ETV Bharat / state

শিশু সন্তানকে খুনের দায়ে ফাঁসির সাজা মা ও প্রেমিকের

Child Murder Case: প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে বাধা হওয়ায় শিশু সন্তানকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল মায়ের ৷ খুনে অভিযুক্ত ছিলেন প্রেমিকও ৷ বৃহস্পতিবার হাওড়া আদালত মা ও প্রেমিককে ফাঁসির সাজা শোনাল ৷

Child Murder Case
Child Murder Case
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 29, 2024, 8:38 PM IST

Updated : Feb 29, 2024, 9:37 PM IST

সন্তানকে খুনের দায়ে প্রেমিক ও মা-কে ফাঁসির সাজা দিল আদালত

হাওড়া, 29 ফেব্রুয়ারি: দেড় বছরের সন্তানকে খুনের দায়ে মা ও তাঁর প্রেমিককে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত ৷ বৃহস্পতিবার হাওড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের ফার্স্ট ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক এই সাজা দিয়েছেন ৷ সাজাপ্রাপ্ত হাসিনা সুলতানা ও তাঁর প্রেমিক ভান্নুর শায়ের, দু’জনেই অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ৷ তাঁদের আইনজীবী এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন ৷

আদালত সূত্রে খবর, বিবাহিতা হাসিনা সুলতানার সঙ্গে ভান্নুর শায়েরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ৷ ভান্নুরের সঙ্গে ঘর বাঁধতে 2015 সালের 22 ডিসেম্বর স্বামীর ঘর ছাড়েন হাসিনা ৷ সঙ্গে নেন ছেলে জিশানকে৷ চলে যান তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদে ৷ সেখানে বানজারা হিলস এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ঘর ভাড়া নেন ৷ জিশানকে তাঁদের ছেলে বলেই সকলের কাছে পরিচয় দেন ৷

কিন্তু বছর দেড়েকের জিশান হাসিনা ও ভান্নুরের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ৷ তাই পথের কাঁটা সরাতে জিশানকে খুনের পরিকল্পনা করে হাসিনা ও ভান্নুর ৷ 2016 সালের জানুয়ারি মাসের কোনও এক রাতে প্রথমে তাঁরা জিশানকে 10টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন ৷ তার পর তাঁকে খুন করেন ৷ তার পর একটি ব্যাগে দেহ নিয়ে তাঁরা সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে আসেন ৷ সেখানে ফলকনুমা এক্সপ্রেস ব্য়াগ রেখে তাঁরা চলে যান ৷

জিশানের দেহ-সহ ব্যাগ চলে আসে হাওড়া স্টেশনে ৷ তা উদ্ধার করে জিআরপি৷ অনেক খোঁজ করেও শিশুর পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ ৷ এর পর আচমকাই একটি লুক আউট নোটিশ হাতে আসে জিআরপির৷ সেটি জারি করেছিল অন্ধ্রপ্রদেশের টেনালি থানার পুলিশ ৷ সেই লুক আউট নোটিশে ওই শিশুর সঙ্গে হাসিনারও ছবি ছিল ৷

এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে হাওড়া জিআরপি যোগাযোগ করে৷ জানা যায়, রশিদা নামে এক মহিলা তাঁর মেয়ে হাসিনা ও নাতি জিশানের খোঁজে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ এর পর অন্ধ্রপ্রদেশ যায় হাওড়া জিআরপির তদন্তকারীরা ৷ সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রশিদাকে ৷ খুঁজে বের করা হয় জিশানের বাবা শেখ রিয়াজকেও ৷ তিনি ও রশিদা জিশানের দেহ সনাক্ত করেন ৷

এদিকে ততদিনে হাসিনাও মায়ের বাড়িতে ফিরে এসেছেন ৷ তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা ৷ প্রথমে তিনি পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরে সব স্বীকার করেন ৷ তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় ভান্নুরকেও ৷ দু’জনকেই নিয়ে আসা হয় হাওড়ায় ৷ আদালতে পেশ করা হয়৷ তার পর থেকে তাঁরা জেলবন্দিই ছিলেন ৷ বৃহস্পতিবার তাঁদের ফাঁসির সাজা দিল আদালত ৷

সরকারি আইনজীবী অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সন্দীপ চক্রবর্তী দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন । বিচারক ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছেন ।’’ অন্যদিকে সুলতানাদের আইনজীবী ফিরোজ সরকার বলেন, ‘‘আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব ।’’

আরও পড়ুন:

  1. কোন্নগরে শিশু খুনে ধৃত মা ও তাঁর বান্ধবীর পুলিশি হেফাজত, দোষীর ফাঁসি চান বাবা
  2. দম্পতিকে খুনের মামলায় 9 বছর পর আসামীকে ফাঁসির সাজা কালিম্পংয়ের জেলা আদালতের
  3. নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শোনাল বারুইপুর আদালত

সন্তানকে খুনের দায়ে প্রেমিক ও মা-কে ফাঁসির সাজা দিল আদালত

হাওড়া, 29 ফেব্রুয়ারি: দেড় বছরের সন্তানকে খুনের দায়ে মা ও তাঁর প্রেমিককে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত ৷ বৃহস্পতিবার হাওড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের ফার্স্ট ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক এই সাজা দিয়েছেন ৷ সাজাপ্রাপ্ত হাসিনা সুলতানা ও তাঁর প্রেমিক ভান্নুর শায়ের, দু’জনেই অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ৷ তাঁদের আইনজীবী এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন ৷

আদালত সূত্রে খবর, বিবাহিতা হাসিনা সুলতানার সঙ্গে ভান্নুর শায়েরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ৷ ভান্নুরের সঙ্গে ঘর বাঁধতে 2015 সালের 22 ডিসেম্বর স্বামীর ঘর ছাড়েন হাসিনা ৷ সঙ্গে নেন ছেলে জিশানকে৷ চলে যান তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদে ৷ সেখানে বানজারা হিলস এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ঘর ভাড়া নেন ৷ জিশানকে তাঁদের ছেলে বলেই সকলের কাছে পরিচয় দেন ৷

কিন্তু বছর দেড়েকের জিশান হাসিনা ও ভান্নুরের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ৷ তাই পথের কাঁটা সরাতে জিশানকে খুনের পরিকল্পনা করে হাসিনা ও ভান্নুর ৷ 2016 সালের জানুয়ারি মাসের কোনও এক রাতে প্রথমে তাঁরা জিশানকে 10টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন ৷ তার পর তাঁকে খুন করেন ৷ তার পর একটি ব্যাগে দেহ নিয়ে তাঁরা সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে আসেন ৷ সেখানে ফলকনুমা এক্সপ্রেস ব্য়াগ রেখে তাঁরা চলে যান ৷

জিশানের দেহ-সহ ব্যাগ চলে আসে হাওড়া স্টেশনে ৷ তা উদ্ধার করে জিআরপি৷ অনেক খোঁজ করেও শিশুর পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ ৷ এর পর আচমকাই একটি লুক আউট নোটিশ হাতে আসে জিআরপির৷ সেটি জারি করেছিল অন্ধ্রপ্রদেশের টেনালি থানার পুলিশ ৷ সেই লুক আউট নোটিশে ওই শিশুর সঙ্গে হাসিনারও ছবি ছিল ৷

এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে হাওড়া জিআরপি যোগাযোগ করে৷ জানা যায়, রশিদা নামে এক মহিলা তাঁর মেয়ে হাসিনা ও নাতি জিশানের খোঁজে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ এর পর অন্ধ্রপ্রদেশ যায় হাওড়া জিআরপির তদন্তকারীরা ৷ সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রশিদাকে ৷ খুঁজে বের করা হয় জিশানের বাবা শেখ রিয়াজকেও ৷ তিনি ও রশিদা জিশানের দেহ সনাক্ত করেন ৷

এদিকে ততদিনে হাসিনাও মায়ের বাড়িতে ফিরে এসেছেন ৷ তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা ৷ প্রথমে তিনি পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরে সব স্বীকার করেন ৷ তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় ভান্নুরকেও ৷ দু’জনকেই নিয়ে আসা হয় হাওড়ায় ৷ আদালতে পেশ করা হয়৷ তার পর থেকে তাঁরা জেলবন্দিই ছিলেন ৷ বৃহস্পতিবার তাঁদের ফাঁসির সাজা দিল আদালত ৷

সরকারি আইনজীবী অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সন্দীপ চক্রবর্তী দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন । বিচারক ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছেন ।’’ অন্যদিকে সুলতানাদের আইনজীবী ফিরোজ সরকার বলেন, ‘‘আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব ।’’

আরও পড়ুন:

  1. কোন্নগরে শিশু খুনে ধৃত মা ও তাঁর বান্ধবীর পুলিশি হেফাজত, দোষীর ফাঁসি চান বাবা
  2. দম্পতিকে খুনের মামলায় 9 বছর পর আসামীকে ফাঁসির সাজা কালিম্পংয়ের জেলা আদালতের
  3. নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শোনাল বারুইপুর আদালত
Last Updated : Feb 29, 2024, 9:37 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.