ETV Bharat / state

রাজ্যে ভালো ফলেও অস্বস্তি ! গৌড়বঙ্গের তিন জেলার 9টি পৌরসভায় ভরাডুবি ঘাসফুলের - LOK SABHA ELECTION RESULTS IN MALDA

Lok Sabha Result of TMC in Malda: রাজ্যজুড়ে সবুজ ঝড় উঠলেও মালদা জেলা বলছে তৃণমূলের ফলাফল খারাপ ৷ গ্রামের লোকেরা ঘাসফুলকে আশীর্বাদ করেছে ৷ তবে শহরের ভোটের বেশিরভাগই গিয়েছে অন্যদিকে ৷ এই নিয়ে কী বলছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ?

Malda TMC
মালদায় 9টি পৌরসভায় খারাপ ফল তৃণমূলের (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 6, 2024, 4:05 PM IST

মালদা, 6 জুন: এবারের লোকসভা ভোটে এই বাংলায় বিজেপি মূলত হেরেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের কাছে ৷ সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ৷ কিন্তু শহরাঞ্চল ? শহরের মহিলারাও এই প্রকল্পের সুবিধে পান ৷ তবে গ্রাম বাংলার আশীর্বাদ পেলেও এই নির্বাচনে শহুরে মানুষদের ভোট পায়নি তৃণমূল ৷ অন্তত গৌড়বঙ্গের তিন জেলার ন'টি পৌরসভার ফলাফলে সেটাই দেখা যাচ্ছে ৷

মালদা জেলায় দু'টি পৌরসভা- ইংরেজবাজার ও পুরনো মালদা ৷ দেখা যাচ্ছে, ইংরেজবাজারের 29টি ওয়ার্ডের একটিতেও জয় পায়নি ঘাসফুল ৷ শুধুমাত্র 15 নম্বর ছাড়া বাকি ওয়ার্ডগুলিতে অনেকটা এগিয়ে বিজেপি ৷ এই পৌর এলাকায় বিজেপি পেয়েছে 79 হাজার 84টি ভোট, কংগ্রেস পেয়েছে 17 হাজার 471 টি ভোট এবং তৃণমূলের প্রাপ্তি 17 হাজার 570টি ভোট ৷

পুরনো মালদা পৌরসভার 20টি ওয়ার্ডের 18টিতেই প্রথম স্থানে রয়েছে বিজেপি ৷ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত 6 ও 10 নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে কংগ্রেস ৷ এই পৌর এলাকায় গেরুয়া শিবির 27 হাজার 517 ভোটে লিড দিয়েছে ৷ জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বকসির কথায়, "রাজ্য সরকারের প্রতিটি প্রকল্পের সুবিধে গ্রামের সঙ্গে শহরও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা রেখেছে গোটা রাজ্যের মানুষ ৷ তবু কেন আমরা জেলার দুই শহরে ভোট পাইনি, তা খতিয়ে দেখা হবে ৷ এখনও আমরা ভোট পরবর্তী বিশ্লেষণ করতে পারিনি ৷"

মালদা উত্তরে গেরুয়া ঝড় ! জয়ের ধারা বজায় রাখলেন খগেন মুর্মু

একই হাল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও ৷ এই জেলায় তিনটি পৌরসভা রয়েছে ৷ বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর এবং বুনিয়াদপুর ৷ বালুরঘাট পৌরসভার 25টি ওয়ার্ডে বিজেপির লিড প্রায় 22 হাজার ভোট ৷ নিজেদের ওয়ার্ডে ধরাশায়ী হয়েছেন চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের শহর সভাপতি-সহ একাধিক নেতা-নেত্রী ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, 2019-এর নির্বাচনের তুলনায় এবার এই পৌর এলাকায় বিজেপির লিড বেড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার ভোট ৷

গঙ্গারামপুর পৌর এলাকাতেও ছবিটা এক রকম ৷ এই পৌরসভায় বাড়ি খোদ তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের ৷ নিজের ওয়ার্ডেই বিজেপির থেকে পিছিয়ে রয়েছেন তিনি ৷ 18 নং ওয়ার্ডের গঙ্গারামপুর পৌরসভায় বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার 12 হাজার 840 ভোটে লিড পেয়েছেন ৷ বুনিয়াদপুর পৌরসভার 14টি ওয়ার্ডেও বেশ কয়েকহাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ৷ এই ফলে হতবাক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল ৷ তাঁর বক্তব্য, "এই জেলার মানুষ সংস্কৃতিমনস্ক ৷ তবু আমরা কেন শহুরে ভোটারদের মন জয় করতে পারছি না, বোঝা যাচ্ছে না ৷ এই নিয়ে আমাদের পর্যালোচনা করতে হবে ৷ দ্রুত আমরা সেই পর্যালোচনায় বসব ৷"

দুই জেলার এই ছবির হেরফের নেই উত্তর দিনাজপুরেও ৷ এখানে মোট চারটি পৌরসভা ৷ ইসলামপুর, ডালখোলা, রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ ৷ তৃণমূল পরিচালিত ইসলামপুর পৌরসভার 17টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র তিনটিতে এগিয়ে ঘাসফুল ৷ সব মিলিয়ে এই পৌর এলাকায় 11 হাজারেরও বেশি ভোটে লিড পেয়েছে বিজেপি ৷ ডালখোলা পৌরসভার 17টি ওয়ার্ডের পাঁচটিতে ঘাসফুল লিড পেলেও একটি ওয়ার্ডে কংগ্রেস ও বাকিগুলিতে বিজেপি এগিয়ে ৷

একা কুম্ভ হয়ে বাংলায় কংগ্রসের মান বাঁচালেন ইশা খান

ডালখোলা পৌরসভায় কার্তিকচন্দ্র পাল লিড পেয়েছেন 5 হাজার 916 ভোটে ৷ খোদ নিজের শহরেই পিছিয়ে মমতার পছন্দের প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী ৷ রায়গঞ্জ পৌরসভার 27টি ওয়ার্ডে তাঁকে 21 হাজার 413 ভোটে পিছনে ফেলে দিয়েছেন কার্তিক ৷ আর কালিয়াগঞ্জ তো কার্তিকের নিজের শহর ৷ 17 নং ওয়ার্ডের এই পৌরসভায় 17 হাজার 453টি ভোটে লিড পেয়েছেন তিনি ৷ এই নিয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের প্রতিক্রিয়া, "এই ফলের পিছনে যে সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে, তা মানতে কোনও দ্বিধা নেই ৷ আমরা সব মিলিয়েই দ্রুত পর্যালোচনা বৈঠকে বসব ৷"

মালদা, 6 জুন: এবারের লোকসভা ভোটে এই বাংলায় বিজেপি মূলত হেরেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের কাছে ৷ সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ৷ কিন্তু শহরাঞ্চল ? শহরের মহিলারাও এই প্রকল্পের সুবিধে পান ৷ তবে গ্রাম বাংলার আশীর্বাদ পেলেও এই নির্বাচনে শহুরে মানুষদের ভোট পায়নি তৃণমূল ৷ অন্তত গৌড়বঙ্গের তিন জেলার ন'টি পৌরসভার ফলাফলে সেটাই দেখা যাচ্ছে ৷

মালদা জেলায় দু'টি পৌরসভা- ইংরেজবাজার ও পুরনো মালদা ৷ দেখা যাচ্ছে, ইংরেজবাজারের 29টি ওয়ার্ডের একটিতেও জয় পায়নি ঘাসফুল ৷ শুধুমাত্র 15 নম্বর ছাড়া বাকি ওয়ার্ডগুলিতে অনেকটা এগিয়ে বিজেপি ৷ এই পৌর এলাকায় বিজেপি পেয়েছে 79 হাজার 84টি ভোট, কংগ্রেস পেয়েছে 17 হাজার 471 টি ভোট এবং তৃণমূলের প্রাপ্তি 17 হাজার 570টি ভোট ৷

পুরনো মালদা পৌরসভার 20টি ওয়ার্ডের 18টিতেই প্রথম স্থানে রয়েছে বিজেপি ৷ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত 6 ও 10 নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে কংগ্রেস ৷ এই পৌর এলাকায় গেরুয়া শিবির 27 হাজার 517 ভোটে লিড দিয়েছে ৷ জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বকসির কথায়, "রাজ্য সরকারের প্রতিটি প্রকল্পের সুবিধে গ্রামের সঙ্গে শহরও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা রেখেছে গোটা রাজ্যের মানুষ ৷ তবু কেন আমরা জেলার দুই শহরে ভোট পাইনি, তা খতিয়ে দেখা হবে ৷ এখনও আমরা ভোট পরবর্তী বিশ্লেষণ করতে পারিনি ৷"

মালদা উত্তরে গেরুয়া ঝড় ! জয়ের ধারা বজায় রাখলেন খগেন মুর্মু

একই হাল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও ৷ এই জেলায় তিনটি পৌরসভা রয়েছে ৷ বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর এবং বুনিয়াদপুর ৷ বালুরঘাট পৌরসভার 25টি ওয়ার্ডে বিজেপির লিড প্রায় 22 হাজার ভোট ৷ নিজেদের ওয়ার্ডে ধরাশায়ী হয়েছেন চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের শহর সভাপতি-সহ একাধিক নেতা-নেত্রী ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, 2019-এর নির্বাচনের তুলনায় এবার এই পৌর এলাকায় বিজেপির লিড বেড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার ভোট ৷

গঙ্গারামপুর পৌর এলাকাতেও ছবিটা এক রকম ৷ এই পৌরসভায় বাড়ি খোদ তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের ৷ নিজের ওয়ার্ডেই বিজেপির থেকে পিছিয়ে রয়েছেন তিনি ৷ 18 নং ওয়ার্ডের গঙ্গারামপুর পৌরসভায় বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার 12 হাজার 840 ভোটে লিড পেয়েছেন ৷ বুনিয়াদপুর পৌরসভার 14টি ওয়ার্ডেও বেশ কয়েকহাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ৷ এই ফলে হতবাক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল ৷ তাঁর বক্তব্য, "এই জেলার মানুষ সংস্কৃতিমনস্ক ৷ তবু আমরা কেন শহুরে ভোটারদের মন জয় করতে পারছি না, বোঝা যাচ্ছে না ৷ এই নিয়ে আমাদের পর্যালোচনা করতে হবে ৷ দ্রুত আমরা সেই পর্যালোচনায় বসব ৷"

দুই জেলার এই ছবির হেরফের নেই উত্তর দিনাজপুরেও ৷ এখানে মোট চারটি পৌরসভা ৷ ইসলামপুর, ডালখোলা, রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ ৷ তৃণমূল পরিচালিত ইসলামপুর পৌরসভার 17টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র তিনটিতে এগিয়ে ঘাসফুল ৷ সব মিলিয়ে এই পৌর এলাকায় 11 হাজারেরও বেশি ভোটে লিড পেয়েছে বিজেপি ৷ ডালখোলা পৌরসভার 17টি ওয়ার্ডের পাঁচটিতে ঘাসফুল লিড পেলেও একটি ওয়ার্ডে কংগ্রেস ও বাকিগুলিতে বিজেপি এগিয়ে ৷

একা কুম্ভ হয়ে বাংলায় কংগ্রসের মান বাঁচালেন ইশা খান

ডালখোলা পৌরসভায় কার্তিকচন্দ্র পাল লিড পেয়েছেন 5 হাজার 916 ভোটে ৷ খোদ নিজের শহরেই পিছিয়ে মমতার পছন্দের প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী ৷ রায়গঞ্জ পৌরসভার 27টি ওয়ার্ডে তাঁকে 21 হাজার 413 ভোটে পিছনে ফেলে দিয়েছেন কার্তিক ৷ আর কালিয়াগঞ্জ তো কার্তিকের নিজের শহর ৷ 17 নং ওয়ার্ডের এই পৌরসভায় 17 হাজার 453টি ভোটে লিড পেয়েছেন তিনি ৷ এই নিয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের প্রতিক্রিয়া, "এই ফলের পিছনে যে সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে, তা মানতে কোনও দ্বিধা নেই ৷ আমরা সব মিলিয়েই দ্রুত পর্যালোচনা বৈঠকে বসব ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.