কলকাতা, 2 জানুয়ারি: রাজ্যে জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে এবার কাঠগড়ায় পুলিশ নিজেই । পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর সাধারণ মানুষ হাতে পায় পাসপোর্ট । কিন্তু এত নকল পাসপোর্ট কীভাবে গোটা রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল, সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ইটিভি ভারতকে বলেন, "গোটা রাজ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যে সকল ব্যক্তি তাঁদের পাসপোর্ট পেয়েছেন, এর মধ্যে অধিকাংশই নকল । তাই এবার দু'জন পুলিশ আধিকারিকের বয়ান নথিভুক্ত করেছেন তদন্তকারীরা ।"
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, একজন পুলিশকর্মীর মোবাইল ফোন ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে । এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "নকল পরিচয়পত্র কাণ্ডে পুলিশের একাংশের যোগ থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না ।"
ইতিমধ্যেই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়টিকে আরও নতুনভাবে সাজানোর বন্দোবস্ত করছে লালবাজার এবং রাজ্য পুলিশ । লালবাজার সূত্রের খবর, এবার থেকে নতুন করে পাসপোর্ট তৈরির আবেদন জমা পড়লে, আবেদনকারীকে থানায় ডেকে নথি যাচাই করলেই শুধু চলবে না । দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সশরীরে আবেদনকারীর ঠিকানায় পৌঁছে যেতে হবে এবং সবকিছু সশরীরে সেখানে উপস্থিত থেকে যাচাই করতে হবে । এলাকায় খোঁজখবর নিতে হবে ।
লালবাজারের সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত তারা যে তথ্য পেয়েছেন তার উপর ভিত্তি করে তারা বলছে যে, কয়েক কোটি টাকার বিনিময়ে এখনও পর্যন্ত জাল নথি ব্যবহার করে 250টিরও বেশি ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করে বাংলাদেশি নাগরিকদের হাতে তুলে দিয়েছে অভিযুক্তরা ।
আর এখানেই প্রশ্ন, এত কিছু হয়ে গেল আর পুলিশ কিছু জানল না, তা কী করে সম্ভব ? প্রত্যেকটি থানায় দু'জন করে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক থাকেন । এবার প্রত্যেক জেলা এবং কমিশনারেটের এই সব দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও পৃথকভাবে কথা বলছেন তদন্তকারীরা ।