মেদিনীপুর, 28 ফেব্রুয়ারি: সাজানো সাক্ষী দিয়ে মিথ্যে ফাঁসানো হয়েছে ৷ আদালতে থেকে বোরনোর সময় বিস্ফোরক দাবি করল শিলদাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত দুই মাওবাদী স্কোয়াড লিডার ৷ বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিল তারা ৷ দোষী সাব্যস্ত মনসারাম হেমব্রম ওরফে (বিকাশ) বলে, "বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে । বাংলাদেশ-পাকিস্তান থেকে সাক্ষী জোগাড় করেছে প্রশাসন এবং সেই সাক্ষী দিয়েই আমাদেরকে মিথ্যেভাবে ফাঁসানো হয়েছে । আমরা এই বিচার মানি না । আর্মস, এক্সপ্লোসিভ নিয়ম মেনে অনুমোদন করা হয়নি । সিপিএম গ্রেফতার করল দিদি সাজা দিল ।"
আরেক মাওবাদী স্কোয়াড লিডার ঠাকুরমণি হেমব্রম ওরফে (তারা) বলে, "এই ঘটনার সমস্ত সাক্ষীদের সাজানো হয়েছে । যদি রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা থেকে থাকে তাহলে সত্যিকারের বিচারের মতন বিচার হওয়া দরকার । আমরা সঠিক বিচারের আশায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব ।"
14 বছর আগে শিলদার ইএফআর ক্যাম্পে হামলার ঘটনা ঘটেছিল ৷ এই ঘটনায় মঙ্গলবার 23 জন মাওবাদীকে দোষী সাব্যস্ত করে মেদিনীপুর আদালত ৷ তাদের মধ্যে প্রথম দফায় বুধবার 13 জনের সাজা ঘোষণা হল ৷ সকলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ৷ সাজাপ্রাপ্ত 13 জন হল- মনসারাম হেমব্রম ওরফে(বিকাশ), ঠাকুরমণি হেমব্রম ওরফে (তারা),কল্পনা মাইতি, মানস মাহাতো, কাজল মাহাতো, মঙ্গল সোরেন, সনাতন সোরেন, শুকলাল সোরেন, কানাই হাঁসদা, রাজেশ হাঁসদা ওরফে ভাঁটু, শ্যামচরণ হাঁসদা, রাজেশ মুণ্ডা ও ইন্দ্রজিৎ কর্মকার । বাকি 10 জনের বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা করবে আদালত ৷
সালটা 2020 ৷ 15 ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে শিলদায় ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলসের ক্যাম্পে মাওবাদী হামলা হয় ৷ এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। তখন মাওবাদীদের রমরমা ছিল গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ জঙ্গলমহল জুড়ে। মাওবাদীদের কার্যকলাপ রুখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল জেলার বিভিন্ন প্রান্তে । কিন্তু এরপরেও 15 ফেব্রুয়ারি শিলদা ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলসের ক্যাম্পে সশস্ত্র আক্রমণ চালায় মাওবাদীরা। মাওবাদীদের সেই আক্রমণে 24 জন জওয়ানের মৃত্যু হয় ৷ চুরি হয়ে যায় জওয়ানদের অস্ত্রশস্ত্রও। যদিও জওয়ানদের পালটা আক্রমণে পাঁচ মাওবাদীরও মৃত্যু হয়েছিল ৷
আরও পড়ুন: