মেদিনীপুর, 28 নভেম্বর: রাজ্যে মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে আলুর দাম। টাস্কফোর্স গঠন করেও আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আর সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিলেন, এই রাজ্য থেকে যেন ভিন রাজ্যে আলু সরবরাহ না করা হয় ৷ বাংলার আলু যেন রাজ্যেই থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশের পরেই কড়াকড়ি করা হয়েছে রাজ্যের সীমানা ৷ ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডগামী সব আলুর গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে ৷
বুধবার রাত থেকে বাংলা-ওড়িশা সীমান্তবর্তী বেলদাও দাঁতন থানায় কড়া নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবারও ওড়িশাগামী সব আলুবোঝাই লরি আটকে তল্লাশি চালায় বেলদা ও দাঁতন থানার পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই বর্ডার এলাকা বেলদা, দাঁতন এবং কেশিয়াড়ির শেষ প্রান্ত দিয়ে আলু গাড়ি-সহ ভিন রাজ্যের শয়ে শয়ে ট্রাক প্রতিদিন ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই আলু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাজ্য সরকার। আর তাতেই চটজলদি পুলিশ প্রশাসন থেকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এই বর্ডার এলাকাগুলো সম্পূর্ণভাবে সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ভিন রাজ্যে আলু রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। সেই মতো বাংলা-ওড়িশা সীমান্তবর্তী থানাগুলিতে শুরু হয়েছে কড়া নজরদারি। বেশ কয়েকটি আলুবোঝাই গাড়িকে এদিন নাকা চেকিং থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এদিন সকাল থেকে একই ছবি দেখা গিয়েছে, বাংলা ঝারখণ্ড সীমায় ডুবরডি চেকপোস্টে কুলটি থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী এবং কুলটি ট্রাফিক পোস্টের উদ্যোগে চলছে লরি পরীক্ষা। বৃহস্পতিবার কাকভোর থেকেই বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় ডুবরডি চেকপোস্টে অভিযান শুরু করেছে কুলটি থানার পুলিশ। সঙ্গে রয়েছে কুলটি ট্রাফিক পোস্টের অফিসাররা।
কুলটি থানার পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বর্তমানে যা নির্দেশিকা রয়েছে, তাতে আলুর কোনও গাড়িকেই অন্য রাজ্যে পাঠানো যাবে না। ফলে লরি পরীক্ষা করে যদি দেখা যাচ্ছে সেখানে আলু রয়েছে, সেই গাড়িকে রাজ্যেই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুনরায় নতুন নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।
এ রাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে যাওয়া সমস্ত লরিকে পরীক্ষা করে তারা দেখছেন। যদি কোনও গাড়িতে আলু পাওয়া যাচ্ছে, সেই লরিকে তৎক্ষণাৎ সীমানা থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই রাজ্যে। এমন বহু লরিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে সকাল থেকেই। যদিও লরি চালকরা জানাচ্ছেন, বিক্ষিপ্তভাবেই রাত থেকেই এই অভিযান কার্যত চলছে ৷ সেই অভিযানে বেশ কয়েকটি লরি ধরা পড়ার পর তাদেরকে সীমানাতেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল।
যদিও সকালের পর থেকেই সেই সমস্ত লরিকেই এই রাজ্যের দিকেই পুনরায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। লরি চালকরা জানাচ্ছেন, আগাম কোনও খবর না দিয়েই তাদেরকে এখানে আটকানো হয়েছে। ফলে অনেকেই বর্ধমান থেকে ধানবাদ যাওয়ার উদ্দেশে লরিতে আলু ভর্তি করে নিয়ে আসছিলেন। অনেকেই বা ঝাড়খণ্ডের অন্যান্য জায়গায় আলু সরবরাহের জন্য লরি নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু মাঝপথে তারা আটকে পড়েন। ফের লরি ঘুরিয়ে নিয়ে যেতে প্রচুর টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে হবে লরির মালিকদের। এমনটাই জানিয়েছেন লরির চালকরা।