোনও রকমে একটা ন্যাকড়া কাপড় জোগাড় করে দিই ৷ সেই অবস্থায় টোটো বা অটোতে চলে গেলেন তাঁর স্ত্রী ৷ তিনি অর্থোপেডিক সার্জন ৷ ভালো লোক ছিলেন না ৷"
একই সুর শোনা গিয়েছে দুলাল চন্দ্র দাস নামে আরেক প্রতিবেশীর গলাতেও ৷ তাঁর কথায়, "চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ মোটেই ভালো মানুষ ছিলেন না ৷ তাঁর স্বভাবও ঠিক ছিল না ৷ তাঁর মায়ের ব্যবহার তো আরও খারাপ ছিল ৷ চেম্বারে আসা রোগীদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করতেন ৷"
বারাসতে থাকাকালীন চিকিৎসক হিসেবে কেমন ছিলেন সন্দীপ ঘোষ ?
এর উত্তর খুঁজতে গিয়েই প্রতিবেশীদের মুখেই শোনা গেল অর্থোপেডিক চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষের কুকীর্তির কথা ৷ চেম্বারে আসা রোগীদের সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন না বলেই অভিযোগ ৷ রোগী পরিষেবার জন্য নির্দিষ্ট ফিজ ছিলই ৷ তার সঙ্গে শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট দেখানোর সময়ও তাঁকে ফের ফিজ দিতে হত বলে অভিযোগ করছেন প্রতিবেশীদের একাংশ ৷