ETV Bharat / state

রণক্ষেত্র আরজি কর হাসপাতাল! বিক্ষোভকারীদের কিল-চড়-লাথি - RG Kar Doctor Rape and Murder

RG Kar Female Doctor Rape-Murder Case: মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনে দোষীর যেন ফাঁসির সাজা হয়, দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা ৷ এরই সঙ্গে হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলিতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে হবে ৷ শনিবার সকাল থেকে প্রতিবাদ, আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠল আরজিকর হাসপাতাল চত্বর ৷

RG Kar Female Doctor Rape Murder Case
বিক্ষোভে উত্তাল আরজি কর হাসপাতাল চত্বর (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 10, 2024, 7:38 PM IST

Updated : Aug 10, 2024, 8:59 PM IST

কলকাতা, 10 অগস্ট: 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগানে মুখরিত হল হাসপাতাল চত্বর ৷ রণক্ষেত্রের চেহারা নিল আরজি কর হাসপাতালের ভিতর ও বাহির ৷ বিক্ষোভকারী পড়ুয়া চিকিৎসকদের আন্দোলন সামলাতে কার্যত হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে পুলিশ ৷ হাসপাতালের বাইরে আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছে ৷ পুলিশও বিক্ষোভে সামিল বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ ৷ প্রতিবাদকারী চিকিৎসকদের অবশ্য দাবি, এই আন্দোলন চিকিৎসকদের আন্দোলন ৷ হাসপাতালের ভিতরে কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্যকে ঢুকতে দেওয়া হবে না ৷

আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক আন্দোলন (ইটিভি ভারত)

শুক্রবার সকালে আরজি কর হাসপাতালের চারতলায় সেমিনার রুম থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয় ৷ তিনি স্নাতকোত্তর স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া শিক্ষানবিশ ছিলেন ৷ কর্তব্যরত ওই মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ তাঁর মৃত্যুতে হাসপাতালের ভিতরে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ ঘটনার পর থেকেই হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয়েছেন প্রতিবাদী চিকিৎসকরা ৷ কয়েক দফা দাবিদাওয়া নিয়ে এই আন্দোলন করছে চিকিৎসক পড়ুয়ারা ৷ এদিন তাঁদের আন্দোলন আরও বড় চেহারা নেয় ৷

মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে চিকিৎসক পড়ুয়ারা যে আন্দোলন করছেন তাতে তাঁরা রাজনৈতিক রং লাগাতে রাজি নন ৷ তাঁদের কথা, ব্যানার ছাড়া যে ইচ্ছে এখানে আসুন ৷ আরজি কর হাসপাতালের এক ডাক্তারি পড়ুয়া বলেন, "আমাদের দাবি, দোষীকে তাকে নিরপেক্ষভাবে গ্রেফতার করতে হবে ৷ তাকে দ্রুত আদালতে পেশ করতে হবে ৷ তার যেন ফাঁসির সাজা হয় ৷ প্রতিটি ওয়ার্ডে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে হবে ৷ সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে ৷ এই আবেদন প্রশাসনও মেনে নিয়েছে ৷ কোনও বিচার এখনও পাইনি ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্টও আমরা পাইনি ৷ রাজনৈতিক দলকে আমরা ঢুকতে দেব না ৷ এটা ডাক্তারদের আন্দোলন ৷" রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের স্বাগত জানাব তবে কোনওরকম রাজনৈতিক ব্যানার ছাড়া ৷

এই সময় বাইরে আসে ডিওয়াইএফআই এবং এসএফআই, স্টুডেন্টস হেল্থ হোমের আন্দোলনকারীরা ৷ তাঁদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হয় ৷ ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই ব্যানার সরিয়ে দেওয়ার পরেও পুলিশের সঙ্গে তারা বচসায় জড়ায় ৷ পুলিশকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ৷ তার প্রেক্ষিতে পুলিশও তাঁদের গায়ে হাত তোলে বলে অভিযোগ ৷

এই সময় তাঁরা যখন বাইরে আন্দোলনরত, তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় কলকাতা মেডিক্যাল ও এসএসকেএমের ডাক্তারি পড়ুয়ারা ৷ অভিযোগ ওঠে, তাঁদেরও আরজি করে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৷ একজন এসএসকেএমের চিকিৎসক পড়ুয়াকে আটক করে পুলিশ ৷ তার জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয় এবং টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয় আরজিকরের এমারজেন্সি বিভাগে ৷

বিক্ষোভকারীদের চুলের মুঠি ধরে লাথি মারতে মারতে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যেতে দেখা গেল কলকাতা পুলিশের কর্মীদের ৷ এসএফআই কলকাতা জেলা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি আতিফ নিসার-সহ ইতিমধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে ৷ অভিযোগ, তাঁদের প্রত্যেককেই পুলিশ আধিকারিকরা মারধর করেছেন ৷ তবে পিছু হটতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা ৷ কলেজ চত্বরে ঘোষণা করা হচ্ছে, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত এবং প্রিন্সিপালের পদত্যাগ এবং দোষীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ-আন্দোলন জারি থাকবে ৷

এসএফআই কর্মীদের গ্রেফতারির খবর পৌঁছে যায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কাছে ৷ তিনি ছুটে আসেন আরজি কর হাসপাতালের সামনে ৷ যদিও কলকাতা জেলা সিপিএমের এই কর্মসূচিতে তাঁর উপস্থিত থাকার কথা ছিল না ৷ একথা জানিয়ে সেলিম স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন, "স্বাস্থ্য-পুলিশ মন্ত্রী মমতার দালাল রাজের কারণেই কেউ নিরাপদ নয় ৷ কলকাতা এখন সিটি অফ ভয় ৷ বাংলার মা-বোনেদের সম্মান বাঁচাতে রাস্তাতেই থাকতে হবে ৷ গোটা ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি প্রিন্সিপালকেও পদত্যাগ করতে হবে ৷ যতদিন না বাংলার মা-বোনেরা নিরাপদ হচ্ছেন, ততদিন আন্দোলন জারি থাকবে ৷"

কলকাতা জেলা সিপিএমের তরফে আরজি কর হাসপাতালের সামনে কিছুক্ষণ সমাবেশের পর শ্যামবাজারের দিকে রওনা দেয় মিছিল ৷ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সহ সিপিএম কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার ও অন্যান্য কর্মী সমর্থকরা সেই মিছিলে উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান এ মুখরিত হয়ে ওঠেন ৷

তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমারও একটি মেয়ে আছে ৷ আমি স্বপ্নেও এমন ঘটনার কথা চিন্তা করতে পারি না ৷ আমার মনে হয়, শুধু একজন এই অপরাধ করেনি ৷ ওই মহিলা চিকিৎসকের আঙুলের হাড় ভেঙেছে, নাক ভেঙেছে, কলার বোন ভেঙে গিয়েছে, এটা কি একজনের একার কাজ ? এই নৃশংস ঘটনায় দোষীকে বা দোষীদের ফাঁসি দেওয়া উচিত ৷ মুখ্যমন্ত্রীও তাই বলেছেন ৷"

কলকাতা, 10 অগস্ট: 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগানে মুখরিত হল হাসপাতাল চত্বর ৷ রণক্ষেত্রের চেহারা নিল আরজি কর হাসপাতালের ভিতর ও বাহির ৷ বিক্ষোভকারী পড়ুয়া চিকিৎসকদের আন্দোলন সামলাতে কার্যত হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে পুলিশ ৷ হাসপাতালের বাইরে আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছে ৷ পুলিশও বিক্ষোভে সামিল বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ ৷ প্রতিবাদকারী চিকিৎসকদের অবশ্য দাবি, এই আন্দোলন চিকিৎসকদের আন্দোলন ৷ হাসপাতালের ভিতরে কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্যকে ঢুকতে দেওয়া হবে না ৷

আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক আন্দোলন (ইটিভি ভারত)

শুক্রবার সকালে আরজি কর হাসপাতালের চারতলায় সেমিনার রুম থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয় ৷ তিনি স্নাতকোত্তর স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া শিক্ষানবিশ ছিলেন ৷ কর্তব্যরত ওই মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ তাঁর মৃত্যুতে হাসপাতালের ভিতরে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ ঘটনার পর থেকেই হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয়েছেন প্রতিবাদী চিকিৎসকরা ৷ কয়েক দফা দাবিদাওয়া নিয়ে এই আন্দোলন করছে চিকিৎসক পড়ুয়ারা ৷ এদিন তাঁদের আন্দোলন আরও বড় চেহারা নেয় ৷

মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে চিকিৎসক পড়ুয়ারা যে আন্দোলন করছেন তাতে তাঁরা রাজনৈতিক রং লাগাতে রাজি নন ৷ তাঁদের কথা, ব্যানার ছাড়া যে ইচ্ছে এখানে আসুন ৷ আরজি কর হাসপাতালের এক ডাক্তারি পড়ুয়া বলেন, "আমাদের দাবি, দোষীকে তাকে নিরপেক্ষভাবে গ্রেফতার করতে হবে ৷ তাকে দ্রুত আদালতে পেশ করতে হবে ৷ তার যেন ফাঁসির সাজা হয় ৷ প্রতিটি ওয়ার্ডে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে হবে ৷ সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে ৷ এই আবেদন প্রশাসনও মেনে নিয়েছে ৷ কোনও বিচার এখনও পাইনি ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্টও আমরা পাইনি ৷ রাজনৈতিক দলকে আমরা ঢুকতে দেব না ৷ এটা ডাক্তারদের আন্দোলন ৷" রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের স্বাগত জানাব তবে কোনওরকম রাজনৈতিক ব্যানার ছাড়া ৷

এই সময় বাইরে আসে ডিওয়াইএফআই এবং এসএফআই, স্টুডেন্টস হেল্থ হোমের আন্দোলনকারীরা ৷ তাঁদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হয় ৷ ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই ব্যানার সরিয়ে দেওয়ার পরেও পুলিশের সঙ্গে তারা বচসায় জড়ায় ৷ পুলিশকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ৷ তার প্রেক্ষিতে পুলিশও তাঁদের গায়ে হাত তোলে বলে অভিযোগ ৷

এই সময় তাঁরা যখন বাইরে আন্দোলনরত, তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় কলকাতা মেডিক্যাল ও এসএসকেএমের ডাক্তারি পড়ুয়ারা ৷ অভিযোগ ওঠে, তাঁদেরও আরজি করে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৷ একজন এসএসকেএমের চিকিৎসক পড়ুয়াকে আটক করে পুলিশ ৷ তার জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয় এবং টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয় আরজিকরের এমারজেন্সি বিভাগে ৷

বিক্ষোভকারীদের চুলের মুঠি ধরে লাথি মারতে মারতে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যেতে দেখা গেল কলকাতা পুলিশের কর্মীদের ৷ এসএফআই কলকাতা জেলা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি আতিফ নিসার-সহ ইতিমধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে ৷ অভিযোগ, তাঁদের প্রত্যেককেই পুলিশ আধিকারিকরা মারধর করেছেন ৷ তবে পিছু হটতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা ৷ কলেজ চত্বরে ঘোষণা করা হচ্ছে, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত এবং প্রিন্সিপালের পদত্যাগ এবং দোষীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ-আন্দোলন জারি থাকবে ৷

এসএফআই কর্মীদের গ্রেফতারির খবর পৌঁছে যায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কাছে ৷ তিনি ছুটে আসেন আরজি কর হাসপাতালের সামনে ৷ যদিও কলকাতা জেলা সিপিএমের এই কর্মসূচিতে তাঁর উপস্থিত থাকার কথা ছিল না ৷ একথা জানিয়ে সেলিম স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন, "স্বাস্থ্য-পুলিশ মন্ত্রী মমতার দালাল রাজের কারণেই কেউ নিরাপদ নয় ৷ কলকাতা এখন সিটি অফ ভয় ৷ বাংলার মা-বোনেদের সম্মান বাঁচাতে রাস্তাতেই থাকতে হবে ৷ গোটা ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি প্রিন্সিপালকেও পদত্যাগ করতে হবে ৷ যতদিন না বাংলার মা-বোনেরা নিরাপদ হচ্ছেন, ততদিন আন্দোলন জারি থাকবে ৷"

কলকাতা জেলা সিপিএমের তরফে আরজি কর হাসপাতালের সামনে কিছুক্ষণ সমাবেশের পর শ্যামবাজারের দিকে রওনা দেয় মিছিল ৷ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সহ সিপিএম কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার ও অন্যান্য কর্মী সমর্থকরা সেই মিছিলে উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান এ মুখরিত হয়ে ওঠেন ৷

তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমারও একটি মেয়ে আছে ৷ আমি স্বপ্নেও এমন ঘটনার কথা চিন্তা করতে পারি না ৷ আমার মনে হয়, শুধু একজন এই অপরাধ করেনি ৷ ওই মহিলা চিকিৎসকের আঙুলের হাড় ভেঙেছে, নাক ভেঙেছে, কলার বোন ভেঙে গিয়েছে, এটা কি একজনের একার কাজ ? এই নৃশংস ঘটনায় দোষীকে বা দোষীদের ফাঁসি দেওয়া উচিত ৷ মুখ্যমন্ত্রীও তাই বলেছেন ৷"

Last Updated : Aug 10, 2024, 8:59 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.