কলকাতা, 20 অক্টোবর: উত্তর কলকাতার ব্যস্ততম নিমতলা ঘাট সুরক্ষিত নয়। গঙ্গার জলের তোড়ে প্রতিদিন ভাঙছে এই ঘাট। তৈরি হয়েছে মৃত্যু-ফাঁদ ! দিনের পর দিন কাটলেও সরানোর কোনও নাম গন্ধ নেই। শেষমেষ প্রাণহানি বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিমতলা ঘাটকে 'বিপজ্জনক' তকমা দিল কলকাতা পৌরসভা। একেবারে ঘাটের মাঝে লোহার কাঠামো দিয়ে ঘিরে সেখানে বড় নীল রঙের ব্যানারে লেখা বিপজ্জনক!
ঝুঁকি এড়াতে আপাতত ঘাটের ওই বিরাট অংশে বন্ধ থাকছে স্নান থেকে বিসর্জন। ধীরে ধীরে ভাঙছিল সিঁড়ি। বর্তমানে এখন এমন অবস্থা, যেখানে স্নান করতে নামলে যে কোনও সময় ঘটে যেতে পারে বিপদ ! পায়ের তলায় একাংশে নেই মাটি। কংক্রিটের সিঁড়ি ভেঙে বেশ কিছু জায়গায় লোহার রড বেরিয়ে পড়েছে।
উত্তর কলকাতার বিসর্জনের সব থেকে বড় ঘাট এটা। বহু মানুষ সারা দিন বিভিন্ন সময় এই ঘাটে স্নান সারেন। ভূতনাথ মন্দিরের লাগোয়া এই ঘাট হওয়াতে বহু ভক্ত এই মন্দিরে পুজো দিতে এসে এই ঘাটে নেমে জল নেন। এখন যা অবস্থা নামলে, তাতে যে কোনও সময় কোনও বিপদ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে ৷ তাই শেষমেষ বন্ধ করা হল নিমতলা ঘাট।
গোটা ঘাট কলকাতা কর্পোরেশনের কমিশনার ধবল জৈন নিজে পরিদর্শন করেছেন। শুধু তাই নয়, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম দুর্গা পুজোর ভাসান কীভাবে হবে, দেখতে গিয়েছিলেন। তবে, পুজো শেষে সেই ঘাটে বিপজ্জনক ব্যানার লাগিয়ে লোকজনের যাওয়া নিষেধ করল কলকাতা পৌরসভা। লাগানো হয়েছে রেলিং। কর্পোরেশন সূত্রে খবর, বর্ষার জেরে বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজে হাত দিতে পারেনি। বর্ষায় জলস্তর উঁচু ছিল। তবে শীত পড়তে এবার সেই কাজ হবে। কারণ, এই কাজের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াও হয়ে গিয়েছে। ঘাট সংস্থার বন্দর কর্তৃপক্ষ করে। ফলে তারা সময় সুযোগ বুঝেই সেই কাজ করবে।
জানা গিয়েছে, বছর শেষে এই ঘাটে মেরামতের কাজ হাত দিতে পারে কলকাতা বন্দর। এই প্রসঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের এক আধিকারিক বলেন, "বন্দর কর্তৃপক্ষ যবে কাজ করবে, তারা করুক। তবে বর্তমানে ওই ঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ ৷ তাই কাজ করে এর অবস্থা স্বাভাবিক না করা পর্যন্ত সর্তকতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ব্যানার দেওয়ার পাশাপাশি একদিকে লোহার কাঠামো করে ঘিরে দেওয়া ও বিসর্জন থেকে সাধারণ লোকের ওই ঘাটে স্নান বা যে কোনও কাজ করতে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। ঘাট ঠিক হলে ফের সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।"