হায়দরাবাদ, 24 ফেব্রুয়ারি: মনোজ... শ্রীনিবাস... সন্দীপ... তোমরা কোথায় ? মনোজ... তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো ? উদ্ধারকারীরা বারবার চিৎকারেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্ধকার, ঘোলা জল এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লোহার রড জায়গাটিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। ফলে তিন দিন কেটে গেলেও তেলেঙ্গানার নাগরকুর্নুলে শ্রীশৈলম লেফট ব্যাঙ্ক ক্যানেল (SLBC) সুড়ঙ্গে আটকে পড়া আট ব্যক্তিকে উদ্ধারের চ্যালেঞ্জ ক্রমশ জটিল হচ্ছে ৷
দুর্ঘটনাস্থলে 15 ফুট গভীর কাদা থাকায় কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তাই সেখান পৌঁছনো রীতিমতো কঠিন হয়ে পড়ছে। সুড়ঙ্গের ভিতরে প্রবেশ করা এবং জল বের করাও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ বিশেষজ্ঞদের দাবি, দুর্ঘটনাস্থলে 15 ফুট গভীর গর্ত রয়েছে ৷ এতে কাদা, মাটি, জল-সহ চার মিটার চওড়া সাতটি অংশ ধসে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই এলাকায় পৌঁছনো খুবই কঠিন ৷ একটি টানেল বোরিং মেশিন শ্রীশৈলম জলাধার থেকে ঠিক 13.9 কিলোমিটার দূরে ভূগর্ভে খনন করছে। 10 মিটার ব্যাসের এই মেশিনটি বর্তমানে প্রতিদিন 4.5 মিটার খনন করছে। খননের পর একটি বেল্টের মাধ্যমে মাটি এবং পাথর বাইরে বের করা হচ্ছে ৷ যেখানে যন্ত্রটি খনন করছে সেটি বৃত্তাকার হলেও, সিমেন্টের এবং কংক্রিট নীচে বিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷
কাজ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা সিমেন্ট সেগমেন্ট রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রক্রিয়ার ফলে ছাদ থেকে বিপুল পরিমাণ জল, কাদা, মাটি পড়ে। তাদের চাপের প্রভাব এত বেশি ছিল যে, নয় টন ওজন বহন করতে পারে এমন সিমেন্টের অংশগুলিও টুকরো হয়ে যায়। খননকারী বোরিং মেশিনের সঙ্গে সংযোগকারী পিছনের অপারেটর এবং সরঞ্জামের অংশগুলিও মাটিতে ডুবে যায়।
সুড়ঙ্গে জল থাকলেও 13.5 কিলোমিটার থেকে ঘোলা জল রয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। ভিতরের কাদা, মাটি ও বর্জ্য সরিয়ে সুড়ঙ্গ বের করে আনা কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কনভেয়ার বেল্টটিও তখনই চলে যখন টানেল বোরিং মেশিন চলছে। বর্তমানে, ভিতরের পুরো সিস্টেমটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ তাই কনভেয়র বেল্ট চালানো সম্ভব হচ্ছে না। টানেলের বাইরে থেকে ভিতরে যাওয়ার জন্য একটি ছোট লোকো ট্রেন ব্যবহার করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়া এক শ্রমিক ভেলমালাই বলেন, "ছাদ থেকে হঠাৎ করেই প্রচুর কাদা, জল ও মাটি পড়ে যায়। আমরা টানেলে পড়ে যায়। পাশের পাইপ ও লোহার রডও আমাদের উপর পড়ে ৷ তাতেই আমরা আহত হয়। আমরা ভয় পেয়েছিলাম আমাদের জীবনই হয়তো শেষ হয়ে গিয়েছে।" আরও শ্রমিক চামেল সিং বলেন, "আচমকাই বিপুল পরিমাণ কাদা পড়ে যায় নির্মাণস্থলে। আমাদের চোখেও পড়ে। আমি কোনও রকমে বাইরে বেরোতে পেরেছিলাম।"