পানাগড় ও চন্দননগর, 24 ফ্রেব্রুরারি: তরুণীকে অশ্লীল ইঙ্গিত, তারপর ধাওয়া করে একাধিকবার তাঁর গাড়িতে ধাক্কা। গাড়ি উল্টে মৃত্যু হয় তরুণীর ৷ চারচাকা গাড়ি ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা। রবিবার গভীর রাতে পানাগড়ের 19 নম্বর জাতীয় সড়কে ঘটল এমনই ভয়ঙ্কর ঘটনা। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দু'জন।
মৃত যুবতীর নাম সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায় (26)। হুগলির চন্দননগরের বাসিন্দা। তিনি ইভেন্ট সংস্থার কর্মী ছিলেন। জানা গিয়েছে, চন্দননগর থেকে চারচাকা গাড়ি করে চালক-সহ পাঁচজন মিলে বিহারের গয়া যাচ্ছিলেন। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের। রবিবার রাতে পানাগড়ের 19 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি পেট্রল পাম্পে তেল ভরতে গাড়িটি থামে। তারপর আবার গাড়িটি জাতীয় সড়ক ধরে পানাগড় অভিমুখে যাওয়া শুরু করে।
তখনই আরও একটি সাদা রংয়ের চারচাকা গাড়ি তরুণীর গাড়িকে ধাওয়া করে। তরুণীর গাড়ির চালক রাজদূত শর্মা বলেন, "প্রথমে আমাদের গাড়ি ধাওয়া করে ওই গাড়িটি। তারপর ম্যাডামকে উদ্দেশ্য করে খারাপ কথাবার্তা বলতে থাকে। ওই গাড়িটিতে অন্তত 5 জন যুবক ছিল। পরে আমাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। ফলে আমাদের গাড়িটি ডিভাইডারে উঠে যায়। কাঁকসা থানার রাস্তা ধরে যেতে গেলে ফের আমাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। তখন গাড়িটি উল্টে যায়। ওই যুবকরা তখন তাদের গাড়ি থামিয়ে পালিয়ে যায়।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দিই ৷ পুলিশ এসে ম্যাডামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। গাড়িতে থাকা আহত আরও দু'জন যুবককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।" পুলিশ ওই চারচাকা গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করলেও দুষ্কৃতীদের এখনও কোনও নাগাল পায়নি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
এদিকে, শোকের পরিবেশ সুতন্দ্রার পাড়ায়। প্রতিবেশীদের দাবি, যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে মেয়েদের নিরাপত্তার নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠছে। নিমাই ঘোষাল বলেন, "সংবাদমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি দুষ্কৃতীরা ওদের গাড়িটিকে ধাওয়া করছিল। সেখান থেকেই এই ঘটনা । নিরাপত্তা তো একেবারেই নেই !"
সুতন্দ্রার পিসি মৌসুমী পাল ফোনে বলেন, "ইভেন্ট ম্যাজেমেন্ট ছিল গয়ায়। সেখানেই সুতন্দ্রা যাচ্ছিল টিম নিয়ে ৷ ওর সঙ্গে কয়েকজন যুবক ছিল। এতদিন কোনও সমস্যা হয়নি। ট্রেনের টিকিট পায়নি বলে নিজের গাড়িতে করে রবিবার রওনা দেয় ৷ রাতেই দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয় ৷"