রায়গঞ্জ, 16 অগস্ট: স্পাইস হোটেলে তৃণমূল নেতা খুনে আরও এক ধাপ এগলো তদন্ত ৷ বৃহস্পতিবার বিহার সীমান্ত থেকে আরও এক অভিযুক্ত সুপারি কিলারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ ধৃতকে জেরা করে আরও 2 সুপারি কিলারের যুক্ত থাকার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ ৷ ধৃতকে এদিন আদালতে পেশ করা হয়েছে ৷
ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার জবি থমাস জানিয়েছেন, বিহার সীমানা থেকে এক যুবককে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় ৷ ওই ঘটনায় গুলি চালানয় সে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিল ৷ তার সঙ্গে আরও 2 জন শুটার ছিল ৷ আরও দুই অভিযুক্তের খোঁজে অভিযান শুরু করা হয়েছে ৷ অন্যদিকে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, এই ঘটনায় অনিকেত নামে একজনকে গ্রেফতার করে তার কাছ থেকে মুক্কারাহি রামের নাম উঠে আসে ৷ ইসলামপুর মহকুমা আদালতে মুক্কারাহি রামকে তোলা হলে বিচারক তাকে 10 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ।
ঘটনাপ সূত্রপাত 13 জুলাই ৷ এদিন ইসলামপুর থানার শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় জাতীয় সড়কের পাশে রয়েছে একটি স্পাইস হোটেল ৷ সেখানেই দলীয় বৈঠক চলছিল ৷ সেই বৈঠকে তৃণমূল নেতা বাপি রায়-সহ আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতা উপস্থিত ছিলেন ৷ তখনই বাপি রায়ের উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা ৷ মহম্মদ সাজ্জাদ নামে আরেক নেতা গুলিবিদ্ধ হয় ৷ হামলার পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রীতিমতো ছক কষেই এই হামলা চালানো হয়েছিল ৷ ওই হোটেলে মাঝেমধ্যেই বৈঠক বসত এই তৃণমূল নেতার । এদিনও বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল । বৈঠক শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর এই হামলা চালানো হয়েছে ৷ দুষ্কৃতীরা শূন্যে 2 রাউন্ড গুলি ছুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে ৷ তারপরই পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে বাপিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ৷ হোটেল চত্বরে বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে । পরিচয় আড়াল করতেই হামলাকারীরা তাদের সঙ্গে আনা গাড়িও হোটেল থেকে বেশ কিছুটা দূরে রাখে ৷ পুলিশ হোটেলের সিসিটিভি'র ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর নিশ্চিত যে, এই হামলায় বাইক ও গাড়ি- দু'ধরনের যানবাহন ব্যবহার করা হয়েছে ৷
নিহত বাপি রায়ের দেহে 8-9 টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল ৷ হামলার ধরন দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই হামলায় 'সুপারি কিলারের' সাহায্য নেওয়া হয়েছে ৷ সেইমতো তদন্ত শুরু হয় ৷ জানা গিয়েছে, ইসলামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের স্বামী বাপি ঘটনার আগে ব্যবসার কাজে প্রায় এক সপ্তাহ কোচবিহারে ছিলেন । পার্শ্ববর্তী দার্জিলিঙের বিধাননগর এলাকায় তাঁর ঘনঘন যাতায়াত ছিল ৷ সেই সূত্র ধরেই, পুলিশ 16 জুলাই বিধাননগর এলাকা থেকে অনিকেত সরকার নামের যুবককে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় ৷ তাকে জেরা করে সুপারি কিলার কাজে লাগানোর তথ্য পুলিশের সামনে আসে ৷ সেই সূত্র ধরেই, পুলিশের একটি দল পার্শ্ববর্তী বিহার রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে ৷