কলকাতা, 15 জুন: নেট দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে সারা দেশ তোলপাড় ৷ সেই জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত । 1563 জনের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট । এর মাঝেই সারা দেশের মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষার দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ।
শনিবার একটি শিক্ষা মেলায় এসে তিনি দাবি জানালেন আবারও রাজ্যের হাতেই ফিরিয়ে দেওয়া হোক মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা । এর পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, "কেন কেন্দ্রীয় সরকারের এই দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে না ?"
ব্রাত্য বসু বলেন, "আমি আগেই বলেছি কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা ও হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এইভাবে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে । আমাদের রাজ্যের শিক্ষক দুর্নীতি নিয়ে অনেক আলোচনা হল, গ্রেফতার হল । কিন্তু দেশের সবথেকে প্রেস্টিজিয়াস একটা পরীক্ষা, তার জন্য কোনও তদন্ত হবে না ? সিবিআই-ইডিকে আমরা এক্ষেত্রে দেখতে পাব না ?"
এই প্রতিক্রিয়ার পরেই শিক্ষামন্ত্রী পুনরায় রাজ্যের হাতে মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা ফিরিয়ে আনার দাবি জানালেন । তিনি বলেন, "আগে রাজ্য পরীক্ষা নিত । সংবিধান অনুসারে শিক্ষার যুগ্ম তালিকায় রয়েছে । সেটা তো বিজেপি বা এনডিএ সরকার মানেনি । আমাদের সময় যখন জয়েন্ট এন্ট্রান্স হতো এই ধরনের গোলযোগ দেখা যেত না । আমার মনে হয় এই ব্যর্থতার পরে ওদের স্বতঃপ্রণোদিতভাবে রাজ্যের হাতে মেডিক্যাল পরীক্ষা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত ।"
মূলত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই সর্বভারতীয়ভাবে শুরু হয় নিট পরীক্ষা । 2016 সালে নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত । এর আগে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পৃথকভাবে হতো পরীক্ষা । সেই ব্যবস্থাই আবারও নিজেদের হাতেই মেডিক্যাল পরীক্ষা চাইছে রাজ্য সরকার । কিন্তু সেটা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন ।
কলেজে ভরতিতে অনলাইন পোর্টাল: অন্যদিকে কলেজগুলিতে আসনসংখ্যা জানার জন্য যে পোর্টাল তৈরি হওয়ার কথা, সেই পোর্টাল নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমার মনে হচ্ছে মঙ্গল বুধবারের মধ্যে হবে ৷ আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনা শেষ পর্যায়ে চলছে । আশা করছি উনি খুব শীঘ্রই সবুজ সংকেত দিয়ে দেবেন ৷ সবুজ সংকেত পেলেই উদ্বোধন হয়ে যাবে ।"
প্রসঙ্গত, কিছু মাস আগেই টেস্টিং প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে এই পোর্টালের । সেই টেস্টিংয়ে এখনও পর্যন্ত সবকিছুই ইতিবাচক । মূলত এই পোর্টালের মাধ্যমে সমস্ত সরকারি এবং সরকার পোষিত কলেজগুলিতে পড়ুয়াদের জন্য কতগুলো সিট আছে, তা জানা যাবে ৷ পাশাপাশি ভর্তির ফি ও আবেদন পত্র জমা দেওয়া যাবে । মূলত, কলেজে ভর্তির যে কারচুপি হয়, সেই অভিযোগে লাগাম দিতেই এই প্রয়াস শিক্ষা দফতরের ।
এই পোর্টালের মাধ্যমে একসঙ্গে 25টি আবেদন করা সম্ভব হলে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর । সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের তরফে ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল নিয়ে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার জেরে পড়ুয়াদের খুব একটা সমস্যা হবে না বলেই জানিয়েছে শিক্ষা দফতর ৷ মূলত, নির্বাচনের জন্য এই উদ্বোধন আটকে ছিল । নির্বাচন মিটে যাওয়ার পরেই এই বিষয়ে তৎপর হয়েছে শিক্ষা দফতর । বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার এই পোর্টাল উদ্বোধন হতে পারে । যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও গৃহীত হয়নি ।