দুর্গাপুর, 27 মার্চ: চলতি মাসের 19 তারিখ কাঁকসায় খুন হন পবিত্র বিশ্বাস (26) ৷ তিনি কাঁকসার গোপালপুর উত্তরপাড়ার তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত ৷ ঘটনায় গ্রেফতার শম্ভু দাস ও তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমাকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ ৷ ইতিমধ্য়েই এই ঘটনার বেশ কিছু সূত্র মিলেছে ৷ সেই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করেছে কাঁকসা পুলিশ ৷
ঘটনা প্রসঙ্গেই, কাঁকসার এসিপি সুমন কুমার জয়সওয়াল বলেন, "বেসবল ব্যাট আর জোড়া চপ্পল দিয়ে মারা হয়েছিল। বেশ কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে ৷ সেই তথ্য ধরেই চলছে তদন্ত । খুনে ব্যবহৃত উইকেট এবং জোড়া চপ্পল উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷" তবে তণমূল কর্মী পবিত্র বিশ্বাসের খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ শম্ভু দাসের (অভিযুক্ত) দুই ছেলের বিরুদ্ধেও ৷ ইতিমধ্যেই তাদের জড়িত থাকার অভিযোগও জানিয়েছে গ্রামবাসীরা। ঘটনার পর থেকে পলাতক তাঁরা। আমরা সেগুলি নিয়েও তদন্ত চালাচ্ছি ।
ঠিক কী ঘটেছিল ?
চলতি মাসের 19 তারিখ খুন হন কাঁকসার গোপালপুর উত্তরপাড়ার তৃণমূল কর্মী পবিত্র বিশ্বাস ৷ অভিযোগের তির এলাকার সুদের ব্যবসায়ী শম্ভু দাস ও তার স্ত্রী পূর্ণিমার দাসের বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, পূর্ণিমা দাসের সঙ্গে পবিত্র বিশ্বাসের দীর্ঘ চার-পাঁচ বছরের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল । ঘটনার দিন পবিত্র বিশ্বাস পূর্ণিমা দাসকে বেশ কয়েকবার ফোন করেন ৷ তা না-ধরতেই শম্ভু দাসের বাড়ি পৌঁছে যান পবিত্র বিশ্বাস ৷ সেই সময়ে বাড়িতে অভিযুক্ত শম্ভু দাস উপস্থিত ছিলেন ৷ তিনি জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয় ৷
কথা কাটাকাটি থেকে মারামারি :
অভিযোগ, সেই সময়েই পূর্ণিমা দাসের স্বামী শম্ভু দাস বেসবল ব্যাট দিয়ে পবিত্রর মাথায় মারতে যায়। কিছু বোঝার আগেই আঘাত সজোরে লাগে পবিত্র বিশ্বাসের মাথায় ৷ তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ৷ তারপরেই শম্ভু এবং তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা মিলে জোড়া চপ্পলে উপর্যুপরি মারতে থাকে পবিত্রকে। পবিত্র অচৈতন্য হয়ে গেলে, পবিত্রর মামাকে খবর দেয় শম্ভু দাস। তারপরেই পবিত্রকে কাঁকসার রাজবাঁধের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিমেষের মধ্যে এলাকায় খুনের ঘটনা চাউর হয়ে যায় ৷ গোপালপুরের উত্তেজিত জনতা সেই রাতে শম্ভু দাসের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ও বাড়ি ঘেরাও করে। প্রাণ বাঁচাতে সস্ত্রীক শম্ভু দাস পালিয়ে যায় । ঘটনার দু'দিন পরেই মুচিপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার হয় দুই অভিযুক্ত । ধৃতদের নিয়ে বুধবার খুনের পুনর্নির্মাণ করা হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পবিত্র বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনায় আরও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে । সেই সূত্র ধরেই তদন্ত চলছে ।
আরও পড়ুন: