মালদা, 14 জানুয়ারি: তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দুলাল সরকারকে গুলি করে খুনের ক্ষত এখনও তাজা ৷ এরই মধ্যে মকর সংক্রান্তির সকালে ফের রক্ত ঝরল মালদায় ৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর ৷ জখম তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি-সহ দু'জন ৷ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা বলে জানা গিয়েছে ৷
সরকারি রাস্তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ৷ সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের একাধিক নেতা ৷ সেই অনুষ্ঠানে রাস্তা আর নর্দমার টেন্ডার নিয়ে ঝামেলা বাঁধে বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে ৷ তার জেরে সাতসকালে শুট আউট কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লকের নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সালেপুর গ্রামে ৷ গুলিতে মৃত্যু হয়েছে হাসানুল শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মীর ৷ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি বকুল শেখ ৷ গুলি লেগেছে প্রাক্তন প্রধান তথা পঞ্চায়েত সদস্য এসারুদ্দিন শেখেরও ৷ তাঁদের মাথায় গুলি লেগেছে ৷ গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই যে এই ঘটনা ঘটেছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন এসারুদ্দিন ৷
মকর সংক্রান্তির সকালে আইএসএফ পরিচালিত নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াবস্তি এলাকায় সদ্য তৈরি একটি রাস্তার উদ্বোধনে যান বকুল শেখ-সহ তাঁর লোকজন ৷ তাঁরা প্রথমে মোমিনপাড়ায় যান ৷ সেখানে নিকাশি ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে ৷ এলাকার ড্রেনটি প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ সেখানেই তাঁদের সঙ্গে দেখা হয় সেখানকার আইএসএফ পঞ্চায়েত সদস্যের ৷ তিনি আগে তৃণমূল করলেও পরে অন্য দলে যোগ দিয়েছেন ৷ বকুলরা তাঁকে এলাকার কাজ করার পরামর্শ দেন ৷
এরপর নতুন রাস্তার ফিতে কাটার পর হঠাৎ 15-16 জন দুষ্কৃতী সেখানে গুলি চালাতে শুরু করে ৷ তাদের হাতে ধারালো অস্ত্রও ছিল ৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই হাসানুল শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী মারা যান ৷ মাথায় গুলি লাগে বকুল ও এসারুদ্দিনের ৷ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা সবাই কাশিমপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী জাকির শেখ গোষ্ঠীর লোক ৷ জাকির কোনও দল না-করলেও হামলাকারীরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর ৷
স্থানীয় এক বাসিন্দা মেহবুব আলম জানান, "ওই ড্রেনটি প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ সেটি নতুন করে করার জন্য টেন্ডার করা হয়েছিল ৷ সেখানেই এক পঞ্চায়েত সদস্যর সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা হয় ৷ বকুলরা সেখানে একটি রাস্তার উদ্বোধনে গিয়েছিলেন ৷ ওই ঝামেলার জেরে বিপক্ষ গোষ্ঠীর লোকজন বকুলদের উপর গুলি চালায় ৷ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় ৷ বকুল আর এসারুদ্দিনের মাথায় গুলি লেগেছে ৷ একজন ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন ৷ হামলাকারীরা কিছুদিন আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে ৷ ওরা রাতে টিএমসি, দিনে কংগ্রেস ৷ ওরা জাকিরের লোকজন ৷"
মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে ঢোকার আগে এসারুদ্দিন ওরফে রাজুও জানান, "যারা আমাদের উপর গুলি চালিয়েছে, তাদের বেশিরভাগই তৃণমূলের ৷ কিছুদিন আগে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে ৷ ওদের সঙ্গে কংগ্রেসের লোকজনও ছিল ৷ ওরা সব জাকিরের লোকজন ৷"
এসডিপিও (কালিয়াচক) ফয়জাল রেজা জানিয়েছেন, "নয়াবস্তি এলাকায় আজ গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে ৷ একজন মারা গিয়েছে ৷ দু’জন আহত ৷ ঘটনার পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে ৷"