দার্জিলিং, 5 নভেম্বর: নতুন বছরের প্রথম দিকেই রেড পান্ডার শুমারি হতে চলেছে। রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, 2025 সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে রেড পান্ডা শুমারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দার্জিলিংয়ের সিঙ্গালিলা জাতীয় অভয়ারণ্য ও কালিম্পং জেলার ন্যাওড়াভ্যালি অভয়ারণ্যে মূলত বাস রেড পান্ডার। ওই দুই অভয়ারণ্যে বন বিভাগ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় শুমারি করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
রেড পান্ডা শুমারি-
পাহাড়ের ওই দুই অভয়ারণ্যের প্রায় 700 ফুট থেকে শুরু করে 11 হাজার ফুট উচ্চতা পর্যন্ত ঘন জঙ্গলে ট্রেকিং করে শুমারি করা হবে। গত শুমারির তুলনায় এবার রেড পান্ডার সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আশা করছেন বন দফতরের আধিকারিকরা। কারণ দার্জিলিংয়ের তোপকে দাঁড়ায় রেড পান্ডা প্রজনন কেন্দ্র ও দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় চলতি বছরে বেশ কয়েকটি রেড পান্ডার জন্ম হয়েছে।
শুমারি কীভাবে হবে-
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই শুমারি চলবে বলে জানা গিয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের 11 হাজার ফুটের বেশি উচ্চতায় থাকা রাচেলাডান্ডা ও হাতিডাণ্ডায় রেডপান্ডার শুমারি করা হবে। গভীর জঙ্গলে মোবাইল টাওয়ার না-থাকার কারণে ওয়াকিটকি ব্যবহার করবেন বন দফতরের কর্মী ।
সিকিম ও ভুটানে রেড পান্ডার শুমারি-
এছাড়াও জানা গিয়েছে, এরাজ্যের দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পাশাপাশি সিকিমের কিয়ংসেল, আলপেলাইন সিম্বা, রডোডেনড্রন জঙ্গলে রেড পান্ডার বসবাস রয়েছে। এছাড়া ভুটানের একটি অংশেও বসবাসের ইতিহাস রয়েছে রেড পান্ডার। সিকিমের জঙ্গলে রেড পান্ডার সংখ্যা জানতে ইতিমধ্যে সিকিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে রাজ্য বন দফতর।
বন দফতরের বক্তব্য-
- এবিষয়ে উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি বলেন, "ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে রেড পান্ডা শুমারির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করি অনুমোদন এসে যাবে। সেইমতো প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। ডিরেক্ট সাইটিং বা সরাসরি দেখে ও রেড পান্ডার মল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সেই নমুনা ডিএনএ টেস্টের জন্য হায়দরাবাদের গবেষণাগারে পাঠানো হবে। তারপরই শুমারির রিপোর্ট তৈরি হবে।"
- সলিটরি নেচার অ্যান্ড অ্যানিমেল প্রোটেকশনের সম্পাদক কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, "নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাস সময়টি ওই অভয়ারণ্যে শুমারির জন্য আদর্শ। এই বছর গতবারের তুলনায় রেড পান্ডার সংখ্যা বাড়বে। এই বছর কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি রেড পান্ডার জন্ম হয়েছে।"
জানা গিয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন নেচার (আইইউসিএন) রেড পান্ডাকে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। 2019 সালের শুমারি অনুযায়ি সিঙ্গালিলা জাতীয় অভয়ারণ্যে 38টি ও ন্যাওড়াভ্যালি অভয়ারণ্যে 32টির মতো রেড পান্ডা ছিল। 2023-2024 সালেই দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিক্যাল পার্ক বা দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় ছয়টি রেড পান্ডা শাবকের জন্ম হয়েছে। গত তিন বছরে ছয়টি রেড পান্ডা দম্পতিকে সিঙ্গালিলা অভয়ারণ্যে রেডিও কলার পরানো হয়েছে।