কলকাতা, 23 জানুয়ারি: আজ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর 128তম জন্মদিবস ৷ 23 জানুয়ারিকে 'দেশপ্রেম দিবস' হিসাবে সর্বত্র পালন করল রাজ্য বামফ্রন্ট । এই উপলক্ষে কলকাতায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে থেকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিল করা হয় মঙ্গলবার । বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম থেকে সূর্যকান্ত মিশ্ররা এই মিছিলে পা মেলান ।
কলকাতায় মিছিল ছাড়াও জেলায় জেলায় নেতাজির জন্মদিবসে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সংবিধান রক্ষায় সোচ্চার হন বামপন্থীরা । তাঁদের বক্তব্য, "জাতি ধর্ম নির্বিশেষে একযোগে লড়াইয়ের এই ঐতিহ্যই বামপন্থীরা বহন করছে । এ কারণেই নেতাজির জন্মদিবসে রক্তদান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, প্রভাত ফেরির মতো নানান অনুষ্ঠান করে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে । সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, " বামফ্রন্ট নেতাজির জন্মজয়ন্তীকে দেশপ্রেম দিবস ঘোষণা করার দাবি করেছিল ৷ তবে আরএসএস-বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার 23 জানুয়ারির থেকে রাম মন্দিরকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দেখাতে চেয়েছে । যারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামে অংশ নেয়নি তারা ধর্মীয় উন্মাদনায় 'নতুন যুগ' দেখিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, আন্দোলন, ত্যাগ সব ইতিহাস মুছে দিতে চাইছে ।"
আজকের বামেদের কর্মসূচিতে বক্তাদের মূল কথা, সুভাষচন্দ্র বসু জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকারের ভিত্তিতে ধর্মনিরপেক্ষ ভারত গঠনের জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছিলেন । যা তাঁর লেখা, ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রাম, আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনেই স্পষ্ট । সুভাষচন্দ্র বসু আরএসএস, হিন্দু মহাসভার হিন্দুত্ববাদী ধারণা-সহ সব সাম্প্রদায়িক ভাবনার বিরুদ্ধে ছিলেন ।
অথচ আজকের দিনে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও সাভারকরের মতো উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বসুকে একাসনে বসানোর চেষ্টা চলছে । কেন্দ্রের বর্তমান শাসক দল বিজেপি-সহ সঙ্ঘ পরিবারের যৌথ উদ্যোগে এই প্রচেষ্টা চলছে । এমনকী, 1940 সালের 4 মে ফরওয়ার্ড ব্লকের পত্রিকায় 'কংগ্রেস এবং সাম্প্রদায়িক সংগঠন' শিরোনামে সুভাষচন্দ্র বসু সম্পাদকীয়তে লেখেন, "হিন্দু মহাসভা এবং মুসলিম লিগের মতো সাম্প্রদায়িক সংগঠনের কোনও সদস্য কংগ্রেসের কোনও নির্বাচনী কমিটির সদস্য হতে পারবেন না ।"
উল্লেখ্য, এ দিনের কর্মসূচিতে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু , মহম্মদ সেলিম, সূর্যকান্ত মিশ্র, নরেন চট্টোপাধ্যায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমূখরা অংশগ্রহণ করেন । সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে নেতাজির মূর্তিতে ফুল-মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সংক্ষিপ্ত সভার মধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয় ।
আরও পড়ুন: