কলকাতা, 3 জুলাই: ফের বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবি উঠল । এবার বেসরকারি বাস মালিকের একাংশ বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে চিঠি দিলেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে । আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে জ্বালানির দাম । বেসরকারি বাস মালিকদের দাবি, এই বর্ধিত জ্বালানির খরচ মোকাবিলা ও তার সঙ্গে অন্য খরচ বহণ করে বাস চালানো একরকম অসম্ভব হয়ে পড়ছে ৷
জানা গিয়েছে, আগেও বহুবার বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে পরিবহণ দফতরে । তবে তা সত্ত্বেও কোনওমতেই বাস ভাড়া বৃদ্ধি হবে না, এই সিদ্ধান্তেই অনড় থেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন, কোনওমতেই সাধারণ মানুষের উপর বাস ভাড়া বৃদ্ধি করে চাপ সৃষ্টি করা যাবে না । তবে বাস মালিকদের মতে, যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জ্বালানির দাম তাতে আগের ভাড়ায় আর বাস চালানো সম্ভব হচ্ছে না ।
অন্যদিকে, গ্রিন ট্রাইবুনালের রায় অনুযায়ী, শহরের মধ্যে 15 বছরের পুরনো বাস চালানো যাবে না। তাই ক্রমশই কমছে বাসের সংখ্যা। রাজ্যের গণপরিবহণের প্রায় 80 শতাংশই বেসরকারি বাসের উপরই নির্ভরশীল। তাই এভাবে রাস্তায় বাস কমতে থাকলে পক্ষান্তরে তা যে নিত্য যাত্রীদেরই সংকটে ফেলবে, সেই কথাই জানিয়েছেন বেসরকারি বাস মালিকরা। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের তরফে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনকে চিঠি দিয়ে জ্বালানির বর্ধিত মূল এবং অন্য খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই বাস ভাড়া বৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়েছে ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, "একদিকে রাস্তায় বাস কমতে থাকলে যাত্রীদেরই নাকাল হতে হবে ৷ অন্যদিকে, তেলের দাম যেমন বাড়ছে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাসের যন্ত্রাংশের দামও । তাই আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে । এখন একটি নতুন বাস কিনতে বিপুল খরচ ৷ সেই অর্থ দিয়ে নতুন বাস কিনে চালাবার সাহস বা ভরসা পাচ্ছেন না অনেক মালিক। তাই আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি যে, আমাদের পরিস্থিতি বুঝে খরচের কথা মাথায় রেখেই যেন ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় ।"
এদিকে কোভিডের পর থেকে রাজ্যে বহু বাস রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছে । আবার বহু রুটে যাত্রী সংখ্যাও কমেছে। এই একই সংগঠনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বেসরকারি বাস মালিক জানান, জ্বালানির খরচ এবং বাস মেরামত-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের নবীকরণ করি ৷ এতে এক বছরে বাস পিছু খরচ পড়ে যাচ্ছে প্রায় 17 লক্ষ টাকার কাছাকাছি । এর সঙ্গে দোসর হয়েছে পুলিশি জুলুম এবং জরিমানা । কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা যেমন আগে ছিল 100 টাকা, সেটা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় 500 থেকে 5000 টাকা পর্যন্ত । একটি পুরনো বাস বাতিল করে তার জায়গায় নতুন বাস পথে নামতে খরচ পড়ে যায় প্রায় 30 থেকে 35 লক্ষ টাকা । প্রসঙ্গত, 2018 সালে শেষবার বাসের ভাড়া 1 টাকা বাড়ানো হয়েছিল রাজ্যে ।