কলকাতা, 2 মে: ভরা ভোট মরশুমেও মাঠ ভরাতে ব্যর্থ বামেরা! বুধবার আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে শহীদ মিনার চত্ত্বরের ছবিতেই স্পষ্ট। 7 বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের ডাকা সমাবেশেও মাঠ অর্ধেক খালি। এমনকী, মঞ্চের সামনের চেয়ারগুলোর অধিকাংশটাই খালি ছিল। যা দেখে মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কর্মী সমর্থকদের অনেককেই বলতে শোনা গেছে," কী দরকার ছিল রোদ গরমে এতবড় এরিয়া নেওয়ার! খালিই পড়ে রইল! ভোটের সময় কী বার্তা যাবে সাধারণের কাছে?"
আয়োজকদের মধ্যে এক সিটু নেতা বলেন, " রাজ্য জুড়ে এই সমাবেশের প্রচার হয়নি। কলকাতা, হাওড়া ও দুই 24 পরগনার কর্মী সমর্থকদের আসার কথা বলা হয়েছিল। তাছাড়া, প্রবল রোদ গরমে অনেকেই আসতে পারেননি। তার উপরে ভোটের প্রচার চলছে বিভিন্ন এলাকায়। সেখানেও থাকতে হচ্ছে কর্মী সকর্থকদের।" এদিন বিকেলে সাড়ে চারটে থেকে সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, জমায়েতের অবস্থা দেখে সভা শুরু করতে সাড়ে পাঁচটা বেজে যায়। শ্রমিক নেতা অনাদি সাহু, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, অশোক ঘোষ, তপন সেনে-রা বক্তব্য রাখেন।
এদিকে, সমাবেশ থেকে দেশ-মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ও রাজ্য থেকে তৃণমূলকে পরাস্ত করার ডাক দেওয়া হয়েছে। দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি থেকে 'শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ' শ্রমকোড বাতিলের দাবি জানানো হয়। শিকাগো শহরের 'হে' মার্কেটের শহিদদের স্মরণ করা হয়। যাঁরা দেশে দেশে শোষণের হাত থেকে মুক্তির জন্য, শ্রমিকের অধিকারের জন্য, আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে লড়াই করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করেন। এই সমাবেশ থেকেই প্যালেস্তাইনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ মদতপুষ্ট ইজরায়েলের নির্মম গণহত্যাকেও ধিক্কার জানানো হয়।
নেতাদের অভিযোগ, দেশ ও দেশের আপামর মানুষ এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি। সংকট, বেকারি, কর্মচ্যুতি, মজুরি হ্রাস, সমস্ত খাদ্যপণ্য, জ্বালানি, ওষুধ-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার-সহ মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ, লক্ষ লক্ষ শ্রমিক-কৃষকের আত্মহত্যা; অন্যদিকে চলছে শাসকঘনিষ্ট কর্পোরেট ও ব্যবসায়ীদের দেশের মানুষের সম্পদের বেপরোয়া লুঠ।
এদিনের সভা থেকে দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে আরও বলা হয়, মোদির আমলে দেশের ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বেড়েছেে। 2012 সালে দেশে 10 শতাংশ সবচেয়ে ধনী মানুষের হাতে ছিল দেশের মোট সম্পদের 63 শতাংশ আর 2023 সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 72 শতাংশে। 2014 সালের বিজেপি সরকার আসার আগে দেশে 100 কোটি ডলারের সম্পত্তির মালিক ছিল 55 জন। 2023 সালে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে 200 জনে। এই পরিস্থিতিতে, পুনরায় কেন্দ্রে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে, দেশে এক স্বৈরতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পথে অগ্রসর হবে, যার পরিণতি হবে ভয়ংকর। তাই মে দিবসে বামফ্রন্টের স্লোগান ছিল "আর নয় বিজেপি সরকার। আমরা চাই জনগণের সরকার।"
আরও পড়ুন
1. হুডখোলা গাড়িতে নয়, সাধারণের কাছে পৌঁছতে ট্রেনেই প্রচার অগ্নিমিত্রার
2. 'ভোটের পরে চৌরাস্তায় কাপড় খুলে দেব', হুঁশিয়ারি দিলীপের
3. 'রাতে ইভিএম বদলে দিচ্ছে ওরা', ফরাক্কায় বিজেপির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ মমতার