কলকাতা, 31 অগস্ট: শুক্রবার রাতে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সিঁথির মোড় এলাকায় কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন রবীন্দ্রভারতীর পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা । অভিযোগ, রাত সাড়ে 3টে নাগাদ গোলমাল শুরু হয় । মত্ত অবস্থায় বাইক নিয়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ার পড়ুয়াদের ব্যারিকেডে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা । ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে শাসক, এমনটাই দাবি রাজনৈতিক দলের নেতারা ।
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সেদিনইতো হুমকি দেওয়ার জন্য রাস্তায় নেওয়ার কথা বলেছিলেন । যাঁরা নবান্ন অভিযান করেছিলেন, ভিডিয়ো দেখে তাঁদের এখন ডাকছে । পুলিশ গ্রেফতার করছে । থানায় ডেকে পাঠাচ্ছে । ভয় দেখিয়ে আন্দোলন বন্ধ করার চেষ্টা করছে । এছাড়া এর আর কোনও কারণ নেই ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘রাস্তায় বেরোলের সিভিককে দিয়ে ধাক্কা মারানো হবে । পুলিশ তুলে নিয়ে যাবে৷ পুলিশ ডেকে পাঠাবে । এই ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে । যেমন, নবান্ন অভিযানের আগে বলা হয়েছিল তোমরা যেওনা গুলি চলতে পারে। বোমাবাজি হতে পারে । এভাবেই ভয়ের কারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ।" অন্যদিকে শ্রেয়া ঘোষালের শো বাতিল করার বিষয়ে দিলীপের বক্তব্য, "এই ভয়ের পরিবেশে লোকজন হবে কি না, শো ঘিরে কোনও সমম্যা হবে কি না, ইত্যাদি ভেবে হয়তো বাতিল করেছেন ।"
সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেন, "হিটলার-মুসোলিনি এরকম বাহিনী তৈরি করে সে দেশে ক্ষমতা কায়েম করেছিল । 2011 সালে মে মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেছিলেন গুন্ডা নিয়ন্ত্রণ করেন । ভবানীপুর থানা থেকে গুন্ডাদের ছাড়িয়ে এনে তিনি সেটা প্রমাণ করেছিলেন । পুলিশকে টেবিলের তলায় মাথা লুকাতে হয়েছিল ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এরপরে পুলিশ নিয়োগের প্রক্রিয়াকে থমকে দিয়ে নিয়োগ করা হল সিভিক ভলান্টিয়ার । যাদের একটা বিরাট অংশ গুন্ডা বাহিনী হিসেবে কাজ করে তৃণমূলের স্বার্থে । এদেরকে দিয়ে তোলাবাজি ধমকি হুমকি ভোট লুট করানো হয় শাসক দলের পক্ষ থেকে । খুন, ধর্ষণ, রাহাজানিতেও এরা পিছপা হচ্ছে না । ফলে এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় । এদের দিয়েই ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে প্রতিবাদ আন্দোলনকে স্থিমিত করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে ।"
আর কংগ্রেসের বক্তব্য, পুলিশের অপকর্মের দোসর সিভিক ভলান্টিয়াররা ৷ এই নিয়ে তৃণমূল নেতা তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ার কত আছে জানেন? সব সিভিক খারাপ এটা বলা ঠিক নয়। দু একটা সিভিক অপরাধ করলে তার শাস্তি হবে। তারা তো আর বিশেষ ব্যক্তি নয়। কেউ সিভিক ভলান্টিয়ার, কেউ প্রাইভেট চাকরি করে। তার মধ্যে দুটো ছেলে বদমাইশি করলে, অপরাধ করলে শাস্তি হবে। তার মানে সব সিভিক ভলান্টিয়ার খারাপ বললে হয় না। অনেক জায়গায় আছে পুলিশ অন্যায় করেছে। শাস্তি পেয়েছে আইন মাফিক। আগের আমলে পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতা ফুলবাগান থানার উপরে ঘরে ধর্ষণ করেছিল। এখনও জেল খাটছে। তার মানেই কি সব পুলিশ খারাপ ছিল, তেমনটা নয়। এরা সকলে মানুষ। মানুষের মধ্যে খারাপ থাকে ভালো থাকে।