হবিবপুর, 20 জানুয়ারি: এক বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে শাড়ির উপর পটচিত্রে ফুটিয়ে তুলেছেন রামায়ণের কাহিনী ৷ এবার সেই শাড়ি অযোধ্যার রাম মন্দিরে সীতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে রওনা দিলেন নদিয়ার রানাঘাটের হবিবপুরের তাঁত শিল্পী পিকুল রায় ৷ শাড়িটি বিক্রির জন্য প্রচুর টাকা প্রস্তাব পেয়েছিলেন পিকুল ৷ কিন্তু, তিনি শাড়িটি বিক্রি করেননি ৷
পিকুল রায় দীর্ঘদিন ধরে তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ৷ তার নিজের একটি শাড়ির দোকান রয়েছে ৷ এক বছর আগে থেকেই শুরু করেছিলেন এই শাড়িটি তৈরি করা ৷ কোনরকম প্রিন্ট বা ছাপা নয়, শাড়ির উপর নিজের কর্মদক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন রামায়ণের কাহিনী ৷ যেখানে রয়েছে রাম এবং সীতার পাশাপাশি, তাঁদের বনবাসের কাহিনী ৷ উল্লেখ্য, আর দু’দিন পরেই অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা হতে চলেছে ৷ ইতিমধ্যে, দেশজুড়ে রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে ৷
পিকুল রায় এবং তাঁর দাদা অনন্ত রায় নদিয়া থেকে অযোধ্যার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ৷ অযোধ্যায় পৌঁছে তাঁরা সেই শাড়িটি মন্দিরে অধিষ্ঠিত দেবী সীতার জন্য উৎসর্গ করতে চান ৷ পিকুল রায় বলেন, "প্রায় এক বছর আগে আমার এই চিন্তাভাবনা আসে ৷ যদি রামায়ণের কাহিনী শাড়ির উপর ফুটিয়ে তোলা যায় ৷ সেই উদ্দেশ্য নিয়েই আমি এক বছর আগে থেকে এই শাড়ি তৈরি করতে শুরু করি ৷ শাড়িটি তৈরি হওয়ার পর অনেকে শাড়িটি অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনতে চেয়েছিল ৷ কিন্তু, আমি এই শাড়িটা অযোধ্যার রাম মন্দিরে দেবী সীতার নামে দান করতে চাই ৷"
পিকুল রায়ের দাদা অনন্ত রায় বলেন, "ভাই বিষয়টি আমাকে জানানোর পর অত্যন্ত খুশি হই ৷ সে নিজের হাতে রামায়ণের ইতিহাস বর্ণনা করেছে ৷ শাড়িটি রাম মন্দিরে দান করবে ৷ সেই কারণে আমিও ভাইয়ের সঙ্গে রওনা দিচ্ছি ৷ পিকুল রায়ের এই উদ্যোগে খুশি তাঁর প্রতিবেশীরাও ৷ তারা পিকুলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ৷ তিনি যাতে সফলভাবে অযোধ্যার রাম মন্দিরে পৌঁছে শাড়িটি দান করতে পারেন, সেই প্রার্থনাও করছেন ৷
শুক্রবার রাতে হবিবপুর রেল স্টেশন থেকে পিকুল রায় এবং তাঁর দাদা রওনা দিয়েছেন ৷ তবে, তাঁদের কাছে ট্রেনের টিকিট নেই ৷ তাই সমস্যা হবে তা জানেন ৷ কিন্তু, রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে হলেও, অযোধ্যার রাম মন্দিরে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন বলে জানান তাঁরা ৷ পাশাপাশি, তাঁদের যাতে সাহায্য করা হয় অযোধ্যা পৌঁছাতে সেই অনুরোধও করেছেন পিকুল রায় ৷
তবে, শুধু এরাজ্যের পিকুল নন ৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন একাধিক ভক্ত রাম মন্দির এবং সেখানে অধিষ্ঠিত দেবতার জন্য নানান জিনিস নিয়ে অযোধ্যায় পৌঁছাচ্ছেন ৷ তেমনি ছবি দেখা গিয়েছে বারাণসীতে ৷ এক ব্যক্তি শাড়িতে রামায়ণের কাহিনী ফুটিয়ে তুলেছেন ৷ সেটি নিয়ে অযোধ্যায় পৌঁছেছেন ওই ব্যক্তি ৷ অন্যদিকে, রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে ঝাঁ চকচকে করে তোলা হয়েছে অযোধ্যাকে ৷ শহরের রাস্তাঘাট জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে ৷ ফুল দিয়ে মন্দিরের আশেপাশের এলাকা সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ৷ অযোধ্যার এক অনন্য রূপ ফুটে উঠেছে রাম মন্দিরের উদ্বোধন এবং রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ৷
আরও পড়ুন: