এর্নাকুলাম(কেরল), 31 ডিসেম্বর: একমাসের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হচ্ছে ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ৷ ইয়েমেনের নাগরিককে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি ৷ সোমবার সে দেশের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি এই মালয়ালী নার্সের মৃত্যুদণ্ডে অনুমোদন দিয়েছেন । এরপরেই মনে করা হচ্ছে, এক মাসের মধ্যে নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে ।
নিমিশা প্রিয়া আদতে কেরলের পালাক্কাডের কোলানগোডের বাসিন্দা ৷ তালাল আবদু মেহেদি নামে একজন ইয়েমেনি নাগরিককে হত্যা করেছেন তিনি ৷ 2017 সালের ওই হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে এই ভারতীয় নার্সকে ।
নার্স হিসেবে কাজ করতে 2012 সালে ইয়েমেনে আসেন নিমিশা প্রিয়া । তার ঠিক তিন বছর পর 2015 সাল থেকে তালাল আবদু মেহেদি সঙ্গে সেখানে একটি ক্লিনিক চালাতে শুরু করেন তিনি । কিন্তু অভিযোগ ওঠে, নিমিশাকে খুব ভালো করে চিনতেন না তালাল ৷ তা সত্ত্বেও তিনি ক্লিনিকের শেয়ারহোল্ডার হিসাবে নিমিশার মাসিক আয়ের অর্ধেক নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন । পরে তালাল নিজেকে নিমিশার স্বামী বলেও পরিচিতি দেয় বলে জানা গিয়েছে ।
পরবর্তীকালে, এটিই দুজনের মধ্যে ঝামেলার কারণ হয়ে দাঁড়ায় । এমনকি এও অভিযোগ ওঠে, তালাল নিমিশার উপর শারীরিক অত্যাচার শুরু করেন ৷ তিনি তাঁকে বাধ্য করেন তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে । এর পরেই 2017 সালের জুলাই মাসে নিমিশা তালালকে ড্রাগ ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করেন । যদিও নিমিশার যুক্তি হল, তালালকে হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল না তাঁর ৷ নিমিশার উদ্দেশ্য ছিল, তালালের কাছ থেকে নিজের পাসপোর্ট উদ্ধার করা । যেটি তালাল নিজের কাছে নিয়ে রেখেছিল ৷
তবে আদালতে নিমিশা প্রিয়ার কোনও যুক্তি কাজে আসেনি ৷ এমনকি নিমিশার মা প্রেমাকুমারী ইয়েমেনে পৌঁছে গিয়েছিলেন ৷ তিনি তালালের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে নিমিশার মুক্তি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন । কিন্তু তেমনটা হয়নি ৷ ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় ট্রায়াল কোর্টের রায় বহাল রাখে এবং নিমিশার সাজা কমানোর আবেদনও খারিজ করে দেয় ।
নিমিশা প্রিয়ার মামলা দেখার জন্য ভারতীয় দূতাবাসের তরফে আইনজীবী আবদুল্লাহ আমীরকে নিযুক্ত করা হয় ৷ তিনি গত সেপ্টেম্বরে মাসে মিনশার মুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরুর জন্য অবিলম্বে 16.60 লক্ষ টাকা প্রাক-আলোচনা ফি-এর দ্বিতীয় কিস্তি মেটানোর দাবি জানান । তবে মুক্তির প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায় এবং আইনজীবীকে জানানো হয়, এই অর্থ স্থানান্তর করার পরেই আলোচনা শুরু হবে ।
প্রথম কিস্তির টাকা 19 হাজার 871 মার্কিন ডলার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে আইনজীবীর কাছে 4 জুলাই হস্তান্তর করা হয়েছিল । আইনজীবী প্রাথমিকভাবে বলেছিলেন, আলোচনা শুরু করতে মোট 40000 হাজার মার্কিন ডলার প্রয়োজন এবং এটি দুটি কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে হবে ।
