কলকাতা, 25 জুন: বর্ষাকাল এলেই জলে ভেসে যায় শহর কলকাতার একাধিক ব্যস্ততম রাস্তা ৷ কোথাও এক হাঁটু জল, তো কোথাও ডুবে যায় বাস ৷ ফি-বছর বর্ষাতেই এটাই যেন তিলোত্তমার চেনা ছবি ৷ তবে এবার ছবিটা বদলাতে বর্ষার শুরুতেই নড়চড়ে বসল কলকাতা কর্পোরেশন ৷ শহরের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নত করতে 1 জুলাই সেচমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷
22 জুন বর্ষা প্রবেশ করেছে দক্ষিণবঙ্গে ৷ এই মুহূর্তে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব কম থাকায় হালকা বৃষ্টি পড়লেও, হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বাড়বে বৃষ্টির পরিমাণ ৷ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস মিলতেই তৎপর কর্পোরেশন ৷ ইতিমধ্যেই বর্ষার প্রস্তুতি নিয়ে প্রাথমিক বৈঠক হয়ে গিয়েছে ৷ আগামী 1 জুলাই সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে বৈঠক করবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷
কলকাতা শহরে বর্ষার জমা জল নিকাশির অন্যতম অন্তরায় শহর ও শহরতলি নিকাশি খাল । বাগজলা থেকে গুনিয়াগাছি, সিপিটি ক্যানেল থেকে মনিখাল, সমস্ত খালের সংস্কারের বিষয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে জরুরি বৈঠক হবে কলকাতা কর্পোরেশনের বলে জানা গিয়েছে । অবশ্য ফিরহাদ এবং পার্থের বৈঠকের আগে জল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাম্পিং স্টেশন ও অস্থায়ী পাম্প নিয়ে বৈঠক হয়েছে কলকাতা কর্পোরেশনে। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন নিকাশি বিভাগের মেয়র পরিষদ তারক সিং । বৈঠকে শহরের জল নিকাশি ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে একাধিক কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷
বর্ষায় জমা জল নিকাশের ক্ষেত্রে তৎপরতার অভাব দেখা দিলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তারক সিং ৷ এমনকি, অস্থায়ী পাম্পের ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে টাকা কেটে নিয়ে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি । কর্পোরেশনের আধিকারিক ও কর্মীদের কাজে গাফিলতি প্রমাণ হলে সঙ্গে সঙ্গে শো-কজ করা হবে বলে এদিন জানান তিনি । প্রয়োজনে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন নিকাশি বিভাগের মেয়র পরিষদ।
তারক সিং বলেন, "পাম্প চালানো তিন শিফটের কর্মীদের টাকা দেওয়া, জ্বালানি খরচ দেওয়া সবটা দেওয়ার পরেও একাধিক ওয়ার্ড থেকে অভিযোগ পেয়েছিলাম পাম্প বন্ধ হয়ে পড়ে থাকার । এমনই একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে 15 দিনের টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে । বাকিদের বিরুদ্ধেও এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে । ঠিকাদাররা কাজ না করলে টাকা কাটা হবে।" উল্লেখ্য, বর্ষার জমা জল নিকাশির জন্য ইতিমধ্যেই উত্তর কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় 44টি পোর্টেবল পাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মধ্য কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় 116টি পাম্প রাখা হয়েছে। আর দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় 110টি পাম্প রাখা রয়েছে।