গুড়াপ, 25 নভেম্বর: পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ৷ পাশের বাড়ি থেকে মিলল মশারি-কম্বলের উপর কাঠ চাপা দেওয়া রক্তাক্ত দেহ ৷ ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সন্ধ্যায় হুগলির গুড়াপে ৷ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতায় আনা হচ্ছে ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালিকা তার বাবার কাছে মাংস খাওয়ার আবদার করেছিল ৷ মেয়ের সেই আবদার মেটাতে মাংস কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন বাবা ৷ সেসময় পাশের বাড়ি খেলতে যায় নাবালিকা ৷ বিকেল গড়িয়ে সন্ধে হয়ে গেলেও সে বাড়ি ফেরেনি ৷ বাবা এসে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন ৷
নাবালিকার নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় এক প্রতিবেশীর উপর সন্দেহ হয় শিশুটির বাবার । স্থানীয়দের নিয়ে সেই প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে তিনি দেখেন, বিছানায় মশারি-কম্বলের উপর কাঠ চাপা দেওয়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে পাঁচ বছরের শিশুটি ৷ রক্তাক্ত ও অচৈতন্য অবস্থায় নাবালিকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ তবে চিকিৎসকরা নাবালিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷
শিশুটির বাবা এই ঘটনায় গুড়াপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই 45 বছরের ওই প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করা হয় ৷ ময়নাতদন্তের জন্য শিশুটির দেহ নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে ৷ ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে হুগলির গুড়াপে । এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।
হুগলী জেলা গ্ৰামীণ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালিকার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে । সোমবার অভিযুক্তকে চুঁচুড়া আদালতে তুলে রিমান্ডে চাইবে পুলিশ ৷
নাবালিকার বাবা বলেন, "গতকাল বাড়ির পাশেই খেলতে গিয়েছিল মেয়ে । সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় । আমি বাজার থেকে ফিরে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে খোঁজাখুঁজি শুরু করি । এক প্রতিবেশীর উপর সন্দেহ হয় । তার বাড়িতে গিয়ে দেখি মেরে ফেলে মশারি-কম্বলের উপর কাঠ চাপা দিয়ে রেখেছে আমার মেয়েকে । স্থানীয়দের সহায়তায় মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই । চিকিৎসকরা বলেন, মেয়ে আর বেঁচে নেই ৷"
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, "মেয়ে আমার কাছে মাংস খেতে চেয়েছিল ৷ তাই আমি মেয়ের জন্য মাংস কিনতে গিয়েছিলাম । ওর মা রান্না করছিল । সেই সময় ঘটনাটি ঘটে । 45 বছরের ওই ব্যক্তি আমার মেয়ের উপর এভাবে অত্যাচার করে মেরে ফেলেছে । আমি ওই ব্যক্তির ফাঁসি চাই ।"
স্থানীয় এক প্রতিবেশীর কথায়, "ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে । এখানে একাই থাকত সে । দুটো বিয়ে ৷ অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে স্ত্রী ছেলে কেউ থাকে না । বিভিন্ন জায়গায় চুরির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । শিশুটিকে ধর্ষণ করে খুন করেছে ৷ ওর বাড়ি থেকেই মশারি-কম্বলের উপর কাঠ চাপা দেওয়া অবস্থায় মেয়েটিকে রেখে দিয়েছিল ৷ আমরা সকলেই চাই ওর কঠোরতম শাস্তি হোক ।"