বলাগড়, 8 ফ্রেব্রুয়ারি: বছর পঁয়তাল্লিশের এক মহিলাকে শ্লীলতাহানি ও ঘরছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে ৷ ঘটনাটি হুগলির বলাগড় থানা এলাকার ৷ স্থানীয় এক মানবাধিকার কর্মীর সহায়তায় ওই মহিলা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ তবে প্রতিবেশীদের মধ্যে যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁরা পুরো বিষয়টিই অস্বীকার করেছেন ৷
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা স্বামী পরিত্যক্তা ৷ 12 বছর আগে তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি বলাগড়ে বাপেরবাড়িতে ফিরে আসেন ৷ তার পর থেকে সেখানেই থাকেন৷ তিনি দিনমজুরের কাজ করেন ৷ দুই মেয়ে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে এবার ৷ দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে কোনোরকমে বেঁচে আছেন ৷ প্লাস্টিকের ছাউনির নিচে দিন গুজরান করছেন ৷
ওই মহিলার অভিযোগ, "আমার প্রতিবেশীদের মধ্যে তিনচার জন আমাকে ছোট জাত বলে গালিগালাজ করে সব সময় ।আমার ছেলে মেয়েদের কলে জল আনতে গেলে ঝামেলা করে । লিজ নিয়ে জমিতে পাট চাষ করেছিলাম । ট্রাক্টর চালিয়ে পাট গাছ নষ্ট করে দিয়েছিল প্রতিবেশীরা । এর প্রতিবাদ করতে গেলে মারধর করা হয় আমাকে । প্রধান, অন্যান্য নেতা ও প্রতিবেশীদের জানিয়েও ন্যায়বিচার পাইনি ।’’
তাঁর আরও দাবি, ‘‘সবকিছুর প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভয়ে আমি ঘর ছাড়া হয়েছি আমি । নিচু জাত, আমার স্বামী নেই, পয়সা নেই বলেই আমার উপর এভাবে অত্যাচার করছে । এমনকি আমার এবার দুই মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক দেবে । প্রতিবেশীদের নির্যাতনের জন্য ঠিক ভাবে পড়াশোনা করতে পারছে না ৷"
এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী সাকির হোসেন বলেন, "ওই মহিলাকে সামাজিক বহিস্কার করা হয়েছে । পানীয় জল ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না । দিনমজুর এই মহিলা ঠিকাচাষ করে সংসার চালান । সেই চাষের পর্যন্ত ফসল নষ্ট করে দেওয়া হয় । দীর্ঘদিন ধরে তাঁর উপর অত্যাচার হচ্ছে । এমনকি শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে তাঁকে । দুই মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ৷ তাদেরও ভয় দেখানো হচ্ছে । থানায় অভিযোগ করানোর পরই জোর করে মিটিং করে অভিযোগ তোলানো চেষ্টা করা হয়েছে । কেস তোলার জন্য ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে ওই মহিলাকে ৷"
নির্যাতিতা মহিলার প্রতিবেশী সুজন মণ্ডল বলেন, "আমাদের বাড়ির সামনে অপকর্ম করে এসেছে । ওঁকে বারণ করলেও শোনেন না । উনি উলটে বেশ করেছি বলেন । কোনও কথা না শুনে আমাদের গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ।ওঁর জন্য গ্রাম সভা ডাকা হয় ৷ কিন্ত উনি সেদিন আসেননি । ওঁকে ঘর ছাড়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি প্রতিবেশীদের ৷" নির্যাতিতা মহিলার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান অশোক কুমার মাহাতো বলেন, "বিষয়টি জানতাম না । তবে গতকাল গ্রামের মানুষ একটি অভিযোগ জানিয়েছেন পঞ্চায়েতে ৷"
আরও পড়ুন: