নবগ্রাম, 21 সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদান নিতে রাজি হল না আরও একটি পুজো কমিটি ৷ এবার সরকারি অনুদান নিতে অস্বীকার করে আবেদন করল নবগ্রামের একটি পুজো কমিটি। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে নবগ্রামের মহাদেশ পরিষদ ক্লাব।
ক্লাব কমিটির দাবি, আরজি করে পড়ুয়া চিকিৎসকের মৃত্যুর পর উৎসব নয়, শুধুই পুজো করবেন তাঁরা। স্থানীয় মানুষের দেওয়া চাঁদা দিয়ে পুজো হবে এই ক্লাবে। এর জেরে রাজনীতির রঙ লেগেছে ক্লাবে। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই ক্লাব বরাবরই সিপিএম পরিচালিত। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। বিজেপির আবার দাবি, অন্যায়ের প্রতিবাদ জানানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাব কমিটি।
ইতিমধ্যেই উত্তরপাড়া, কোন্নগর, বৈদ্যবাটি মিলিয়ে 6টি দুর্গাপুজো কমিটি 85 হাজার টাকার অনুদান ফেরতের পথে হেঁটেছে। এবার মহাদেশ পরিষদ ক্লাবও এই সিদ্ধান্ত নিল। তারা 62 বছর ধরে দুর্গাপুজো করে আসছে। পুজো ছাড়াও ব্যাটমিন্টন ও নাটক-সহ বিভিন্ন কার্যকলাপ চলে। তাদের দাবি তিলোত্তমার মৃত্যুতে মানুষ শোকাহত। এখন উৎসবের প্রয়োজন নেই। পুজো হলেই হবে। মহাদেশ পরিষদ ক্লাব পরিচিত তাদের সাবেকি পুজোর জন্য ৷ পুজোর চারদিন বহু মানুষের ভিড়ও জমে এখানে।
মূলত তরুণ তরুণ-তরুণীদের আকর্ষণের জায়গা মহাদেশ পরিষদের দুর্গাপুজো। আরজি কর ঘটনার প্রতিবাদে এই বছর সরকারি অনুদান 85 হাজার টাকা ফেরত দিচ্ছে এই ক্লাব। সেই কারণে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটে একটি লিখিত আবেদনও পাঠিয়েছেন ক্লাব কর্তারা। ক্লাবের সম্পাদক দেবাশিস ঠাকুরতা বলেন, "পুজোর অনুদানের জন্য মানুষের চাঁদা দেওয়ার প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। পুজোর মধ্যে সেই স্বতঃস্ফূর্ততা আর নেই। তার মধ্যে আরজি করের ঘটনা আমাদের সকলকেই নাড়া দিয়েছে। আমরা ক্লাবের পক্ষ থেকে ভোটাভুটি করেই সর্বসম্মতিক্রমে সরকারি অনুদান ফেরানোর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
যুব তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি শতদ্রু কর বলেন, "মহাদেশ পরিষদ ক্লাবকে আদতে ক্লাব না বলে সিপিএমের পার্টি অফিস বললে বেশি ভালো হয়। কারণ সিপিএমের সমস্ত বৈঠক থেকে শুরু করে সম্মেলন, সবই হয় ক্লাবের মধ্যে। দুর্গাপুজোকে পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করার জন্য সিপিএমের লোকেরাই এই কাজ করছেন। এলাকায় আরও 30টি ক্লাব আছে, যারা উৎসব পালন করবে উৎসবের মতই।"
এই বিষয়ে বিজেপি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক সম্পাদক ইন্দ্রনীল দত্ত বলেন, "আরজি কর ঘটনায় যেভাবে শাসক দল গোটা ঘটনাকে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, যেভাবে তথ্য-পমান লোপাট করেছে, সাধারণ মানুষ তার প্রতিবাদে নেমেছে। নবগ্রাম মহাদেশ পরিষদ শুধু নয়, সারা বাংলার বহু ক্লাব এর প্রতিবাদে পুজোর অনুদান প্রত্যাখ্যান করছে। তৃণমূল সরকারের শেষের সময় এসে গিয়েছে। আগামী নির্বাচনে মানুষ ভোটের ফলাফলের মাধ্যমে তা যথাযথ প্রমাণ দেবে।"